মোংলায় জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন | Bangla Affairs
০৫:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলায় জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, মোংলা
  • সময় ০৫:৪৭:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
  • / 79

মোংলায় জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

মোংলায় সুন্দরবন ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জিয়ার শেখ’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে এলাকার বিএনপি কর্মী সমর্থক নারী-পুরুষ ও শিশুরা। তার অত্যাচার-নির্যাতন, ঘের দখল লুটপাট, মারধর, গরিবের সরকারী সহায়তা আত্মসাত ও এলাকায় তার সন্ত্রাসী কর্মকন্ডে অতিষ্ট হয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২ টার দিকে সুন্দরবন ইউনিয়নের বুরবুড়িয়া স্কুলের সামনের রাস্তায় নেমে এ কর্মসুচি পালন করে চিংড়ী ঘের মালিক ও তার সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতনের স্বীকার ভুক্তভোগীরা। এসময় জিয়ার শেখকে জাতীয়তাবদী দল বিএনপি থেকে বহিস্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানানো হয়।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানায়, জিয়ার শেখ এক সময়ে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে সে সময়ও মানুষকে অহেতুক হয়রানী, মারধর ও জোর পুর্বক চিংড়ি মাছের ঘের লুটপাট করে আসছিল। আবার গত ৫ আগষ্ট আ’লীগ সরকার পতনের পর নব্য বিএনপি সেজে কৌশলে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দরের সাথে আঁতাত করে সুন্দরবন ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়। আর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হওয়ার পরই শুরু হয় তার অত্যাচার-নির্যাতনের কলা কৌশল। সে এলাকার নিরিহ মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার নির্যাতন, তার কথায় প্রতিবাদ করলেই জনসম্মুখে মারধর, চিংড়ী ঘের দখল, ঘেরের মাছ লুট, গরিবের সরকারী খাদ্য সহায়তা অত্মসাত, মুক্তিযোদ্ধার ঘরে আগুন দেয়া সহ ভাই মিজান শেখ সহ দলবল নিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে জিয়ার শেখ। জিয়ার শেখ ও মিজান শেখ সুন্দরবন ২নং ওয়ার্ড বাশতলা গ্রামের আব্দুল্লহ শেখ’র ছেলে।

এর মধ্যে এক অসহায় নারীর জোর পুর্বক একটি চিংড়ী ঘের দখলে বাধা দেয়ায় বৃদ্ধ নারী-পুরুষ সহ ৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় গত ২৪ মার্চ জিয়ার শেখ, মিজান শেখ সহ আরো ৫/৭ জনের নামে মোংলা থানায় মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় আসামী হয়েও সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং এলাকার নিরিহ মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

তার বিরুদ্ধে এমন ন্যাক্কারজনক বহু ঘটনার বিষয় স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দদের কাছে এলাকাবাসী অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তাই সুষ্ঠ বিচারের দাবীতে নারী-পুরুষরা রমজান মাসে দুপুরের রৌদ্র মাথায় নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন পালন করতে বাধ্য হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সন্ত্রাসী জিয়ার শেখকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পদ থেকে বহিস্কার, দ্রুত গ্রেপ্তার ও তার অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন পালন করা স্থানীয় বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা। এসময় সংবাদকর্মীদের কাছে ভুক্তভোগী অনেকেই তার হাতে অত্যাচার আর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন।

মোংলায় জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
মোংলায় জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

এ ব্যাপারে ২নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি অভিযুক্ত জিয়ার শেখ জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা মিথ্যা। কোন ঘের দখল বা লুট আমি করিনি। আমার জমি অন্যেরা দখল করে রেখেছিল, সেই জমিতে আমি মাছ ছেড়ে ঘের করছি। দলীয় ভাবে কারণ দর্শানো নেটিশ পেয়েছি, দু’একদিনের মধ্যে জাবাব দেব। তবে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, জিয়ার শেখ সুন্দরবন ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। কিন্ত জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নাম ব্যাবহার করে ঘের দখল, লুটপাট ও নিরিহ মানুষদের মারধর করবে এটা মেনে নেবো না। তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে যা বিভাগ ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের কাছে জানানো হয়েছে। আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, জিয়ার শেখকে দল থেকে বহিস্কার করার ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলমান।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও মোংলা-রামপাল সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক কামরুল ইসলাম গোরা বলেন, জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে এলাকা থেকে বহু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সুন্দরবন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি/সাধারণ সম্পাককে বলা হয়েছে জিয়ার শেখকে দ্রুত দল থেকে বহিস্কার করার জন্য। তারাই ব্যাবস্থা নিচ্ছে।

মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আনিসুর রহমান জানান, জিয়ার শেখ ও তার ভাই মিজান শেখ সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার হওয়ার পর পরই সে আত্মগোপনে রয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান আছে।

