নাটের গুরু নাইট গার্ড শাহাবুদ্দিন
ফজর-সবুজ গংয়ের দখলে মিরপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিস

- সময় ১২:০৮:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 734
মিরপুরের সাব রেজিস্ট্রি অফিসে বদলি হয়ে আসা সব সাব-রেজিস্ট্রার এক চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। সাবেক নাইট গার্ড শাহাবুদ্দিন, তার ঘনিষ্ঠ ফজর আলী ও সবুজের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, যা দলিল রেজিস্ট্রেশন, শ্রেণি পরিবর্তন, সাজানো দাতা, এনআইডি জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মে লিপ্ত।
এই সিন্ডিকেট এতটাই প্রভাবশালী যে, লেস ভ্যালু (জমির দাম কমিয়ে) দলিল রেজিস্ট্রেশনসহ অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণে তারা দক্ষ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের ব্যবস্থা শুরু হলে সাময়িক সময়ের জন্য আত্মগোপনে থেকে আবারও শাহাবুদ্দিন পুনরায় তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
সাবেক নাইট গার্ড শাহাবুদ্দিনের নিকট আত্মীয় ফজর আলী, যার দৈনিক বেতন মাত্র ৬০ টাকা, সাব-রেজিস্ট্রারের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। অন্যদিকে, সবুজ পশ্চিমমুখী চেয়ারে বসে প্রতি দলিলের জন্য ন্যূনতম ৫ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা ঘুষ গ্রহণের কাজ করে যাচ্ছে।
এক সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “এই অফিস পুরোপুরি দখলে নিয়ে রেখেছে চোর চক্র। শাহাবুদ্দিন, ফজর আলী ও সবুজ তাদের অনুগত দলিল লেখক ও নকল নবীশদের মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ ও বণ্টন করে থাকে, যা ভাঙার ক্ষমতা যেন কারও নেই।”
শাহাবুদ্দিনের অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি
তথ্য অনুসারে, মিরপুর-১ নম্বর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাবেক নাইট গার্ড শাহাবুদ্দিন দুর্নীতি, ঘুষ ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছে। বর্তমানে অবসরে গেলেও সে অফিসে দালালি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তার অবৈধ সম্পদের তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো:
বাসা: ১১৬/এ, শাহআলী বাগ, জনতা হাউজিং ৩ নম্বর গেট সংলগ্ন, মিরপুর-১, ঢাকা-১২১৬।
ভবনটি সাড়ে ছয় তলা বিশিষ্ট, যেখানে ১৩টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
বর্তমানে ভবনটি আল কারিম কিরাতুল কোরআন মাদরাসাকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।
তায়েফ ভবন: বাসা-৩৭, পূর্ব শাহআলীবাগ, ধানক্ষেতের মোড়, মিরপুর-১, ঢাকা-১২১৬।
শাহাবুদ্দিনের মালিকানাধীন ৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা।
জমি: সাভার থানার মশুরের গোলায় অবস্থিত ২০০ শতাংশ জমি, যার বর্তমান বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা।
বিলাসবহুল গাড়ি: ঢাকা-মেট্রো-চ-৫১-২১১৭ নম্বরযুক্ত একটি মাইক্রোবাস, যা তার নামে কেনা হয়েছে।
এছাড়াও, তার নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই চক্রের দৌরাত্ম্য রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।