১১:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে ঢাকার অনুরোধ

বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের ৮ বিলিয়ন ডলার সহায়তা

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১১:০৩:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 40

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছে তাদের সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে। গত ৫০ বছরে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্যনিরাপত্তা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন খাতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে।

ক্ষমতায় এসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেন। ২০২৩ সালে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সহায়তাপ্রাপ্তদের শীর্ষে।

ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ জারির ২২ দিন পর, দেশটির সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) আন্তর্জাতিক সহায়তা তহবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশ। ঢাকা মনে করে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা আশা প্রকাশ করেছেন যে, ওয়াশিংটন এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হাসান জোর দিয়েছেন নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর। বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রশাসনের বাংলাদেশ নীতির গুরুত্বের ওপর নির্ভর করছে সহায়তা বহাল রাখার বিষয়টি।

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘মার্কিন সহায়তা আপাতত স্থগিত রয়েছে। আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। যদি কোনো অনিয়ম বা অভিযোগ থাকে, তাহলে সেটি নিষ্পত্তি করা যেতে পারে, কিন্তু সম্পূর্ণ সহায়তা বন্ধ করা উচিত নয়। আমাদের জনগণ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে মার্কিন সরকারের প্রতি আমাদের আবেদন থাকবে।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মোস্তফা সারোয়ার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও অন্যান্য নীতিগুলোর সামঞ্জস্য থাকা গুরুত্বপূর্ণ। যদি সামঞ্জস্য না থাকে, তাহলে সহায়তা পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা কম।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, অনুদান প্রদানকারী দেশের রাজনৈতিক দল পরিবর্তনের সঙ্গে সহায়তা নীতিতেও পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক। তাই বিকল্প খোঁজার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং বিকল্প উপায় খুঁজতে হবে যাতে আমরা টিকে থাকতে পারি।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমেরিকা দিতেই থাকবে, আর আমরা সেভাবে চলব—এ ধারণা এখন আর কার্যকর নয়। ফান্ড বাড়াতে হলে সরকারকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চিন্তা করতে হবে।’

শেয়ার করুন

সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে ঢাকার অনুরোধ

বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের ৮ বিলিয়ন ডলার সহায়তা

সময় ১১:০৩:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছে তাদের সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে। গত ৫০ বছরে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্যনিরাপত্তা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন খাতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে।

ক্ষমতায় এসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেন। ২০২৩ সালে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সহায়তাপ্রাপ্তদের শীর্ষে।

ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ জারির ২২ দিন পর, দেশটির সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) আন্তর্জাতিক সহায়তা তহবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশ। ঢাকা মনে করে, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা আশা প্রকাশ করেছেন যে, ওয়াশিংটন এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হাসান জোর দিয়েছেন নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর। বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রশাসনের বাংলাদেশ নীতির গুরুত্বের ওপর নির্ভর করছে সহায়তা বহাল রাখার বিষয়টি।

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘মার্কিন সহায়তা আপাতত স্থগিত রয়েছে। আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। যদি কোনো অনিয়ম বা অভিযোগ থাকে, তাহলে সেটি নিষ্পত্তি করা যেতে পারে, কিন্তু সম্পূর্ণ সহায়তা বন্ধ করা উচিত নয়। আমাদের জনগণ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে মার্কিন সরকারের প্রতি আমাদের আবেদন থাকবে।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক মোস্তফা সারোয়ার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও অন্যান্য নীতিগুলোর সামঞ্জস্য থাকা গুরুত্বপূর্ণ। যদি সামঞ্জস্য না থাকে, তাহলে সহায়তা পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা কম।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, অনুদান প্রদানকারী দেশের রাজনৈতিক দল পরিবর্তনের সঙ্গে সহায়তা নীতিতেও পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক। তাই বিকল্প খোঁজার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং বিকল্প উপায় খুঁজতে হবে যাতে আমরা টিকে থাকতে পারি।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমেরিকা দিতেই থাকবে, আর আমরা সেভাবে চলব—এ ধারণা এখন আর কার্যকর নয়। ফান্ড বাড়াতে হলে সরকারকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চিন্তা করতে হবে।’