০৬:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ থেকে আরেকটি করিডোর চায় ভারত

আল আসকারী
  • সময় ০৯:৪৯:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • / 43

বাংলাদেশ থেকে আরেকটি করিডোর চায় ভারত

উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় রাজ্য। পাহাড়, নদী আর সবুজের সমারোহে ঘেরা এই রাজ্যটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এই রাজ্যের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা।

মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে কলকাতার সড়কপথে দূরত্ব প্রায় এক হাজার থেকে ১১শ’ কিলোমিটার। সাধারণত, শিলং থেকে কলকাতা যেতে প্রায় ২০-২৪ ঘণ্টা সময় লাগে।

আর যদি বিমানপথে যাওয়া হয়, তবে দূরত্ব প্রায় ৫০০-৬০০ কিলোমিটার এবং ফ্লাইটে সময় লাগে প্রায় দেড় থেকে ২ ঘণ্টা।

কলকাতা বা ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে মেঘালয়ের দূরত্ব শুধু ভৌগোলিক নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মেঘালয় সরকার এখন বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।

হিলি পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী শহর, আর মহেন্দ্রগঞ্জের অবস্থান মেঘালয়ের গারো পাহাড়ি অঞ্চলের সীমান্তে। ভারতের এই দুই শহরের সঙ্গেই বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। তাই হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ আন্তঃসীমান্ত অর্থনৈতিক করিডোরের পাশাপাশি এই করিডোরের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা সম্প্রতি একটি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুর জেলার হিলি এবং মেঘালয়ের গারো পাহাড় অঞ্চলের মহেন্দ্রগঞ্জের মধ্যে একটি আন্তদেশীয় অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি করা হবে।

এই করিডোরের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং এটি বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে কলকাতার সঙ্গে মেঘালয়ের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।

এই করিডোর চালু হলে কলকাতা থেকে মেঘালয়ের তুরা, বাঘমারা, দালু ও ডাউকির মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্রগুলোর ভ্রমণ সময় ও খরচ ২৫ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে।

মুখ্যমন্ত্রী সাংমা বলেছেন, এই করিডোর শুধু মেঘালয় নয়, বরাক উপত্যকা ও ত্রিপুরার সঙ্গেও কলকাতার দূরত্ব কমাবে। প্রায় ৬০০-৭০০ কিলোমিটার পথ সাশ্রয় হবে, যা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলোচনা বন্ধ রয়েছে। আগামীতে নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ফের আলোচনা শুরু করতে চায় তারা।

ইতিমধ্যে ভারতের জাতীয় সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়ন করপোরেশন (এনএইচআইডিসিএল) এই সড়কের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে শেয়ার করেছে।

শেয়ার করুন

বাংলাদেশ থেকে আরেকটি করিডোর চায় ভারত

সময় ০৯:৪৯:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় রাজ্য। পাহাড়, নদী আর সবুজের সমারোহে ঘেরা এই রাজ্যটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এই রাজ্যের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা।

মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে কলকাতার সড়কপথে দূরত্ব প্রায় এক হাজার থেকে ১১শ’ কিলোমিটার। সাধারণত, শিলং থেকে কলকাতা যেতে প্রায় ২০-২৪ ঘণ্টা সময় লাগে।

আর যদি বিমানপথে যাওয়া হয়, তবে দূরত্ব প্রায় ৫০০-৬০০ কিলোমিটার এবং ফ্লাইটে সময় লাগে প্রায় দেড় থেকে ২ ঘণ্টা।

কলকাতা বা ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে মেঘালয়ের দূরত্ব শুধু ভৌগোলিক নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মেঘালয় সরকার এখন বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।

হিলি পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী শহর, আর মহেন্দ্রগঞ্জের অবস্থান মেঘালয়ের গারো পাহাড়ি অঞ্চলের সীমান্তে। ভারতের এই দুই শহরের সঙ্গেই বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। তাই হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ আন্তঃসীমান্ত অর্থনৈতিক করিডোরের পাশাপাশি এই করিডোরের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা সম্প্রতি একটি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুর জেলার হিলি এবং মেঘালয়ের গারো পাহাড় অঞ্চলের মহেন্দ্রগঞ্জের মধ্যে একটি আন্তদেশীয় অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি করা হবে।

এই করিডোরের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং এটি বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে কলকাতার সঙ্গে মেঘালয়ের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে।

এই করিডোর চালু হলে কলকাতা থেকে মেঘালয়ের তুরা, বাঘমারা, দালু ও ডাউকির মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্রগুলোর ভ্রমণ সময় ও খরচ ২৫ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে।

মুখ্যমন্ত্রী সাংমা বলেছেন, এই করিডোর শুধু মেঘালয় নয়, বরাক উপত্যকা ও ত্রিপুরার সঙ্গেও কলকাতার দূরত্ব কমাবে। প্রায় ৬০০-৭০০ কিলোমিটার পথ সাশ্রয় হবে, যা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলোচনা বন্ধ রয়েছে। আগামীতে নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ফের আলোচনা শুরু করতে চায় তারা।

ইতিমধ্যে ভারতের জাতীয় সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়ন করপোরেশন (এনএইচআইডিসিএল) এই সড়কের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে শেয়ার করেছে।