সৌদির ফুটবল রাজনীতির কাছে অসহায় ফিফা!
- সময় ০৮:২১:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 25
২০৩৪ বিশ্বকাপ ফুটবল যে সৌদি আরবে হচ্ছে সেটি মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল গত বছর অক্টোবরেই। আয়োজক হওয়ার দৌড়ে যে শুধু মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিই ছিল। যে আনুষ্ঠানিকতাটুকু বাকি ছিল, সেটিও হয়ে গেছে কাল। ফিফার কংগ্রেসে ২০৩০ ও ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক বেছে নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সারা হয়েছে। তবে সেটি করতে গিয়ে ফিফার নিজেদের নিয়ম ভেঙেছে বলে দাবি করেছেন সমালোচকেরা। কীভাবে সেই ব্যাখ্যাও তারা দিয়েছেন। মূলত সৌদি আরবের ফুটবল রাজনীতির কাছেই অসহায়ত্ব স্বীকার করে নিল বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, এমনটাই দাবি সমালোচকদের।
ফিফার নিয়মানুযায়ী ২১১ সদস্য ভোট দিয়ে বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচন করে। প্রতিবার একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী থাকায় ভোটের যুদ্ধটা বেশ জমেও ওঠে। তবে এবার ফিফা একই সঙ্গে দুটি বিশ্বকাপের আয়োজক বেছে নিয়েছে। আর সেটি করতে গিয়ে অভিনব ব্যবস্থাই করেছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ২০৩০ ও ২০৩৪-এই দুই বিশ্বকাপের স্বাগতিক মাত্র একটি ভোটেই নির্ধারণ করেছে ফিফা।
২০৩০ বিশ্বকাপ হবে তিন মহাদেশের ছয়টি দেশে। দেশগুলো যৌথভাবেই আয়োজক হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছিল। অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীও ছিল না। আর ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল সৌদি আরব। ‘মানবাধিকার’ প্রশ্নে সৌদি আরবকে যেন কোন দেশ ‘না’ ভোট না দেয় সেটি নিশ্চিত করতেই কিনা ফিফা বলে দেয়, হ্যাঁ ভোট মানে দুই বিশ্বকাপের আয়োজক হতে চাওয়াদের সমর্থন, আর না ভোট মানে দুই বিশ্বকাপের আয়োজক হতে চাওয়াদের বিরুদ্ধে ভোট। যার অর্থ কোনো দেশ যদি সৌদি আরবকে আয়োজক হিসেবে দেখতে না চায়, তবে তারা মরক্কো-স্পেন-পর্তুগাল-আর্জেন্টিনা-চিলি-প্যারাগুয়ের যৌথ আয়োজনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে।
তবে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ব্যালটও ব্যবহার করেনি ফিফা। অনলাইনে হওয়া কংগ্রেসে নির্দেশনা দেওয়া হয় কোনো বিতর্ক ছাড়াই ‘হাত উঁচিয়ে’ নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার। ভোটাররা দুই বিশ্বকাপের আয়োজক হতে আগ্রহীদের নাম শোনার পর হাততালি দিয়েই সমর্থন জানিয়েছেন।
সমালোচকেরা আইন ভঙ্গের কথা বললেও ফিফা কিছুদিন আগে নিয়ম পরিবর্তনের কথা জানিয়ে দিয়েছিল। তারা বলেছিল সব কনফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলেই পরিবর্তনটা করা হয়েছে। তবে কেন দুই বিশ্বকাপের আয়োজক বেছে নেওয়ার ভোট একবারে নেওয়া হবে, সেই ব্যাখ্যা দেয়নি ফিফা।
মোটামুটি আগেভাগেই নির্ধারিত হয়ে যাওয়ায় এবার আয়োজক হওয়া নিয়ে তেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল না। ফিফার সদর দপ্তরে কাল কয়েকজন সৌদি সাংবাদিক ছাড়া সংবাদমাধ্যমের খুব বেশি প্রতিনিধি ছিলেন না। ছিলেন না দুটি বিশ্বকাপের আয়োজকদের কোনো প্রতিনিধিও।
সৌদি আরবের আয়োজক হওয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে কাল ফিফার সদর দপ্তরের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন সুইডেনের এক নাগরিক। এ ছাড়া প্রতিবাদ বলতে নরওয়ের অনুপস্থিতিই সবচেয়ে বড় ঘটনা। সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে নরওয়ে আগেই বলেছিল, তারা অনলাইন কংগ্রেসে যোগ দেবে না।