১১:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩৫ কর্মকর্তার লকার খোলা হচ্ছে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • সময় ১০:৪৯:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 33

বাংলাদেশ ব্যাংকে লকার

বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান ৩৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত লকার খুলে সম্পদের পরিমাণ যাচাই করতে চায় সংস্থাটি।

রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের উপস্থিতিতে দুদকের একটি বিশেষ দল লকারগুলো খুলবে। এর আগে, আদালতের অনুমতি নিয়ে লকারগুলো ফ্রিজ করা হয়।

দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ দল এসব লকার খুলে সম্পদের তালিকা তৈরি করবে এবং তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) লকার থেকে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার সম্পদ উদ্ধারের পর আরও ৩৫ কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।

আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে লকার খোলার বিপক্ষে মত দিলেও কেউ কেউ দুর্নীতিবাজদের অপকর্ম প্রকাশের পক্ষে রয়েছেন।

দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ও মো. আবদুর রউফ তালুকদারের বিরুদ্ধেও তদন্ত করছে। অনুসন্ধানের তালিকায় রয়েছেন ডেপুটি গভর্নর মোছা. নুরুন্নাহার, ড. হাবিবুর রহমান, কাজী সাইদুর রহমান, উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাসের, নির্বাহী পরিচালক ড. সায়েরা ইউনুস, পরিচালক ইমাম আবু সাঈদ, পরিচালক (এফপিআইবি) সরোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক আবদুর রউফ, মঞ্জুর হোসেন খান, মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম পরিচালক সুনির্বাণ বড়ুয়া, জোবায়ের হোসেন, নিক তালুকদার, রুবেল চৌধুরী, লেলিন আজাদ পলাশ, উপমহাব্যবস্থাপক তরুণ কান্তি ঘোষ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ফেরদৌস কবির, পদস্থ কর্মকর্তা এ বি এম মোবারক হোসেন, উপপরিচালক হামিদুল আলম সখা, সহকারী পরিচালক মো. কাদের ও সহকারী ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন।

এছাড়াও তালিকায় রয়েছেন সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান ও খুরশিদ আলম, সাবেক পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ, সাবেক উপপরিচালক মোফাজ্জল হোসেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বরখাস্ত) সিকদার লিয়াকতসহ বিএফআইইউর তিন অতিরিক্ত পরিচালক, দুই যুগ্ম পরিচালক ও এক উপপরিচালক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি গত বছরের ৫ আগস্টের পর যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ ও লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন, সেসব আমলে নিয়ে দুদক তদন্ত করছে। ২০০৬ সাল থেকে বিএফআইইউতে কর্মরত বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ সম্পদ অর্জন, শেয়ারবাজার থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, অর্থ পাচার, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, প্রতারণার মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি, রিজার্ভের অর্থ তছরুপের অভিযোগ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ কারণে যাদের নামে লকার রয়েছে, তারা চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

শেয়ার করুন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩৫ কর্মকর্তার লকার খোলা হচ্ছে

সময় ১০:৪৯:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান ৩৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত লকার খুলে সম্পদের পরিমাণ যাচাই করতে চায় সংস্থাটি।

রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের উপস্থিতিতে দুদকের একটি বিশেষ দল লকারগুলো খুলবে। এর আগে, আদালতের অনুমতি নিয়ে লকারগুলো ফ্রিজ করা হয়।

দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ দল এসব লকার খুলে সম্পদের তালিকা তৈরি করবে এবং তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) লকার থেকে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার সম্পদ উদ্ধারের পর আরও ৩৫ কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।

আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে লকার খোলার বিপক্ষে মত দিলেও কেউ কেউ দুর্নীতিবাজদের অপকর্ম প্রকাশের পক্ষে রয়েছেন।

দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ও মো. আবদুর রউফ তালুকদারের বিরুদ্ধেও তদন্ত করছে। অনুসন্ধানের তালিকায় রয়েছেন ডেপুটি গভর্নর মোছা. নুরুন্নাহার, ড. হাবিবুর রহমান, কাজী সাইদুর রহমান, উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাসের, নির্বাহী পরিচালক ড. সায়েরা ইউনুস, পরিচালক ইমাম আবু সাঈদ, পরিচালক (এফপিআইবি) সরোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক আবদুর রউফ, মঞ্জুর হোসেন খান, মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম পরিচালক সুনির্বাণ বড়ুয়া, জোবায়ের হোসেন, নিক তালুকদার, রুবেল চৌধুরী, লেলিন আজাদ পলাশ, উপমহাব্যবস্থাপক তরুণ কান্তি ঘোষ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ফেরদৌস কবির, পদস্থ কর্মকর্তা এ বি এম মোবারক হোসেন, উপপরিচালক হামিদুল আলম সখা, সহকারী পরিচালক মো. কাদের ও সহকারী ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন।

এছাড়াও তালিকায় রয়েছেন সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান ও খুরশিদ আলম, সাবেক পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ, সাবেক উপপরিচালক মোফাজ্জল হোসেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বরখাস্ত) সিকদার লিয়াকতসহ বিএফআইইউর তিন অতিরিক্ত পরিচালক, দুই যুগ্ম পরিচালক ও এক উপপরিচালক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি গত বছরের ৫ আগস্টের পর যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ ও লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন, সেসব আমলে নিয়ে দুদক তদন্ত করছে। ২০০৬ সাল থেকে বিএফআইইউতে কর্মরত বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ সম্পদ অর্জন, শেয়ারবাজার থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, অর্থ পাচার, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, প্রতারণার মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি, রিজার্ভের অর্থ তছরুপের অভিযোগ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ কারণে যাদের নামে লকার রয়েছে, তারা চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।