চলন্তবাসে ধর্ষণের প্রমাণ পায়নি পুলিশ

- সময় ০৫:৫৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 31
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও ধর্ষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ডাকাতরা নারীদের স্পর্শ করায় এটিকে শ্লীলতাহানি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
শনিবার সকালে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ১:৪৫ থেকে ৪:০০ পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েল পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তদের ধরতে অভিযানে নামে।
টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি এবং নগদ ২৯,৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মহিত (২৯) – মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাসিন্দা, যার বিরুদ্ধে পাঁচটি ডাকাতির মামলা রয়েছে, মো. সবুজ (৩০) – শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার বাসিন্দা এবং মো. শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ – সাভার পৌরসভার বাসিন্দা।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আহসান জানান, সবুজ ও শরীফ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। অন্যদিকে, মহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১১:২৫ মিনিটে বাদী ওমর আলী ও তাঁর সহযাত্রী সোহাগ হোসেন গাবতলী থেকে রাজশাহীগামী বাসে ওঠেন। রাত ১টার দিকে গাজীপুরের চন্দ্রা বাইপাসে চা-বিরতির পর আরও কয়েকজন যাত্রী ওঠে। এরপর দেড়টার দিকে বাসটি গাজীপুর হাই-টেক সিটি পার্ক অতিক্রম করার সময় হঠাৎ ৮-৯ জন অস্ত্রধারী যাত্রীদের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি শুরু করে।
ডাকাত দলের তিনজন চালককে সিট থেকে টেনে ফেলে দিয়ে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। বাকিরা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকার সম্পদ লুট করে। এ সময় তারা বাসের কয়েকজন নারী যাত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় এবং শারীরিকভাবে হয়রানি করে।
ডাকাতির পর ডাকাতরা নন্দন পার্কের সামনে নেমে যায়। যাত্রীরা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের মির্জাপুর থানায় যোগাযোগ করতে বলে। পরে তারা বড়াইগ্রাম থানার সহায়তায় ঘটনাটি জানায়।
তবে পুলিশি তদন্তের পর বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ বাসের চালক, সুপারভাইজার এবং হেলপারকে আটক করে এবং ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। পরে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করে।
বাদী ওমর আলী বলেন, “ডাকাতরা আমাদের মারধর করেছে, ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে, যার কাছে যা ছিল সব নিয়ে গেছে। আমার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। বাসে থাকা দুই নারী যাত্রীকেও টেনেহিঁচড়ে হয়রানি করেছে ডাকাতরা।”
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা বাসের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। ডাকাতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। শ্লীলতাহানির অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত বাকি ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।