এখনো পুড়ছে সুন্দরবন

- সময় ১১:০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
- / 27
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজী ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির বনের আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। এ রিপোর্ট লেখার সময় রোববার সকাল সাড়ে ১০ টায়ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু পানির স্বল্পতা ও আলোকস্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস।
শনিবার (২২ মার্চ) সকালে ট্যাপার বিলে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসিন্দারা। পরে বন বিভাগ ও স্থানীয়রা একসঙ্গে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। বিকেলের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস। তবে কাছাকাছি জলাশয় না থাকায় পানি ছিটাতে পারেনি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বলছে, পানির উৎসস্থল প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হওয়ায় আগুন নেভাতে সময় লাগছে। আগুন বনের নিচের দিকে রয়েছে, ওপরের দিকে ছড়ায়নি।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বনাঞ্চলে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখার পর বন বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। বন বিভাগের সঙ্গে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকসহ শত শত বাসিন্দা আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেন। আগুন যেন আর ছড়াতে না পারে, সে জন্য বনের মাটির ওপর জমা হওয়া শুকনো লতাপাতা সরিয়ে নালা (ফায়ার লাইন) তৈরি করছেন। তবে কাছাকাছি নদী-খাল বা জলাশয় না থাকায় গতকাল (শনিবার) পানি ছিটানো শুরু করা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের শরণখোলা স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা আবতাদ-ই-আলম জানান, সুন্দরবনের ভোলা নদী থেকে ঘটনাস্থল প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। দুর্গম ও জটিল এলাকা হওয়ায় আমাদের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে রোববার থেকে নতুন উদ্যমে অভিযান শুরু করব।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করীম শনিবার বলেন, আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি এবং ফায়ার লাইন কাটা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ভোলা নদী ৩ কিলোমিটার দূরে থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আশা করা যাচ্ছে, খুব দ্রুত সার্ভিস কাজ শুরু করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে অসাবধানতাবশত জেলে, বাওয়ালী বা মৌয়ালদের ফেলে দেওয়া বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. লায়ন ফরিদ বলেন, সুন্দরবন রেঞ্জের আশপাশের এলাকায় প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ কারণে এই শুষ্ক মৌসুমে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বনসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদেরও সতর্কতা বাড়াতে হবে।
উল্লেখ্য, সুন্দরবনে গত ২২ বছরে ২৫ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সবগুলোই ঘটেছে পূর্ব সুন্দরবন এলাকায়। তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, বেশির ভাগ আগুন লেগেছে জেলে-মৌয়ালদের অসাবধানতায়। যদিও এ নিয়ে বনজীবীদের দ্বিমত আছে।