১২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছয় দফা দাবিতে শহীদ মিনারে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ১১:৩২:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 36

ছয় দফা দাবিতে শহীদ মিনারে চাকরিচ্যুত বিডিআর

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল, ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং বিচার প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনাসহ মোট ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন, অনেকে রাত থেকেই সেখানে অবস্থান নেন।

শহীদ মিনার ঘুরে দেখা গেছে, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করছেন। তাদের মাথায় বিভিন্ন স্লোগানসংবলিত ব্যাজ রয়েছে। আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনারের একপাশে সামিয়ানা টাঙিয়ে রাতযাপনের ব্যবস্থা করেছেন, যেখানে অনেকে বিশ্রাম নিচ্ছেন।

বিক্ষোভকারীরা ‘বিজিবি না বিডিআর, বিডিআর বিডিআর’, ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম সংগ্রাম’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

এক চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য, বিএম কামরুজ্জামান, বলেন, “তৎকালীন সরকার পরিকল্পিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। আমাদের নিরীহ সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে বিডিআর বাহিনী ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত এবং যথাযথ বিচার। আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক।”

বিক্ষোভে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা আগামী ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারিও শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

বিডিআরদের ৬ দফা দাবি হলো:
১. পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামারি কোর্ট গঠন করে যে বিডিআর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের সবাইকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

২. এরইমধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া জেল বন্দি বিডিআর সদস্যদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রহসনের বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে।

৩. গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ব্যতীত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ) নং ধারা বাদ দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বাধীন তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত সর্বপ্রকার নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন, মূল ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৪. পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ হওয়া ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ জন বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ী সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৫. স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী বিডিআরের নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।

৬. পিলখানার হত্যাকাণ্ডে শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে এবং শহীদ পরিবারের সর্বপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

শেয়ার করুন

ছয় দফা দাবিতে শহীদ মিনারে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা

সময় ১১:৩২:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল, ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং বিচার প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনাসহ মোট ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন, অনেকে রাত থেকেই সেখানে অবস্থান নেন।

শহীদ মিনার ঘুরে দেখা গেছে, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করছেন। তাদের মাথায় বিভিন্ন স্লোগানসংবলিত ব্যাজ রয়েছে। আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনারের একপাশে সামিয়ানা টাঙিয়ে রাতযাপনের ব্যবস্থা করেছেন, যেখানে অনেকে বিশ্রাম নিচ্ছেন।

বিক্ষোভকারীরা ‘বিজিবি না বিডিআর, বিডিআর বিডিআর’, ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম সংগ্রাম’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

এক চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য, বিএম কামরুজ্জামান, বলেন, “তৎকালীন সরকার পরিকল্পিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। আমাদের নিরীহ সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে বিডিআর বাহিনী ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত এবং যথাযথ বিচার। আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক।”

বিক্ষোভে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা আগামী ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারিও শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

বিডিআরদের ৬ দফা দাবি হলো:
১. পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামারি কোর্ট গঠন করে যে বিডিআর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের সবাইকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

২. এরইমধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া জেল বন্দি বিডিআর সদস্যদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রহসনের বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে।

৩. গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ব্যতীত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ) নং ধারা বাদ দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বাধীন তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত সর্বপ্রকার নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন, মূল ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৪. পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ হওয়া ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ জন বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ী সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৫. স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী বিডিআরের নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।

৬. পিলখানার হত্যাকাণ্ডে শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে এবং শহীদ পরিবারের সর্বপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।