১১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিজিবি-বিএসএফ আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ১২:২১:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 27

সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিজিবি-বিএসএফ আলোচনা

ভারতের নয়াদিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৫তম সীমান্ত সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই সম্মেলন ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সীমান্ত হত্যা রোধ, চোরাচালান বন্ধ এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়। অপরদিকে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর মহাপরিচালক দলজিৎ সিং চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল এতে অংশগ্রহণ করে।

সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিএসএফের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান। আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়।

বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্তে হত্যা রোধে ‘অ-প্রাণঘাতী’ নীতির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সীমান্ত অপরাধ দমনে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সম্মেলনে উভয় পক্ষ নিম্নলিখিত বিষয়ে একমত হয়:

১. সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত করা বা মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে যৌথ টহল বৃদ্ধি, আগাম গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান এবং সীমান্তবর্তী জনগণের জন্য জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ।

২. সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে যৌথ পরিদর্শন এবং আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

৩. আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন, বিশেষ করে মাদক, গবাদিপশু, স্বর্ণ, অস্ত্র ও জাল মুদ্রার চোরাচালান রোধ এবং এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান।

৪. সীমান্ত আইন লঙ্ঘনজনিত ভুল বোঝাবুঝি ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নজরদারি বৃদ্ধি এবং সীমান্ত অতিক্রম রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা।

৫. মানব পাচার প্রতিরোধে উভয় দেশের আইন অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পাচারের শিকার ব্যক্তিদের উদ্ধার ও পুনর্বাসনে সহায়তা।

৬. সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার আওতায় পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়ন, যৌথ খেলাধুলা এবং যৌথ রিট্রিট সেরিমনি আয়োজন।

৭. আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তবর্তী খালের বর্জ্য পানি শোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে রহিমপুর খালের সংযোগ উন্মুক্তকরণ।

এই সম্মেলনের মাধ্যমে উভয় দেশ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ ও পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

 

শেয়ার করুন

সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিজিবি-বিএসএফ আলোচনা

সময় ১২:২১:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভারতের নয়াদিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৫তম সীমান্ত সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই সম্মেলন ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সীমান্ত হত্যা রোধ, চোরাচালান বন্ধ এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়। অপরদিকে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর মহাপরিচালক দলজিৎ সিং চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল এতে অংশগ্রহণ করে।

সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বিএসএফের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান। আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়।

বিএসএফ মহাপরিচালক সীমান্তে হত্যা রোধে ‘অ-প্রাণঘাতী’ নীতির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সীমান্ত অপরাধ দমনে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সম্মেলনে উভয় পক্ষ নিম্নলিখিত বিষয়ে একমত হয়:

১. সীমান্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত করা বা মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে যৌথ টহল বৃদ্ধি, আগাম গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান এবং সীমান্তবর্তী জনগণের জন্য জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ।

২. সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে যৌথ পরিদর্শন এবং আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

৩. আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন, বিশেষ করে মাদক, গবাদিপশু, স্বর্ণ, অস্ত্র ও জাল মুদ্রার চোরাচালান রোধ এবং এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান।

৪. সীমান্ত আইন লঙ্ঘনজনিত ভুল বোঝাবুঝি ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নজরদারি বৃদ্ধি এবং সীমান্ত অতিক্রম রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা।

৫. মানব পাচার প্রতিরোধে উভয় দেশের আইন অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পাচারের শিকার ব্যক্তিদের উদ্ধার ও পুনর্বাসনে সহায়তা।

৬. সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার আওতায় পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়ন, যৌথ খেলাধুলা এবং যৌথ রিট্রিট সেরিমনি আয়োজন।

৭. আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তবর্তী খালের বর্জ্য পানি শোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে রহিমপুর খালের সংযোগ উন্মুক্তকরণ।

এই সম্মেলনের মাধ্যমে উভয় দেশ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ ও পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।