০৯:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে যে ৮ পরিবারে আছে রোলস রয়েস

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • সময় ১০:৫০:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
  • / 31

রোলস রয়েস

রোলস রয়েস – বিশ্বের অন্যতম এই অভিজাত গাড়ির ব্র্যান্ডের নাম শুনলেই ভেসে ওঠে বিলাসবহুলতার প্রতিচ্ছবি।

একসময় বাংলাদেশে এই গাড়ি ছিল বিরল, কিন্তু এখন ঢাকার রাস্তায় দেখা মিলছে বৈদ্যুতিক মডেলের রোলস রয়েস ‘স্পেক্টার’। বাংলাদেশে বানিজ্যিক আমদানি শুরুর মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে দেশে এসেছে আটটি গাড়ি।

একেকটি গাড়ির কেনা দামই পড়েছে চার থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা। এর আগে আমদানি হওয়া সবচেয়ে দামি গাড়ি ছিল ‘ফেরারি’।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিং লিমিটেড, ফারইস্ট স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইসলাম নিট ডিজাইনস লিমিটেড, প্রিয়াঙ্কা ট্রেডিং লিমিটেড, কন্টিনেন্টাল মোটরস, এশিয়ান ইমপোর্টস লিমিটেড, এ এম করপোরেশন ও ফোর হুইলস মোটরস গাড়িগুলো আমদানি করেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি রোলস রয়েসের প্রচলিত ফুয়েল ইঞ্জিনের গাড়ি আনা হতো, তাহলে এর শুল্ককর দিতে হতো আমদানি মূল্যের সোয়া আট গুণ বেশি। তবে বৈদ্যুতিক মডেলে এই করের হার কম থাকায়, গাড়ি আমদানিতে আগ্রহ বেড়েছে।

বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির উপর শুল্ককর তুলনামূলক কম হওয়ায় এই অভিজাত গাড়ির বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। একটি বৈদ্যুতিক রোলস রয়েস আনতে যেখানে খরচ পড়ছে প্রায় ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা, সেখানে ফুয়েল চালিত হলে খরচ হতো ৩০ কোটি টাকার বেশি।

রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক মডেল ‘স্পেক্টার’ মাত্র ৪.৪ সেকেন্ডে ৬০ মাইল বেগে পৌঁছাতে পারে। এই গাড়ির আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে এর নিঃশব্দ গতি এবং স্মার্ট টেকনোলজি। বিলাসবহুল ইন্টেরিয়র, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ও চাকার স্মার্ট কন্ট্রোল সিস্টেম এই গাড়িকে করেছে অনন্য।

বাংলাদেশে যে আটটি গাড়ি ইতোমধ্যে আমদানি হয়েছে; তারমধ্যে চারটি গাড়ি আসে সরকারের পরিবর্তনের আগে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আসে আরও চারটি। তবে এ ধরনের উচ্চ মূল্যের গাড়ি রাখা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জও রয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশে কূটনৈতিক ও শুল্কমুক্ত সুবিধায় দুটি রোলস রয়েস এসেছিল। কিন্তু কাস্টমস জব্দ করেছিল উত্তর কোরিয়ার এক কূটনীতিকের আনা একটি গাড়ি ও ২০২২ সালে চট্টগ্রামের ইপিজেডের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা আরেকটি গাড়ি।

বিগত দুই দশকে বাংলাদেশে আমদানি হওয়া রোলস রয়েসের সংখ্যা মাত্র ১২টি। তবে বৈদ্যুতিক গাড়ির আমদানির সুযোগ থাকায় ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। রোলস রয়েস মানে শুধু বিলাসিতা নয়, এটি প্রতীক উচ্চবিত্তদের আভিজাত্যের।

বৃটিশ বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোলস রয়েস গত বছর প্রথমবারের মতো বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারজাত শুরু করে। বাজারজাত শুরুর পর বাংলাদেশ থেকে আটটি গাড়ি কেনার জন্য বুকিং দেওয়া হয়। গত এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে এই আটটি গাড়ি দেশে পৌঁছেছে, যেগুলোর নির্মাণ সাল ২০২৪।

রোলস রয়েসের গাড়ির আভিজাত্যের বড় বিষয় ছিল – শুধু টাকা থাকলেই হবে না, এই গাড়ি কেনার জন্য অনেকগুলো শর্ত মানতে হতো। এ ছাড়া বিক্রির আগে এ ধরনের গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার সক্ষমতাও বিবেচনায় নিত বৃটিশ কোম্পানিটি।

গত এক-দেড় দশক ধরে রোলস রয়েস গাড়ি বিক্রির সময় এসব শর্ত দিচ্ছে না। তাতে এখন যে কেউ টাকা থাকলে রোলস রয়েস গাড়ি কিনতে পারে।

