মামলা থেকেও মুক্তি চান আয়নাঘরের ভুক্তভোগীরা

- সময় ০৯:৫৯:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 41
একে একে মুখ খুলছেন আয়নাঘরের ভুক্তভোগীরা। বিনাদোষে গুম, নির্মম নির্যাতন, সাজানো মামলা—এই দুঃসহ অভিজ্ঞতা এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে অনেককে। শুধু নির্যাতনের বিচারই নয়, ভোগান্তির কারণ হয়ে থাকা মিথ্যা মামলাগুলো থেকেও মুক্তি চান তারা।
২০১৫ সালের ৬ মার্চ। ছাত্রদলের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন দুই কর্মীর সঙ্গে দেখা করতে যান ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে। সেখানে সিভিল পোশাকে থাকা র্যাবের দুই সদস্য তুলে নেন তাকে ও তার দুই সহযোগীকে। শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন।
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে খোকন জানান, তাকে ইনজেকশন দেওয়া হতো, মুখে ঢেলে দেওয়া হতো লিকুইড জাতীয় ওষুধ। এরপর সাজানো হতো নাটক—সামনে রাখা হতো বোমা, পেট্রল বোমা, অস্ত্র। বারবার স্থান পরিবর্তনের পর তিন মাস পর তাকে ফরিদপুরে নিয়ে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়।
রাজনীতির সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না মোহাম্মদ ফয়েজের, তবু তাকেও হতে হয় আয়নাঘরের শিকার। ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগের দিন, যাত্রাবাড়ী থেকে ডিজিএফআই তুলে নেয় তাকে ও তার চার সহপাঠীকে। একজন সাবেক শিবির কর্মীর কাছে পড়াশোনা করার অপরাধে তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় জঙ্গি তকমা।
ফয়েজ জানান, ৭২ দিন ভয়াবহ নির্যাতনের পর নতুন পাঞ্জাবি পরিয়ে, মুখ বেঁধে, হাতে কিছু বই দিয়ে অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর র্যাবের কাছে হস্তান্তর করে তাদের বিরুদ্ধে সাজানো হয় জঙ্গি মামলা। সে মামলায় ফয়েজকে কারাগারে কাটাতে হয় দুই বছর।
অনেক আলামত নষ্ট হয়ে গেলেও আয়নাঘরের সত্য উন্মোচন এখনও সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. উমর ফারুক বলেন, “যদি সুষ্ঠু তদন্ত হয়, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা যায় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে আয়নাঘরের মতো ভয়ংকর অধ্যায় থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।”
স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পর, ৫ আগস্টের পর থেকে, একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছেন আয়নাঘরের ভুক্তভোগীরা। দীর্ঘদিন চাপা থাকা ভয়াবহ সত্য এখন প্রকাশ্যে আসছে।
শেয়ার করুন
-
সর্বশেষ
-
সর্বাধিক
Devoloped By: InnoSoln Limited