বিশ্বযুদ্ধ ঠেকাতে ট্রাম্পের ইচ্ছাকে স্বাগত জানাই
- সময় ১০:১১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
- / 31
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত বলে জানিয়েছেন। সোমবার তিনি এই মন্তব্য করেছেন। পুতিন আশা প্রকাশ করেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে যেকোনো মীমাংসা ‘স্থায়ী শান্তি’ নিশ্চিত করবে।
ট্রাম্প গত বছর বলেছিলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত ‘মীমাংসার পথে’ এবং ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ এড়াতে তিনি মস্কো এবং কিয়েভ উভয়ের সঙ্গেই কথা বলবেন।
পুতিন জানান, তিনি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ রোধ করার জন্য ট্রাম্পের ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এই মনোভাবকে স্বাগত জানাই এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানাই।’
আজ সোমবার ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার এবং প্রায় তিন বছরের সংঘাতের দ্রুত অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
ট্রাম্পের শপথ গ্রহনের আগে এক টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে পুতিন বলেন, ‘আসন্ন শপথ গ্রহণের জন্য রিপাবলিকানকে অভিনন্দন। যুদ্ধ পরিস্থিতি মীমাংসার ক্ষেত্রে আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, এর লক্ষ্য একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি নয়… বরং সকল মানুষের বৈধ স্বার্থ ও শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে একটি স্থায়ী শান্তি হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই রাশিয়ার স্বার্থের জন্য রাশিয়ার জনগণের স্বার্থের জন্য লড়াই করব।’
শপথ গ্রহণের পর দেয়া বক্তব্য পানামা খাল প্রসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘ এটা এমন একটা বোকা উপহার, যা আমাদের কখনো তৈরি করাই উচিত হয়নি’। পানামা খাল চীনারা পরিচালনা করছে বলে ভুল অভিযোগ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
”আমরা এটা চীনকে দেইনি। আমরা আবার এটা ফিরিয়ে নেবো,” বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এই মাসের শুরুর দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প একই দাবি করেছিলেন। সেই সময় সামরিক অভিযানের সম্ভাবনার কথাও তিনি উড়িয়ে দেননি।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে, তার ক্ষমতা গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমেরিকার স্বর্ণযুগে পা দিয়েছে।
“আমেরিকার স্বর্ণযুগ এখনই শুরু হয়েছে,” শপথের পর দেওয়া ভাষণে বলেন মি. ট্রাম্প।
‘এখন থেকে সামনের দিনগুলোয় আমাদের দেশ আরো সমৃদ্ধ আর সম্মানজনক অবস্থানে উঠে আসবে। আমার একমাত্র লক্ষ্য হবে, আমেরিকা ফার্স্ট।, বলেন তিনি।
ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার করেন ট্রাম্প। আমাদের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার করা হবে, আমাদের নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করা হবে, পুনরায় ন্যায়বিচার ফিরিয়ে আনা হবে।
আমরা একটি গর্বিত, সমৃদ্ধশালী ও স্বাধীন জাতি তৈরি করার লক্ষ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিবো, বলেন মি. ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারি করতে যাচ্ছেন।
তার মধ্যে রয়েছে, আমেরিকার দক্ষিণ সীমান্তে, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করবেন।
অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সাথে যে ‘লাখ লাখ অপরাধী’ অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে, তারা যেখান থেকে এসেছে, সেখানে ফেরত পাঠানো হবে।
সেই সাথে তার রিমেইন ইন মেক্সিকো বা ‘মেক্সিকোতেই থাকো’ নীতি তিনি পুনরায় কার্যকর করা হবে। সীমান্ত এলাকায় আরো সৈনিক ও জনবল পাঠানো হবে বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।
মাদক চক্র বা কার্টেলগুলোকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করা হবে এসব নির্বাহী আদেশে।
‘এলিয়েনস এনিমিস অ্যাক্ট অব ১৭৯৮’ পুনর্বহাল করা হবে, যাতে কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্যগুলো ‘যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বিদেশি গ্যাংগুলো’ দমনে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে পারে।
শপথ গ্রহণের দিনটিকে, ২০শে জানুয়ারি ২০২৫কে তিনি ‘মুক্তির দিন’ বলে বর্ণনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডােনাল্ড ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে অন্যদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তাকে বেশ বিমর্ষ দেখাচ্ছিলো।
একইভাবে মনমরা হয়ে বসেছিলেন নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ও পরাজিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমালা হ্যারিসকে।
অন্যদিকে, নিজের ভাষণে বাইডেন প্রশাসনের নীতি ও নানান পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন মি. ট্রাম্প।