শেয়ার করুন

মোংলায় জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

সময় ০৫:৪৭:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

মোংলায় সুন্দরবন ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জিয়ার শেখ’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে এলাকার বিএনপি কর্মী সমর্থক নারী-পুরুষ ও শিশুরা। তার অত্যাচার-নির্যাতন, ঘের দখল লুটপাট, মারধর, গরিবের সরকারী সহায়তা আত্মসাত ও এলাকায় তার সন্ত্রাসী কর্মকন্ডে অতিষ্ট হয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২ টার দিকে সুন্দরবন ইউনিয়নের বুরবুড়িয়া স্কুলের সামনের রাস্তায় নেমে এ কর্মসুচি পালন করে চিংড়ী ঘের মালিক ও তার সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতনের স্বীকার ভুক্তভোগীরা। এসময় জিয়ার শেখকে জাতীয়তাবদী দল বিএনপি থেকে বহিস্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানানো হয়।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানায়, জিয়ার শেখ এক সময়ে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে সে সময়ও মানুষকে অহেতুক হয়রানী, মারধর ও জোর পুর্বক চিংড়ি মাছের ঘের লুটপাট করে আসছিল। আবার গত ৫ আগষ্ট আ’লীগ সরকার পতনের পর নব্য বিএনপি সেজে কৌশলে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দরের সাথে আঁতাত করে সুন্দরবন ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়। আর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হওয়ার পরই শুরু হয় তার অত্যাচার-নির্যাতনের কলা কৌশল। সে এলাকার নিরিহ মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার নির্যাতন, তার কথায় প্রতিবাদ করলেই জনসম্মুখে মারধর, চিংড়ী ঘের দখল, ঘেরের মাছ লুট, গরিবের সরকারী খাদ্য সহায়তা অত্মসাত, মুক্তিযোদ্ধার ঘরে আগুন দেয়া সহ ভাই মিজান শেখ সহ দলবল নিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে জিয়ার শেখ। জিয়ার শেখ ও মিজান শেখ সুন্দরবন ২নং ওয়ার্ড বাশতলা গ্রামের আব্দুল্লহ শেখ’র ছেলে।

এর মধ্যে এক অসহায় নারীর জোর পুর্বক একটি চিংড়ী ঘের দখলে বাধা দেয়ায় বৃদ্ধ নারী-পুরুষ সহ ৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় গত ২৪ মার্চ জিয়ার শেখ, মিজান শেখ সহ আরো ৫/৭ জনের নামে মোংলা থানায় মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় আসামী হয়েও সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং এলাকার নিরিহ মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

তার বিরুদ্ধে এমন ন্যাক্কারজনক বহু ঘটনার বিষয় স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দদের কাছে এলাকাবাসী অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তাই সুষ্ঠ বিচারের দাবীতে নারী-পুরুষরা রমজান মাসে দুপুরের রৌদ্র মাথায় নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন পালন করতে বাধ্য হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সন্ত্রাসী জিয়ার শেখকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পদ থেকে বহিস্কার, দ্রুত গ্রেপ্তার ও তার অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন পালন করা স্থানীয় বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা। এসময় সংবাদকর্মীদের কাছে ভুক্তভোগী অনেকেই তার হাতে অত্যাচার আর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন।

মোংলায় জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
মোংলায় জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

এ ব্যাপারে ২নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি অভিযুক্ত জিয়ার শেখ জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা মিথ্যা। কোন ঘের দখল বা লুট আমি করিনি। আমার জমি অন্যেরা দখল করে রেখেছিল, সেই জমিতে আমি মাছ ছেড়ে ঘের করছি। দলীয় ভাবে কারণ দর্শানো নেটিশ পেয়েছি, দু’একদিনের মধ্যে জাবাব দেব। তবে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, জিয়ার শেখ সুন্দরবন ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। কিন্ত জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নাম ব্যাবহার করে ঘের দখল, লুটপাট ও নিরিহ মানুষদের মারধর করবে এটা মেনে নেবো না। তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে যা বিভাগ ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের কাছে জানানো হয়েছে। আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, জিয়ার শেখকে দল থেকে বহিস্কার করার ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলমান।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও মোংলা-রামপাল সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক কামরুল ইসলাম গোরা বলেন, জিয়ার শেখের বিরুদ্ধে এলাকা থেকে বহু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সুন্দরবন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি/সাধারণ সম্পাককে বলা হয়েছে জিয়ার শেখকে দ্রুত দল থেকে বহিস্কার করার জন্য। তারাই ব্যাবস্থা নিচ্ছে।

মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আনিসুর রহমান জানান, জিয়ার শেখ ও তার ভাই মিজান শেখ সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার হওয়ার পর পরই সে আত্মগোপনে রয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান আছে।