০১:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বচ্ছ নির্বাচন চান তারেক, যশোর বিএনপির সভাপতি কে?

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর
  • সময় ০৫:২৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 58

স্বচ্ছ নির্বাচন চান তারেক, যশোর বিএনপির সভাপতি কে?

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের সমর্থন ছাড়া বিএনপি কোনো কাজ করে না। বিভ্রান্ত হয়ে অনৈতিক কাজে জড়িত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাই বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী, স্বচ্ছ ও দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেওয়া জরুরি। শনিবার যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

একই সঙ্গে যশোর জেলা বিএনিপর সভাপতির পদে কে আসছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৭ বছর পর যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। মেয়াদ উত্তীর্ণের ১০ বছর পর ২০১৮ সালের ২০ মে মাসে ভেঙে দিয়ে ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিলো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুকে সদস্য সচিব করে ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দিয়ে এতদিন চলছিলো জেলা বিএনপির দলীয় কার্যক্রম। যদিও আহ্বায়ক কমিটিকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৭ টি বছর।

এই কাউন্সিলে ১ হাজার ৬১৬ জন কাউন্সিলর / ডেলিগেট তাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে জেলা বিএনপির নতুন নেতা নির্বাচিত করবেন। নির্বাচিত করবেন তাদের প্রতিনিধি ।

আজকের এই কাউন্সিলে সভাপতি পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও সাধারণ সম্পাদক পদে একমাত্র দেলোয়ার হোসেন খোকনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আর সাংগঠনিক সম্পাদকের তিন পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৪ জন।

সভাপতি পদে যে তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা হলেন, বর্তমান সদস্য সচিব এ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজনুর রহমান খান ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মারুফুল ইসলাম।

তারেক রহমান বলেন, এখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলছেন, তবে বিএনপিই প্রথম স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আড়াই বছর আগে দেশ পুনর্গঠনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ৩১ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি প্রমাণ করেছে, অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে না। দলের মূল লক্ষ্য দেশ ও জনগণের কল্যাণ। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশ পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সরকার গঠন করবে।

শনিবার সকালে যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। স্থানীয় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

সম্মেলনের শুরুতে বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলনে নিহত নেতাকর্মীদের স্মরণে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তখন অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে আহ্বায়ক এবং অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুকে সদস্যসচিব করা হয়। তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ থাকলেও ছয় বছর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে দুপুর ২টা থেকে মুন্সী মেহেরুল্লাহ ময়দানের আলমগীর সিদ্দিকী হলে সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। আট উপজেলার ১৬টি ইউনিটের ১,৬১৬ জন ভোটার এতে অংশ নেন।

সম্মেলন ঘিরে শহরজুড়ে ছিল সাজসজ্জা, ব্যানার-ফেস্টুন ও জাতীয় নেতাদের নামে তোরণ। সকাল ৯টা থেকেই ডেলিগেট, কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত হতে থাকেন, এবং ১০টার মধ্যেই সম্মেলনস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। নেতাকর্মীরা চান, দলের দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তারা যেন যোগ্য সম্মান পান।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু। এছাড়াও কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা ও পৌর ইউনিটের নেতারা বক্তব্য দেন।

দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে, যা বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

শেয়ার করুন

স্বচ্ছ নির্বাচন চান তারেক, যশোর বিএনপির সভাপতি কে?

সময় ০৫:২৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের সমর্থন ছাড়া বিএনপি কোনো কাজ করে না। বিভ্রান্ত হয়ে অনৈতিক কাজে জড়িত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাই বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী, স্বচ্ছ ও দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেওয়া জরুরি। শনিবার যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

একই সঙ্গে যশোর জেলা বিএনিপর সভাপতির পদে কে আসছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৭ বছর পর যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। মেয়াদ উত্তীর্ণের ১০ বছর পর ২০১৮ সালের ২০ মে মাসে ভেঙে দিয়ে ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিলো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুকে সদস্য সচিব করে ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দিয়ে এতদিন চলছিলো জেলা বিএনপির দলীয় কার্যক্রম। যদিও আহ্বায়ক কমিটিকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৭ টি বছর।

এই কাউন্সিলে ১ হাজার ৬১৬ জন কাউন্সিলর / ডেলিগেট তাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে জেলা বিএনপির নতুন নেতা নির্বাচিত করবেন। নির্বাচিত করবেন তাদের প্রতিনিধি ।

আজকের এই কাউন্সিলে সভাপতি পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও সাধারণ সম্পাদক পদে একমাত্র দেলোয়ার হোসেন খোকনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আর সাংগঠনিক সম্পাদকের তিন পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৪ জন।

সভাপতি পদে যে তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা হলেন, বর্তমান সদস্য সচিব এ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজনুর রহমান খান ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মারুফুল ইসলাম।

তারেক রহমান বলেন, এখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলছেন, তবে বিএনপিই প্রথম স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আড়াই বছর আগে দেশ পুনর্গঠনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ৩১ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি প্রমাণ করেছে, অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে না। দলের মূল লক্ষ্য দেশ ও জনগণের কল্যাণ। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশ পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সরকার গঠন করবে।

শনিবার সকালে যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। স্থানীয় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

সম্মেলনের শুরুতে বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলনে নিহত নেতাকর্মীদের স্মরণে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পরে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তখন অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে আহ্বায়ক এবং অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুকে সদস্যসচিব করা হয়। তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ থাকলেও ছয় বছর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে দুপুর ২টা থেকে মুন্সী মেহেরুল্লাহ ময়দানের আলমগীর সিদ্দিকী হলে সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। আট উপজেলার ১৬টি ইউনিটের ১,৬১৬ জন ভোটার এতে অংশ নেন।

সম্মেলন ঘিরে শহরজুড়ে ছিল সাজসজ্জা, ব্যানার-ফেস্টুন ও জাতীয় নেতাদের নামে তোরণ। সকাল ৯টা থেকেই ডেলিগেট, কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত হতে থাকেন, এবং ১০টার মধ্যেই সম্মেলনস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। নেতাকর্মীরা চান, দলের দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তারা যেন যোগ্য সম্মান পান।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু। এছাড়াও কেন্দ্র, জেলা, উপজেলা ও পৌর ইউনিটের নেতারা বক্তব্য দেন।

দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে, যা বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।