হঠাৎ কেন গাঁজা চাষের বৈধতা দিলো পাকিস্তান ?
- সময় ১০:৫০:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
- / 268
করোনা মহামারির পর থেকেই অর্থনৈতিক সংকট চলছে পাকিস্তানে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে দেশটিতে বেকারত্ব যেমনি বেড়েছে; তেমনি দেশটির উচ্চদক্ষতাসম্পুর্ণ মেধাবীরা দেশ ছাড়তে শুরু করেছে।
আপদকালিন এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় পাক সরকার বিদেশি সাহায্যের পাশাপাশি বিকল্প একটি চিন্তা শুরু করেছে। এজন্য দেশটিতে নতুন একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশটিতে একটি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানও গঠন করা হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশটি গাঁজা চাষের অনুমতি দিয়েছে পাক কর্তৃপক্ষ। যা দীর্ঘদিন বন্ধ ছিলো মুসলিম প্রধান এই দেশটিতে।
গাঁজা সাধারণত মাদক হিসেবেই বেশি পরিচিত। তবে এর কিছু ভেষজ গুণ রয়েছে এবং ওষুধ হিসেবেও এর প্রয়োগ হয়। মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় অনেক দেশেই এটি নিষিদ্ধ। আবার ওষুধি ব্যবহারের জন্য অনেক দেশই এর ব্যবহার বৈধ করেছে। এমনকি বহুদিন নিষিদ্ধ থাকলেও স¤প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও গাঁজা দিয়ে ওষুধ তৈরির অনুমতি দিয়েছে।
আয়ারল্যান্ডভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেটস-এর মতে, ২০২২ সালে গাঁজার বৈশ্বিক বাজার ছিল ৭ বিলিয়ন তথা ৭০০ কোটি ডলারের। ২০২৭ সাল তথা আগামী তিন বছরের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৩০ বিলিয়ন তথা ৩ হাজার কোটি ডলারে।
অর্থনীতি চাঙ্গা করতে বিকাশমান সেই বাজারের সুযোগ নিতে চাচ্ছে পাকিস্তান। চলতি বছরের ফেব্রæয়ারি মাসে গাঁজা চাষ বিষয়ক একটি অধ্যাদেশও জারি করা করেছে।
এই অধ্যাদেশ বলে কানাবিস কনট্রোল অ্যান্ড রেগুলেটরি অথোরিটি (সিসিআরএ) নামে একটি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কাজ ‘চিকিৎসা ও শিল্প খাতে ব্যবহারের জন্য গাঁজার চাষ, আহরণ, পরিশোধন, উৎপাদন ও বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করা’।
নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান তৈরির বিষয়টি প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল ২০২০ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আমলে। তবে অভ্যন্তরীণ জটিলতায় এর গঠনের উদ্যোগ থেমে যায়। চার বছর পর নতুন করে একে কার্যকর করার বিষয়টি গাঁজা চাষে পাকিস্তানের মরিয়া চেষ্টার দিকটি ইঙ্গিত করছে।
১৯৮০-এর দশকে পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউল হক গাঁজা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। ওই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের মাদকের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যুদ্ধ চলছিল।
পাকিস্তানি আইনে গাঁজার চাষ নিষিদ্ধ হলেও দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তা বন্ধ করা যায়নি। বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশের প্রায় ২৮ হাজার হেক্টও জমিতে কয়েক শত বছর ধরে গাছটির চাষ হচ্ছে। যার ওপর সরকারের তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে বৈধভাবে গাঁজার উৎপাদনে কৃষকদের লাইসেন্স দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া চাষ করলে শাস্তির বিধান করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
গাঁজা চাষের জন্য একজন কৃষককে পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স দেয়া হবে। নির্ধারণ করে দেয়া হবে গাজা চাষের এলাকাও ।