স্ত্রীকে ইভটিজিং, স্বামীর বুক লাল করে দিলো ওরা!
- সময় ১২:৫৫:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
- / 42
সময়টা ১৩ জুন ২০১৭। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে উঠে আসে এক ভয়ানক তথ্য। খরবটির শিরোনাম ছিল ‘ বাংলাদেশে ‘ইভ টিজিং-এর শিকার হয়ে’ আড়াই বছরে ৪০ মেয়ের আত্মহত্যা।’ বাংলাদেশের মানুষের কাছে আতঙ্কের অপর নাম ছিল ইভটিজিং। প্রায় এক যুগ আগে বাংলাদেশের পথে প্রান্তরে নারীর প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোই ছিল এক শ্রেণীর বখাটেদের কাজ।
শেখ হাসিনার শাসনামলেই ইভিটিজিং ছিল। তবে সেটির প্রতিরোধে আইন করে ব্যবস্থা নেয়ার ঘটনাও ছিল। চব্বিশের পাঁচ আগস্ট দেশত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পর রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা নিয়েছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তার নেতৃত্বেই প্রায় ৬ মাস রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে। এরই মাঝে আবারও আলোচনায় এসেছে ইভটিজিং। শেখ হাসিনার আমলের ইভটিজিং যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আবারও।
কক্সবাজারের উখিয়ায় ইভটিজিংয়ের বিচার চাইতে গিয়ে বখাটেদের হামলায় এক যুবক রক্তাক্ত (লাল – সামসাময়িক বিপ্লবের রঙ) হয়েছেন। এই সময় নগদ টাকা লুট ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহত যুবক জিয়াউল হক (৪৩) উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম রত্না গ্রামের হাজী রশিদ আহমদের পুত্র।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) উপজেলার কোটবাজারের মসজিদ রোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী এনজিওকর্মী সালমা ইয়াছমিন জানান, তিনি চাকরি শেষে বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় জালিয়া পালং ইউনিয়নের পূর্ব পাইন্যাশিয়ার ছালামত উল্লাহর পুত্র শামীম কায়সার ইমন (২২), একই এলাকার মোহাম্মদ আলম প্রকাশ ভুলুর পুত্র শহিদুল ইসলাম মানিক (২০) ও রাজাপালং ইউনিয়নের পিনজিরকুল এলাকার আমির আলীর পুত্র ওমর ফারুক (২১) নামে তিন যুবক তাকে অশ্লীল কথাবার্তা বলে উত্যক্ত করে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার স্বামী জিয়াউল হক (৪৩) এলাকার গন্যমান্য লোকজনের কাছে বিচার প্রার্থী হলে ঘটনার দিন মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শামীম কায়সার ইমন (২২), শহিদুল ইসলাম মানিক (২০) ও ওমর ফারুক (২১) অজ্ঞাত নামা ৩/৪ জনসহ হামলা চালায়।
তারা ধারালো ছোরা, লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে তাকে এলোপাথারি মারধর করে। এসময় এনজিওকর্মী সালমা ইয়াছমিনের স্বামীর ওপর আক্রমণ চালায় বখাটেরা। শামীম কায়সার ইমন জিয়াউল হকের ডান কানে ছোরা দিয়ে আঘাত করে এবং শহিদুল ইসলাম মানিক লোহার রড দিয়ে তার কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়। ওমর ফারুক লোহার রড দিয়ে তার ঠোঁট ফাটিয়ে দেয় এবং তিনটি দাঁত নড়িয়ে দেয়।
এছাড়াও অভিযুক্তরা জিয়াউল হকের পকেট থেকে ৪৩ হাজার ৫ শত টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ২০ হাজার টাকার ক্ষতি করে।পরে স্থানীয়রা জিয়াউল হককে উদ্ধার করে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় সালমা ইয়াছমিন বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী সামলা ইয়াছমিন বলেছেন, মামলার পর যদি থানা পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেয়, আমি সর্বোচ্চ মহলে যাবো, তবুও বিচার আদায় করে নিবো।
এদিকে, স্থানীয় কক্সবাজারের লোকজন বাংলা অ্যাফেয়ার্সের কাছে দাবি করে বলেছেন, বাংলাদেশের সবচে বড় সম্পদের নাম বঙ্গোপোসাগর। সমুদ্র সৈকতেও নারী হেনন্থার ঘটনা ঘটেছে। পাঁচ আগস্ট পরবর্তীতে লাল বিপ্লবীদের কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ইনানী বিচের মাসুদ রানা নামের একজন চেয়ার ব্যবসায়ী।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, কক্সবাজার শহরের অন্যতন সেরা একটি হোটেলের সামনে ঝাউবন আছে। সেখানে নিরাপত্তাকর্মী থাকার পরও নারীরা বিশেষ করে যারা একটু সুন্দর ও সুঠাম, তাদের নিয়মিত ইভিজিটিংয়ের শিকার হতে হয়। যা এখনো চলমান রয়েছে।