০৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে প্রথমবার সমুদ্রপথে ফেরি চলাচল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
  • সময় ১১:৫৪:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
  • / 22

দেশে প্রথমবার সমুদ্রপথে ফেরি চলাচল শুরু

দেশে সমুদ্রপথে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ফেরির যুগে প্রবেশ করল চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ। সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ঘাটে পাঁচজন উপদেষ্টাকে সঙ্গে নিয়ে এই ফেরি সেবার উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। পরে সকাল ৯টায় উপদেষ্টাদের বহন করে ফেরি সন্দ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করে। ৫৫ মিনিটের যাত্রার পর ১০টা ৫৫ মিনিটে ফেরি সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছায়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম; প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌপথে ফেরি চালুর মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সমুদ্রপথে ফেরি যাত্রার সূচনা হলো। একই সাথে চার লাখ মানুষের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হলো।

চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করে। দৈনন্দিন কাজ, জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো জরুরি কাজে এ জনপদের বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে জেলা শহর চট্টগ্রামে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে রয়েছে উত্তাল নৌ চ্যানেল, এই নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কিমি। এ পথ পাড়ি দিতে শিশু, নারী ও বয়োবৃদ্ধ যাত্রীরা নৌযাত্রায় প্রতিনিয়ত অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন। কখনও এক বুক, কখনও বা এক কোমর পানি, আবার কখনও এক হাঁটু পরিমাণ কাদা মাড়িয়ে কূলে উঠতে হয়। সূর্য ডোবার পর বন্ধ হয়ে যায় মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দিনের পর দিনও থাকতে হয় বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। এসব কিছু বিবেচনা করে ২০২২ সালে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে ফেরি সার্ভিসের উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সন্দ্বীপের সন্তান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের তত্ত্বাবধানে কাজে নতুন করে গতি পায়।

চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটে সরাসরি এই ফেরি সেবা চালুর মধ্য দিয়ে সন্দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো। বাস, ট্রাক, ট্যাংক লরি, মিনিবাস, প্রাইভেট কারসহ সব ধরনের যানবাহন সরাসরি দ্বীপে পৌঁছানোর সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় সন্দ্বীপবাসীর জীবনযাত্রার মান ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ারও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।

শেয়ার করুন

দেশে প্রথমবার সমুদ্রপথে ফেরি চলাচল শুরু

সময় ১১:৫৪:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

দেশে সমুদ্রপথে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ফেরির যুগে প্রবেশ করল চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ। সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ঘাটে পাঁচজন উপদেষ্টাকে সঙ্গে নিয়ে এই ফেরি সেবার উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। পরে সকাল ৯টায় উপদেষ্টাদের বহন করে ফেরি সন্দ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করে। ৫৫ মিনিটের যাত্রার পর ১০টা ৫৫ মিনিটে ফেরি সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছায়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম; প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌপথে ফেরি চালুর মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সমুদ্রপথে ফেরি যাত্রার সূচনা হলো। একই সাথে চার লাখ মানুষের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হলো।

চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করে। দৈনন্দিন কাজ, জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো জরুরি কাজে এ জনপদের বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে জেলা শহর চট্টগ্রামে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে রয়েছে উত্তাল নৌ চ্যানেল, এই নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কিমি। এ পথ পাড়ি দিতে শিশু, নারী ও বয়োবৃদ্ধ যাত্রীরা নৌযাত্রায় প্রতিনিয়ত অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন। কখনও এক বুক, কখনও বা এক কোমর পানি, আবার কখনও এক হাঁটু পরিমাণ কাদা মাড়িয়ে কূলে উঠতে হয়। সূর্য ডোবার পর বন্ধ হয়ে যায় মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দিনের পর দিনও থাকতে হয় বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। এসব কিছু বিবেচনা করে ২০২২ সালে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে ফেরি সার্ভিসের উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সন্দ্বীপের সন্তান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের তত্ত্বাবধানে কাজে নতুন করে গতি পায়।

চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটে সরাসরি এই ফেরি সেবা চালুর মধ্য দিয়ে সন্দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো। বাস, ট্রাক, ট্যাংক লরি, মিনিবাস, প্রাইভেট কারসহ সব ধরনের যানবাহন সরাসরি দ্বীপে পৌঁছানোর সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় সন্দ্বীপবাসীর জীবনযাত্রার মান ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ারও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।