০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

পানামা চুক্তি: ট্রাম্পের চালে চীনের অস্বস্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • সময় ০১:৪৭:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • / 22

পানামা খাল

ব্ল্যাকরক একটি মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান। গত ৪ মার্চ প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দেয়, তারা হংকংভিত্তিক সিকে হাচিসন (সিকেএইচ)-এর কাছ থেকে পানামা খালের দুটি বন্দর কিনে নিচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় বিশ্বের ২৩টি দেশে ৪৩টি বন্দর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে চীনের প্রতিক্রিয়া ছিল তুলনামূলকভাবে শান্ত। যদিও এখন বিষয়টি নিয়ে বেইজিংয়ের অসন্তোষ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

চীনের বিরোধিতার কারণ

গত ১৩ মার্চ চীনের এক সরকারি ওয়েবসাইটে এই চুক্তির তীব্র সমালোচনা প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, চুক্তিটি ‘মেরুদণ্ডহীন’ এবং এটি ‘সব চীনা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে। চীনের সরকারি মুখপত্রগুলোর সরাসরি নিন্দা না থাকলেও হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি ১৮ মার্চ বলেন, এই বিষয়ে ‘গুরুতর মনোযোগ’ প্রয়োজন।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও এই চুক্তি নিয়ে ক্ষুব্ধ বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে। বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো সম্ভাব্য নিরাপত্তা ও অ্যান্টি-ট্রাস্ট লঙ্ঘনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। যদিও চীনের সরকারি সংস্থাগুলোর এই চুক্তি আটকে দেওয়ার সরাসরি আইনি ক্ষমতা নেই, তবে তারা বিভিন্ন অপ্রত্যক্ষ উপায়ে চুক্তির ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে।

পানামা খাল (ফাইল ফটো)
পানামা খাল (ফাইল ফটো)

চুক্তি আটকে দেওয়ার ঝুঁকি

চীন যদি চুক্তিটি রুখতে যায়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক রাষ্ট্রীয় সফরের পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাছাড়া, ট্রাম্পের দাবি যে ‘চীন পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ করে,’ তা আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারে, যা আন্তর্জাতিক মহলে চীনের বন্দর নীতি নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করবে।

তাছাড়া, চীনের বাণিজ্য ও সামরিক স্বার্থ রক্ষায় পানামা খালের বন্দরগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও দেশটি এরই মধ্যে ৫০টি দেশে অন্তত ৯৩টি বন্দর পরিচালনা করছে। ফলে এই চুক্তির সামরিক প্রভাব তুলনামূলকভাবে সীমিত। অনেক দেশেই চীনা যুদ্ধজাহাজগুলোর নোঙর করার অনুমতি থাকে না, ফলে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বন্দরগুলোর সামরিক কার্যকারিতা কমে যায়।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

শি জিনপিং এই চুক্তি নিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে আগ্রহী। এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কিছু কৌশলগত সমঝোতার মাধ্যমে কিছু বন্দর চুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার সুযোগও থাকতে পারে। ফলে চীন চুক্তিটির বিরোধিতা করলেও সরাসরি বাধা দেওয়ার পথে হাঁটার সম্ভাবনা কম।

শেয়ার করুন

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

পানামা চুক্তি: ট্রাম্পের চালে চীনের অস্বস্তি

সময় ০১:৪৭:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

ব্ল্যাকরক একটি মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান। গত ৪ মার্চ প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দেয়, তারা হংকংভিত্তিক সিকে হাচিসন (সিকেএইচ)-এর কাছ থেকে পানামা খালের দুটি বন্দর কিনে নিচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় বিশ্বের ২৩টি দেশে ৪৩টি বন্দর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে চীনের প্রতিক্রিয়া ছিল তুলনামূলকভাবে শান্ত। যদিও এখন বিষয়টি নিয়ে বেইজিংয়ের অসন্তোষ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

চীনের বিরোধিতার কারণ

গত ১৩ মার্চ চীনের এক সরকারি ওয়েবসাইটে এই চুক্তির তীব্র সমালোচনা প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, চুক্তিটি ‘মেরুদণ্ডহীন’ এবং এটি ‘সব চীনা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে। চীনের সরকারি মুখপত্রগুলোর সরাসরি নিন্দা না থাকলেও হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি ১৮ মার্চ বলেন, এই বিষয়ে ‘গুরুতর মনোযোগ’ প্রয়োজন।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও এই চুক্তি নিয়ে ক্ষুব্ধ বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে। বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো সম্ভাব্য নিরাপত্তা ও অ্যান্টি-ট্রাস্ট লঙ্ঘনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। যদিও চীনের সরকারি সংস্থাগুলোর এই চুক্তি আটকে দেওয়ার সরাসরি আইনি ক্ষমতা নেই, তবে তারা বিভিন্ন অপ্রত্যক্ষ উপায়ে চুক্তির ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে।

পানামা খাল (ফাইল ফটো)
পানামা খাল (ফাইল ফটো)

চুক্তি আটকে দেওয়ার ঝুঁকি

চীন যদি চুক্তিটি রুখতে যায়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক রাষ্ট্রীয় সফরের পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাছাড়া, ট্রাম্পের দাবি যে ‘চীন পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ করে,’ তা আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারে, যা আন্তর্জাতিক মহলে চীনের বন্দর নীতি নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করবে।

তাছাড়া, চীনের বাণিজ্য ও সামরিক স্বার্থ রক্ষায় পানামা খালের বন্দরগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও দেশটি এরই মধ্যে ৫০টি দেশে অন্তত ৯৩টি বন্দর পরিচালনা করছে। ফলে এই চুক্তির সামরিক প্রভাব তুলনামূলকভাবে সীমিত। অনেক দেশেই চীনা যুদ্ধজাহাজগুলোর নোঙর করার অনুমতি থাকে না, ফলে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বন্দরগুলোর সামরিক কার্যকারিতা কমে যায়।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

শি জিনপিং এই চুক্তি নিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে আগ্রহী। এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কিছু কৌশলগত সমঝোতার মাধ্যমে কিছু বন্দর চুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার সুযোগও থাকতে পারে। ফলে চীন চুক্তিটির বিরোধিতা করলেও সরাসরি বাধা দেওয়ার পথে হাঁটার সম্ভাবনা কম।