ঢাকা ০২:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৯ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে রিভিউ শুনানি

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • সময় ১১:৪৪:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 37

তত্ত্বাবধায়ক সরকার

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক তিন রিভিউ আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

রোববার (০১ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বিভাগ শুনানির এ দিন ধার্য করেন।

এর আগে সকালে বিএনপির পক্ষে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ১ মাস সময় আবেদন করেন। এ সময় জামায়াতও এ বিষয়ে আবেদন করেন আদালতে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে তিনটি পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

গত ২৩ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রিভিউ আবেদন দায়ের করে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে রিভিউ আবেদন দায়ের করেছেন সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিকে গত আগস্ট মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেন।

সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট

২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরবর্তী দশম ও একাদশতম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আদালত। রায়ে বলা হয়েছিল এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদ্দেশ্য ছিল – নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনকালে একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠন করা, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মূলত এমন একটি সমাধান হিসেবে এসেছিল, যা দলীয় সরকারের প্রভাব এড়িয়ে জনগণকে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়া উপহার দিতে পারত। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলোও প্রকাশ পেতে শুরু করে।”

১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২০০৭-২০০৮ সালের সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। তাদের দীর্ঘমেয়াদি অবস্থান এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

২০০৮ সালের পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। এই সিদ্ধান্ত আবার নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়। বিরোধী দল বিএনপি এই ব্যবস্থার প্রত্যাবর্তনের দাবি তোলে।

শেয়ার করুন

১৯ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে রিভিউ শুনানি

সময় ১১:৪৪:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক তিন রিভিউ আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

রোববার (০১ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বিভাগ শুনানির এ দিন ধার্য করেন।

এর আগে সকালে বিএনপির পক্ষে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ১ মাস সময় আবেদন করেন। এ সময় জামায়াতও এ বিষয়ে আবেদন করেন আদালতে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে তিনটি পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

গত ২৩ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রিভিউ আবেদন দায়ের করে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে রিভিউ আবেদন দায়ের করেছেন সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিকে গত আগস্ট মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেন।

সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট

২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরবর্তী দশম ও একাদশতম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আদালত। রায়ে বলা হয়েছিল এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদ্দেশ্য ছিল – নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনকালে একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠন করা, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মূলত এমন একটি সমাধান হিসেবে এসেছিল, যা দলীয় সরকারের প্রভাব এড়িয়ে জনগণকে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়া উপহার দিতে পারত। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলোও প্রকাশ পেতে শুরু করে।”

১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২০০৭-২০০৮ সালের সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। তাদের দীর্ঘমেয়াদি অবস্থান এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

২০০৮ সালের পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। এই সিদ্ধান্ত আবার নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়। বিরোধী দল বিএনপি এই ব্যবস্থার প্রত্যাবর্তনের দাবি তোলে।