পুনঃখনন হচ্ছে
কলারোয়াতে ৩ যুগ পর প্রাণ ফিরে পেল রতনপুর সাইড খাল

- সময় ১০:৩১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
- / 119
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ৩৫ বছর পলিমাটিতে ভরাট হয়ে থাকা ১১০০ মিটার দীর্ঘ মরা খাল পুনঃখননের মাধ্যমে নতুন জীবন পেয়েছে। নেদারল্যান্ড দূতাবাসের আর্থিক সহায়তায় সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার “সফল ফর ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (IWRM) প্রকল্প” এর আওতায় এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুর ১২টায় কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খাল পুনঃখনন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
কেরেলকাতা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সোনিয়া লায়লা এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— ম্যানেজার, IWRM সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া কৃষিবিদ মোস্তফা নুরুল ইসলাম , প্রকল্প ব্যবস্থাপক, উত্তরণ খুলনা কৃষিবিদ মো. ইকবাল হোসেন, উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউল হক , উপজেলা প্রকৌশলী এমরান আহমেদ খান , উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার দাস , উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পুলক কুমার শিকদার , বিশিষ্ট সমাজসেবক ও বিএনপি নেতা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, খাল পুনঃখনন কমিটির আহ্বায়ক আজিজুর রহমান , মাওলানা ইউসুফ আলী, ওয়াটার ক্লাস্টার অফিসার, উত্তরণ (IWRM) প্রকল্প মিজানুর রহমান, ম্যানেজার, মাইক্রোফিনান্স, উত্তরণ রাবেয়া খাতুন , ওয়াটার ক্লাসটার ফ্যাসিলিটেটর কামরুজ্জামান, খোকন সরদার ও তাহমিনা খাতুন।

অনুষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, কেরেলকাতা ইউনিয়নের রতনপুর সাইড খাল পুনঃখননের ফলে ১১৫০ জন কৃষক উপকৃত হবেন। এ খালের মাধ্যমে ৯৫০ একর কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ সহজ হবে, যা স্থানীয় কৃষিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
IWRM প্রকল্পের ফলে খালটির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত হবে, যা সেচ সুবিধা বৃদ্ধি, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক হবে। স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দারা বলছেন, এটি একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ, যা উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও জীববৈচিত্র্যে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।
রতনপুর গ্রামের কৃষক মো. কবিরুল ইসলাম ডাবলু বলেন, “এতোদিন ধরে আমরা পানির অভাবে সঠিকভাবে চাষ করতে পারছিলাম না। এখন এই খাল পুনঃখননের ফলে সেচের সুবিধা পাবো, ফলে ফসলের উৎপাদন বাড়বে।“
স্থানীয় বাসিন্দা মোছা. হাসিনা বেগম জানান, “এতোদিন বর্ষার সময় জলাবদ্ধতা থাকতো, আর শুকনো মৌসুমে পানি থাকতো না। এখন এই সমস্যার সমাধান হবে।“
সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার (IWRM) প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার টেকসই উন্নয়নই তাদের মূল লক্ষ্য। ভবিষ্যতে সাতক্ষীরার অন্যান্য জলাশয় পুনঃখনন এবং পানি সংরক্ষণের জন্য আরও কার্যক্রম নেওয়া হবে।
৩৫ বছর ধরে মৃতপ্রায় খালটি পুনঃখননের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও বাস্তুতন্ত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয়দের জলাবদ্ধতা ও পানির অভাবজনিত সমস্যার সমাধান হবে। এটি শুধু একটি প্রকল্প নয়, একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন।