০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিচার তাৎক্ষণিকভাবে করলে অবিচার হয়: ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ০৬:২১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 46

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন যে, কোনো বিচার তাৎক্ষণিকভাবে করা হলে তা অবিচারে পরিণত হয়। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ২১ জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদের মধ্যে আর্থিক চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান।

ড. ইউনূস বলেন, “যারা আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের ত্যাগের কোনো পরিমাপ নেই। তারা জীবন্ত ইতিহাস, এবং তাদের প্রতি আমাদের গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।” তিনি আরো বলেন, “একটি জাতি যদি তার ইতিহাস ভুলে যায়, সে জাতি কখনও ঐক্যবদ্ধ হতে পারে না।” শহীদ পরিবার ও আহতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আজ থেকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের অংশ হয়ে গেলেন। এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি, তবে এর বাইরেও সমাজের প্রতি তাদের দায়িত্ব রয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “সকল হত্যাকাণ্ড ও গুম-খুনের বিচার হবে, তবে বিচারের ক্ষেত্রে সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার তাৎক্ষণিকভাবে করলে অবিচার হতে পারে, যা আমরা কখনোই চাই না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা অপরাধী, তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করব, আর যারা নির্দোষ, তাদেরকে সৎ পথে নিয়ে আসব।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এ দেশ আমার একার নয়, তোমারও এ দেশ। আমাদের একযোগে কাজ করে এটি একটি সুন্দর দেশ বানাতে হবে। যারা অপরাধী, তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে, আর যারা নির্দোষ, তাদের সৎ পথে পরিচালিত করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারদের জন্য এককালীন ৩০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে এবং ২০ লাখ টাকা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে প্রদান করা হবে। এছাড়াও, প্রতি শহীদ পরিবারকে মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা প্রদান করা হবে, এবং তাদের কর্মক্ষম সদস্যদের সরকারি ও আধাসরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

গুরুতর আহতদের জন্য দুটি মেডিকেল ক্যাটাগরি অনুযায়ী সুবিধা ঘোষণা করা হয়। ‘ক্যাটাগরি এ’-এর অন্তর্গত গুরুতর আহতদের এককালীন ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে, যার মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২ লাখ টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা, চিকিৎসা সুবিধা এবং পুনর্বাসনও তাদের জন্য প্রদান করা হবে। ‘ক্যাটাগরি বি’-এর আওতায় ৩ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে, সাথে মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা এবং কর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা দেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

বিচার তাৎক্ষণিকভাবে করলে অবিচার হয়: ড. ইউনূস

সময় ০৬:২১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন যে, কোনো বিচার তাৎক্ষণিকভাবে করা হলে তা অবিচারে পরিণত হয়। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ২১ জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদের মধ্যে আর্থিক চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান।

ড. ইউনূস বলেন, “যারা আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের ত্যাগের কোনো পরিমাপ নেই। তারা জীবন্ত ইতিহাস, এবং তাদের প্রতি আমাদের গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।” তিনি আরো বলেন, “একটি জাতি যদি তার ইতিহাস ভুলে যায়, সে জাতি কখনও ঐক্যবদ্ধ হতে পারে না।” শহীদ পরিবার ও আহতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আজ থেকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের অংশ হয়ে গেলেন। এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি, তবে এর বাইরেও সমাজের প্রতি তাদের দায়িত্ব রয়েছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “সকল হত্যাকাণ্ড ও গুম-খুনের বিচার হবে, তবে বিচারের ক্ষেত্রে সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচার তাৎক্ষণিকভাবে করলে অবিচার হতে পারে, যা আমরা কখনোই চাই না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা অপরাধী, তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করব, আর যারা নির্দোষ, তাদেরকে সৎ পথে নিয়ে আসব।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এ দেশ আমার একার নয়, তোমারও এ দেশ। আমাদের একযোগে কাজ করে এটি একটি সুন্দর দেশ বানাতে হবে। যারা অপরাধী, তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে, আর যারা নির্দোষ, তাদের সৎ পথে পরিচালিত করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারদের জন্য এককালীন ৩০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে এবং ২০ লাখ টাকা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে প্রদান করা হবে। এছাড়াও, প্রতি শহীদ পরিবারকে মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা প্রদান করা হবে, এবং তাদের কর্মক্ষম সদস্যদের সরকারি ও আধাসরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

গুরুতর আহতদের জন্য দুটি মেডিকেল ক্যাটাগরি অনুযায়ী সুবিধা ঘোষণা করা হয়। ‘ক্যাটাগরি এ’-এর অন্তর্গত গুরুতর আহতদের এককালীন ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে, যার মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২ লাখ টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা, চিকিৎসা সুবিধা এবং পুনর্বাসনও তাদের জন্য প্রদান করা হবে। ‘ক্যাটাগরি বি’-এর আওতায় ৩ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে, সাথে মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা এবং কর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা দেওয়া হবে।