০৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামালপুরের বংশ খাল: দখল -দূষণে শুধুই ড্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
  • সময় ০২:২০:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 24

দখল -দূষণে শুধুই ড্রেন

জামালপুর শহরের মাঝ দিয়ে বংশ খালটি একসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও পয়োনিষ্কাশনে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে দখল ও দূষণের কারণে খালটি এখন এক ধরণের ড্রেনে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়, এবং খালের ময়লা অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

বংশ খালটি ব্রহ্মপুত্র নদে মিশে যায় এবং এটি শহরের সব ড্রেনের পানি প্রবাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক ছিল। তবে খালটি দখল হয়ে যাওয়ায় তা সংকীর্ণ হয়ে গেছে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কিছুটা দখলমুক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু তখনও খালের তলদেশ আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে ড্রেনের মতো তৈরি করা হয়। শহরের ড্রেনের পানি এবং বর্ষার পানি অপসারণে বংশ খাল একসময় গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তবে আজ এটি একটি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

খালটির দুই পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে এবং এর দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার। কিন্তু, এর প্রশস্ততা এখন অনেক কম। খালের দুই পাশে বাসাবাড়ি, হোটেল, রেস্তোরাঁ, বেসরকারি হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ময়লা ফেলা হয়। এসব ময়লার মধ্যে মশা-মাছি ভরেছে, এবং খালটির পানি দূষিত হয়ে কালো হয়ে গেছে।

এলাকার বাসিন্দা এস.কে. সোহেল জানান, “অনেক বছর ধরে এই খালটি ময়লা-আবর্জনায় ভরা। পানি তেমন নামছে না এবং বৃষ্টির সময় পানি বেড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। মশা ও মাছির অত্যাচারে এলাকা বাসযোগ্য নয়।”

অন্য আরেকজন বাসিন্দা বলেন, “খালের পানি একেবারে কালো হয়ে গেছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং কেউ ময়লা পরিষ্কার করার দায়িত্ব নিচ্ছে না। খালের স্রোত নেই, তাই ময়লা জমে থাকে।”

জামালপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. ইউসুফ আলী বলেন, “বংশ খালটি দীর্ঘ ৩ কিলোমিটার এবং এর প্রস্থ ৩ মিটার অবশিষ্ট রয়েছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও গত ১০ বছরেও খালটি পরিষ্কার করা হয়নি।”

এ বিষয়ে জামালপুর পৌর প্রশাসক মৌসুমি খানম বলেন, “আমরা বংশ খাল পরিষ্কার শুরু করার পরিকল্পনা করেছি এবং পৌরসভার শ্রমিকদের দিয়ে যতটুকু সম্ভব পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

শেয়ার করুন

জামালপুরের বংশ খাল: দখল -দূষণে শুধুই ড্রেন

সময় ০২:২০:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জামালপুর শহরের মাঝ দিয়ে বংশ খালটি একসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও পয়োনিষ্কাশনে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে দখল ও দূষণের কারণে খালটি এখন এক ধরণের ড্রেনে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়, এবং খালের ময়লা অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

বংশ খালটি ব্রহ্মপুত্র নদে মিশে যায় এবং এটি শহরের সব ড্রেনের পানি প্রবাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক ছিল। তবে খালটি দখল হয়ে যাওয়ায় তা সংকীর্ণ হয়ে গেছে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কিছুটা দখলমুক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু তখনও খালের তলদেশ আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে ড্রেনের মতো তৈরি করা হয়। শহরের ড্রেনের পানি এবং বর্ষার পানি অপসারণে বংশ খাল একসময় গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তবে আজ এটি একটি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

খালটির দুই পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে এবং এর দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার। কিন্তু, এর প্রশস্ততা এখন অনেক কম। খালের দুই পাশে বাসাবাড়ি, হোটেল, রেস্তোরাঁ, বেসরকারি হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ময়লা ফেলা হয়। এসব ময়লার মধ্যে মশা-মাছি ভরেছে, এবং খালটির পানি দূষিত হয়ে কালো হয়ে গেছে।

এলাকার বাসিন্দা এস.কে. সোহেল জানান, “অনেক বছর ধরে এই খালটি ময়লা-আবর্জনায় ভরা। পানি তেমন নামছে না এবং বৃষ্টির সময় পানি বেড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। মশা ও মাছির অত্যাচারে এলাকা বাসযোগ্য নয়।”

অন্য আরেকজন বাসিন্দা বলেন, “খালের পানি একেবারে কালো হয়ে গেছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং কেউ ময়লা পরিষ্কার করার দায়িত্ব নিচ্ছে না। খালের স্রোত নেই, তাই ময়লা জমে থাকে।”

জামালপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. ইউসুফ আলী বলেন, “বংশ খালটি দীর্ঘ ৩ কিলোমিটার এবং এর প্রস্থ ৩ মিটার অবশিষ্ট রয়েছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও গত ১০ বছরেও খালটি পরিষ্কার করা হয়নি।”

এ বিষয়ে জামালপুর পৌর প্রশাসক মৌসুমি খানম বলেন, “আমরা বংশ খাল পরিষ্কার শুরু করার পরিকল্পনা করেছি এবং পৌরসভার শ্রমিকদের দিয়ে যতটুকু সম্ভব পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”