০৯:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মায় জেলের জালে গৃহবধূর মরদেহ, রহস্য ঘনীভূত

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া
  • সময় ০৫:৫৬:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
  • / 25

পদ্মায় গৃহবধূর মরদেহ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নে পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে আটকে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হলো গৃহবধূ আঞ্জুমান (২০)-এর মরদেহ। শনিবার (১ মার্চ) সকালে স্থানীয়রা নদীতে লাশটি ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। নিহত আঞ্জুমান ওই এলাকার আসিফ শেখের স্ত্রী।

শুক্রবার ছিল আসিফ শেখের জন্মদিন। বিকেলে স্ত্রী আঞ্জুমানকে নিয়ে বাজার থেকে কেক কিনে আনেন তিনি। রাত ৮টার দিকে স্বামী ও শাশুড়িকে নিয়ে কেক কাটেন, এরপর স্বজনদের সঙ্গে রাতের খাবার খান।

খাবার শেষে রাত ১০টার দিকে আসিফ ঘুমিয়ে পড়েন। তবে রাত একটার দিকে জেগে দেখেন, ঘরের দরজা খোলা আর স্ত্রী নেই। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে পদ্মা নদীতে তার লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা।

পদ্মায় জেলের জালে মিলল গৃহবধূর মরদেহ
পদ্মায় জেলের জালে মিলল গৃহবধূর মরদেহ

শাশুড়ি ফেরদৌসি খাতুন বলেন, “আমার ছেলের সংসারে কোনো অশান্তি ছিল না। প্রেম করে বিয়ে করেছিল, আমরা সবাই মিলে জন্মদিন উদযাপন করেছি। তবে আঞ্জুমানের উপসর্গজনিত সমস্যা ছিল, মাঝেমধ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে যেত। সেটাই হয়তো তার মৃত্যুর কারণ হয়েছে।”

স্বামী আসিফ শেখ বলেন, “সংসারে কোনো সমস্যা ছিল না। জন্মদিনের আনন্দ শেষে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত একটার দিকে উঠে দেখি, আঞ্জুমান নেই। সারা রাত খুঁজেও পাইনি, সকালে নদীতে তার লাশ পাওয়া গেছে।”

কিন্তু নিহতের মা পারভিন খাতুনের দাবি ভিন্ন। তিনি অভিযোগ করেন, “আসিফ আমার মেয়েকে ধোঁকা দিয়ে বিয়ে করেছে। কয়েক দিন আগে ব্যবসার জন্য তিন লাখ টাকা চেয়েছিল। টাকা না পেয়ে আমার মেয়েকে নদীতে ফেলে হত্যা করেছে। আঞ্জুমানের কোনো উপসর্গ ছিল না। আমি হত্যার বিচার চাই।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, “রাতে নিখোঁজ থাকার পর সকালে পদ্মা নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়, যা জেলের জালে আটকে ছিল। কীভাবে তার মৃত্যু হলো, সেটি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রয়োজন।”

এদিকে, পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

শেয়ার করুন

পদ্মায় জেলের জালে গৃহবধূর মরদেহ, রহস্য ঘনীভূত

সময় ০৫:৫৬:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নে পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে আটকে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হলো গৃহবধূ আঞ্জুমান (২০)-এর মরদেহ। শনিবার (১ মার্চ) সকালে স্থানীয়রা নদীতে লাশটি ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। নিহত আঞ্জুমান ওই এলাকার আসিফ শেখের স্ত্রী।

শুক্রবার ছিল আসিফ শেখের জন্মদিন। বিকেলে স্ত্রী আঞ্জুমানকে নিয়ে বাজার থেকে কেক কিনে আনেন তিনি। রাত ৮টার দিকে স্বামী ও শাশুড়িকে নিয়ে কেক কাটেন, এরপর স্বজনদের সঙ্গে রাতের খাবার খান।

খাবার শেষে রাত ১০টার দিকে আসিফ ঘুমিয়ে পড়েন। তবে রাত একটার দিকে জেগে দেখেন, ঘরের দরজা খোলা আর স্ত্রী নেই। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে পদ্মা নদীতে তার লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা।

পদ্মায় জেলের জালে মিলল গৃহবধূর মরদেহ
পদ্মায় জেলের জালে মিলল গৃহবধূর মরদেহ

শাশুড়ি ফেরদৌসি খাতুন বলেন, “আমার ছেলের সংসারে কোনো অশান্তি ছিল না। প্রেম করে বিয়ে করেছিল, আমরা সবাই মিলে জন্মদিন উদযাপন করেছি। তবে আঞ্জুমানের উপসর্গজনিত সমস্যা ছিল, মাঝেমধ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে যেত। সেটাই হয়তো তার মৃত্যুর কারণ হয়েছে।”

স্বামী আসিফ শেখ বলেন, “সংসারে কোনো সমস্যা ছিল না। জন্মদিনের আনন্দ শেষে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত একটার দিকে উঠে দেখি, আঞ্জুমান নেই। সারা রাত খুঁজেও পাইনি, সকালে নদীতে তার লাশ পাওয়া গেছে।”

কিন্তু নিহতের মা পারভিন খাতুনের দাবি ভিন্ন। তিনি অভিযোগ করেন, “আসিফ আমার মেয়েকে ধোঁকা দিয়ে বিয়ে করেছে। কয়েক দিন আগে ব্যবসার জন্য তিন লাখ টাকা চেয়েছিল। টাকা না পেয়ে আমার মেয়েকে নদীতে ফেলে হত্যা করেছে। আঞ্জুমানের কোনো উপসর্গ ছিল না। আমি হত্যার বিচার চাই।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, “রাতে নিখোঁজ থাকার পর সকালে পদ্মা নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়, যা জেলের জালে আটকে ছিল। কীভাবে তার মৃত্যু হলো, সেটি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রয়োজন।”

এদিকে, পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।