লুক্সেমবার্গ: পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ কেন ?
- সময় ০৪:৩৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
- / 255
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশের তকমা পেয়েছে ইউরোপের ছোট্ট দেশ লুক্সেমবাগ। আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইমএফ দেশটির মানুষের মাথাপিছু আয় পর্যালোচনা করে এই তকমা দিয়েছে।
মাত্র ২ হাজার ৫৮৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশটির জনগণের মাথাপিছু আয় ১ লাখ ৪০ হাজার ৩১২ ডলার। কিন্তু কীভাবে দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশের তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছেন।
দেশটির অর্থনৈতিক সাফল্যের পেছনে রয়েছে উন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, বৈশ্বিক ব্যাংকিং কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি, কর সুবিধা, মুক্ত বাণিজ্য, সামাজিক নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।
লুক্সেমবার্গের অর্থনীতি বৈচিত্র্যময় এবং সুসংগঠিত। ব্যাংকিং এবং ফাইন্যান্স খাত দেশটির অর্থনীতির মূল স্তম্ভ। এখানে ১৫০টিরও বেশি ব্যাংক এবং বিনিয়োগ সংস্থা রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে।
দেশটির জনগণের মাথাপিছু আয় ১ লাখ ৪০ হাজার ৩১২ ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। যা মূলত ব্যাংকিং, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং রিয়েল এস্টেট খাত থেকে আসে।
লুক্সেমবার্গের কর ব্যবস্থা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য অত্যন্ত অনুকূল। এখানে করের হার তুলনামূলকভাবে কম, যা আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলিকে ব্যবসা
পরিচালনার জন্য উৎসাহিত করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ হওয়ায়, এটি মুক্ত বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করে এবং ইউরোপের অন্য দেশগুলির সাথে ব্যবসা পরিচালনা সহজ হয়।
দেশটির সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য সামাজিক সুবিধাগুলি দেশটির নাগরিকদের জন্য সহজলভ্য এবং উন্নতমানের। দেশটির রাজনৈতিক পরিবেশও অত্যন্ত স্থিতিশীল।
লুক্সেমবার্গের অর্থনীতি প্রধানত ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্স, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও ম্যানুফ্যাকচারিং, এবং পরিষেবা খাতের উপর নির্ভর করে। বৈশ্বিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি কোম্পানি, এবং রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগকারীরা এখানে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করে। অ্যামাজন, স্কাইপি, পেপালের মতো প্রযুক্তি কোম্পানিগুলি লুক্সেমবার্গকে তাদের ইউরোপীয় কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে।
লুক্সেমবার্গের ইতিহাস রোমান যুগে শুরু হয়।এটি ৯৬৩ সালে একটি দুর্গ নির্মাণের মাধ্যমে একটি শহরে পরিণত হয়। ১৮১৫ সালের ভিয়েনা কংগ্রেসের পর লুক্সেমবার্গ একটি গ্র্যান্ড ডাচি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৩৯ সালের লন্ডন চুক্তি অনুযায়ী এর বর্তমান সীমানা নির্ধারিত হয়।
প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির দখলদারিত্বের পরে, লুক্সেমবার্গ ইউরোপীয় পুনর্গঠনের অংশ হয়। ১৯৫৭ সালে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়।
আইএমএফের তালিকায় লুক্সেমবার্গের পরে রয়েছে আয়ারল্যান্ড। দেশটির মাথাপিছু আয় ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৮৮ ডলার। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড। দেশটির মাথাপিছু আয় ১ লাখ ১০ হাজার ২৫১ ডলার। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে নরওয়ে। যেখানে মাথাপিছু আয় ১ লাখ ২ হাজার ৪৬৫ ডলার। এবং পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর। যেখানে মাথাপিছু আয় ৯১ হাজার ৭৩৩ ডলার।