শেয়ার করুন

বাংলাদেশে যে ৮ পরিবারে আছে রোলস রয়েস

সময় ১০:৫০:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

রোলস রয়েস – বিশ্বের অন্যতম এই অভিজাত গাড়ির ব্র্যান্ডের নাম শুনলেই ভেসে ওঠে বিলাসবহুলতার প্রতিচ্ছবি।

একসময় বাংলাদেশে এই গাড়ি ছিল বিরল, কিন্তু এখন ঢাকার রাস্তায় দেখা মিলছে বৈদ্যুতিক মডেলের রোলস রয়েস ‘স্পেক্টার’। বাংলাদেশে বানিজ্যিক আমদানি শুরুর মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে দেশে এসেছে আটটি গাড়ি।

একেকটি গাড়ির কেনা দামই পড়েছে চার থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা। এর আগে আমদানি হওয়া সবচেয়ে দামি গাড়ি ছিল ‘ফেরারি’।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বসুন্ধরা মাল্টি ট্রেডিং লিমিটেড, ফারইস্ট স্পিনিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইসলাম নিট ডিজাইনস লিমিটেড, প্রিয়াঙ্কা ট্রেডিং লিমিটেড, কন্টিনেন্টাল মোটরস, এশিয়ান ইমপোর্টস লিমিটেড, এ এম করপোরেশন ও ফোর হুইলস মোটরস গাড়িগুলো আমদানি করেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি রোলস রয়েসের প্রচলিত ফুয়েল ইঞ্জিনের গাড়ি আনা হতো, তাহলে এর শুল্ককর দিতে হতো আমদানি মূল্যের সোয়া আট গুণ বেশি। তবে বৈদ্যুতিক মডেলে এই করের হার কম থাকায়, গাড়ি আমদানিতে আগ্রহ বেড়েছে।

বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির উপর শুল্ককর তুলনামূলক কম হওয়ায় এই অভিজাত গাড়ির বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। একটি বৈদ্যুতিক রোলস রয়েস আনতে যেখানে খরচ পড়ছে প্রায় ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা, সেখানে ফুয়েল চালিত হলে খরচ হতো ৩০ কোটি টাকার বেশি।

রোলস রয়েসের বৈদ্যুতিক মডেল ‘স্পেক্টার’ মাত্র ৪.৪ সেকেন্ডে ৬০ মাইল বেগে পৌঁছাতে পারে। এই গাড়ির আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে এর নিঃশব্দ গতি এবং স্মার্ট টেকনোলজি। বিলাসবহুল ইন্টেরিয়র, স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ও চাকার স্মার্ট কন্ট্রোল সিস্টেম এই গাড়িকে করেছে অনন্য।

বাংলাদেশে যে আটটি গাড়ি ইতোমধ্যে আমদানি হয়েছে; তারমধ্যে চারটি গাড়ি আসে সরকারের পরিবর্তনের আগে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আসে আরও চারটি। তবে এ ধরনের উচ্চ মূল্যের গাড়ি রাখা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জও রয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশে কূটনৈতিক ও শুল্কমুক্ত সুবিধায় দুটি রোলস রয়েস এসেছিল। কিন্তু কাস্টমস জব্দ করেছিল উত্তর কোরিয়ার এক কূটনীতিকের আনা একটি গাড়ি ও ২০২২ সালে চট্টগ্রামের ইপিজেডের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা আরেকটি গাড়ি।

বিগত দুই দশকে বাংলাদেশে আমদানি হওয়া রোলস রয়েসের সংখ্যা মাত্র ১২টি। তবে বৈদ্যুতিক গাড়ির আমদানির সুযোগ থাকায় ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। রোলস রয়েস মানে শুধু বিলাসিতা নয়, এটি প্রতীক উচ্চবিত্তদের আভিজাত্যের।

বৃটিশ বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোলস রয়েস গত বছর প্রথমবারের মতো বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারজাত শুরু করে। বাজারজাত শুরুর পর বাংলাদেশ থেকে আটটি গাড়ি কেনার জন্য বুকিং দেওয়া হয়। গত এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে এই আটটি গাড়ি দেশে পৌঁছেছে, যেগুলোর নির্মাণ সাল ২০২৪।

রোলস রয়েসের গাড়ির আভিজাত্যের বড় বিষয় ছিল – শুধু টাকা থাকলেই হবে না, এই গাড়ি কেনার জন্য অনেকগুলো শর্ত মানতে হতো। এ ছাড়া বিক্রির আগে এ ধরনের গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার সক্ষমতাও বিবেচনায় নিত বৃটিশ কোম্পানিটি।

গত এক-দেড় দশক ধরে রোলস রয়েস গাড়ি বিক্রির সময় এসব শর্ত দিচ্ছে না। তাতে এখন যে কেউ টাকা থাকলে রোলস রয়েস গাড়ি কিনতে পারে।