মরদেহ ফেরত দিয়েছে বিএসএফ

- সময় ১০:৫১:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 14
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে নিহত বাংলাদেশি যুবক বারিকুল ইসলামের (৩৫) মরদেহ ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। নিহত বারিকুল নামোজগন্নায়পুর স্কুলছাম গ্রামের সেতাবুল হকের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিবগঞ্জের সোনামসজিদ সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে ক্যাজুয়াল মিটিংয়ের পর ভারতীয় পুলিশ বারিকুলের মরদেহ শিবগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে পুলিশ মরদেহটি বারিকুলের বাবা-মা, ছোট ভাই সুমন এবং প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ইকবাল হোসেনের কাছে বুঝিয়ে দেয়।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি ভোরের মধ্যে বারিকুল নিখোঁজ হন। তারা অভিযোগ করেন, সীমান্তের ওপারে বিএসএফ তাকে আটক করে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে। ভারতের আত্মীয়দের মাধ্যমে অনলাইনে ছবি ও তথ্য পেয়েই তারা এই অভিযোগ করেন।
স্থানীয়রা জানান, বারিকুল পেশায় কৃষক ছিলেন এবং সীমান্তবর্তী জমিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। তবে অন্য একটি সূত্র জানায়, তিনি পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বিএসএফের হাতে আটক হন।
৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মনির-উজ-জামান জানান, তিন দিন পর বারিকুলের পরিবার থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তারা তদন্ত শুরু করেন। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিএসএফকে ছবি ও তথ্য দিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজ চাওয়া হয়।
১৫ ফেব্রুয়ারি বিএসএফ জানায়, তারা একটি মরদেহ পেয়েছে এবং সেটি ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তবে মৃত্যুর কারণ জানানো হয়নি। পরে শনাক্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ১৮ ফেব্রুয়ারি মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়।
বিএসএফ জানিয়েছে, তারা বারিকুলকে আহত অবস্থায় আটক করেছিল। তবে মৃত্যু আঘাতজনিত কারণে হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাটি চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল কি না, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
শিবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান আলী জানান, মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হলেও ভারতীয় পুলিশ রিপোর্ট দেয়নি। ভারতের সংশ্লিষ্ট থানায় এ নিয়ে একটি মামলা হয়েছে। বারিকুল নিখোঁজের ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি তার পরিবার শিবগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
৫৩ বিজিবির অধিনায়ক মনির-উজ-জামান বলেন, বিএসএফের বাজিতপুর ক্যাম্পের আওতাধীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। মরদেহ ফেরত এলেও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত না হওয়ায়, আনুষ্ঠানিকভাবে বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানানো হবে।
এখন নিহতের পরিবার বিচার ও প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন। সীমান্তে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানও জানান স্থানীয়রা।