ঢাকা ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদায় নিচ্ছেন শিক্ষাবন্ধু অধ্যক্ষ ক্যাথিংঅং

এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, কক্সবাজার
  • সময় ১১:৫৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 80

বিদায় নিচ্ছেন শিক্ষাবন্ধু অধ্যক্ষ ক্যাথিংঅং

কক্সবাজারে উচ্চ শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সিটি কলেজ তরুণ প্রজন্মের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের স্বাক্ষর রেখেছেন। একাধিকবার জাতীয় ও স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই কাংখিত সফলতার পেছনে ছিলেন একজন ডায়নামিক অদম্য সাহসী যোদ্ধ। তাঁর নাম অধ্যক্ষ ক্যাথিং অং।এই নামটি দীঁঘদিন কক্সবাজারের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে জন্ম জন্মান্তরে।তবু ও তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা,অনিয়ম, দূর্নীতির অভিযোগ পিছু ছাড়েনি।এই মানুষটির আগামী ১৫ জানুয়ারী ২৫ বছর পর শেষ কর্মদিবস সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।তাঁর বিদায় বেলায় বর্তমান ও প্রাক্তন অজস্র শিক্ষার্থী, অভিভাক,শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী শোকাভিভূত।

ইতিমধ্যে কক্সবাজারের সচেতন নাগরিকেরা তাঁকে শিক্ষা বন্ধু হিসাবে উপাধিতে ভূষিত করেছেন। কক্সবাজারের সিভিল সোসাইটিজ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল কাদের চৌধুরী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন,এমন আপাদমস্তক শিক্ষা সেবকের জুড়িমেলা ভার।তিনি সহজে সকলের মন জয় করতে পারতেন।সর্বজন গ্রহনযোগ্য তিনি।আমরা আশা করছি তাঁর অবর্তমানে এই সাজানো গোছানো ডিজিটালাস কক্সবাজারের সিটি কলেজে নতুন একজন আরো দক্ষ আধুনিক সৎ অধ্যক্ষ বিদায়ী অধ্যক্ষের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

কক্সবাজার সিটি কলেজ
কক্সবাজার সিটি কলেজ

কক্সবাজারকে বিশ্বপরিমন্ডলে পরিচিত করার মানসে, বিশ্ব নেতৃত্ব তৈরির অঙ্গীকার নিয়ে আজ থেকে প্রায় ৩২ বছর আগে, শিক্ষার আলো জ্বালাতে বেশ কয়েকজন মানব হিতোষী ব্যক্তিবর্গের নিরলস প্রচেষ্টায় ১৯৯৩ সালের ২৯ জুলাই শহরের আলীরজাহালে কক্সবাজার সিটি কলেজের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল।

শুরুতে ছোট দু’ছালা ঘরে মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু করা কক্সবাজার সিটি কলেজ আজ ৫টি বিশাল ভবন প্রায় ৮ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থী, ১৫৩ জন শিক্ষক, নিয়মিত উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যক্রম বাদে ১৩টি বিষয়ে অনার্স, ৬ বিষয়ে মার্স্টাস নিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত হয়েছে। পর্যটন নগরী হলেও শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা কক্সবাজার জেলাকে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত উচ্চ শিক্ষায় এগিয়ে নিচ্ছে জেলার এ আলোকিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটি গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যেতে থাকলেও মূলতঃ কলেজের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয় শিক্ষাবন্ধু খ্যাত বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ক্য থিং অং যখন দায়িত্ব নেন তখন অর্থাৎ ২০০০ সাল পরবর্তীতে।

অধ্যক্ষ ক্য থিং অং তাঁর দক্ষতা, বিচক্ষণতা, দৃঢ়চেতা মনোবল নিয়ে নিজের সবটুকু দিয়ে সেই ছোট্ট প্রতিষ্ঠানকে আজ দেশের অন্যতম উচ্চ বিদ্যাপীঠে পরিণত করেছেন এবং করে যাচ্ছেন । তারই হাত ধরে কক্সবাজার সিটি কলেজ প্রথমে স্নাতক পরে স্নাতকোত্তর কলেজে পরিণত হয়।

২০০৯ সালে অধ্যক্ষ ক্য থিং অং য়ের সহধর্মিণী সাবেক সাংসদ অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন প্রথম বারের মতো জিবির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে কলেজটি প্রবেশ করে ডিজিটাল যুগে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি , বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদের সহযোগিতায় উচ্চ শিক্ষা প্রসারে অধ্যক্ষ ক্য থিং অং “সমাজবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা” বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করার মধ্যেদিয়ে কলেজকে স্নাতক (সম্মান) স্তরে উন্নীত করেন। সেই থেকে যাত্রা শুরু, আর পিছনে ফিরে থাকাতে হয়নি। এক এক করে বর্তমান সময়ের আলোচিত “ট্যূরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং” এ দুটি বিষয়ে “প্রফেশনাল অনার্স” কোর্স এবং পদার্থবিজ্ঞান, বায়োকেমেস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজী, বাংলা, ইংরেজি, দর্শন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্ররবিজ্ঞান, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিংসহ মোট ১৩টি বিষয়ে রিগুলার অনার্স, ৯ টি বিষয়ে (সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্ররবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, বাংলা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এবং ট্যূরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট) প্রিলিসহ মাস্টার্স, থিয়েটার স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একমাত্র কলেজ), স্নাতক পাস কোর্সে (বিএ, বিএসএস, বিবিএ), উচ্চ মাধ্যমিকে ( বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা), কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ব্যবসায় ম্যানেজমেন্ট(বিএম), বাউবি – স্নাতক পাস কোর্সে (বিএ, বিএসএস), ৫টি বিষয়ে (এইচআরএম, তথ্য ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং) স্নাতক সম্মান কোর্স এবং এইচএসসি লেভেলে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় পাঠদান করানো হয়।

কক্সবাজার সিটি কলেজ
কক্সবাজার সিটি কলেজ

গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক সুমন্ত চন্দ্র রায় বলেন, ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ বর্তমান অধ্যক্ষ যোগদান করার পর কলেজের আমুল পরিবর্তন হয়েছে। সেই সময়ের সিটি কলেজ আর আজকের সিটি কলেজ আসমান জমিন পার্থক্য। মনে হচ্ছে, এটা স্বর্ণযুগ।

দেশের শীর্ষস্থানীয় কলেজের মতো উন্নত পাঠাগার(প্রায় ২০ হাজার বই), প্রত্যেকটি বিভাগে নিজস্ব সেমিনার, পদার্থবিজ্ঞান ও বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজী, ( আইসিটি ল্যাব ৪ টি) ও সিএসই বিষয়ে অত্যাধুনিক উন্নত বিজ্ঞানাগারে স্বয়ংসম্পূর্ণ কক্সবাজার সিটি কলেজ। এছাড়াও কলেজের অবকাঠামোর কথা যদি বলতে হয় সে ক্ষেত্রে দুটি ছয় তলা বিশিষ্ট ভবন, একটি চারতলা বিশিষ্ট ভবন, একটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন, একটি দুইতলা বিশিষ্ট লাইব্রেরী ভবন, দুটি টিনশেড একতলা ভবন, মনোরম সৌন্দর্য্য বেষ্টিত শহীদ মিনার সমৃদ্ধ কক্সবাজার সিটি কলেজ।

এছাড়াও কলেজের প্রায় প্রতিটি ক্লাসরুম, ল্যাব এবং বিভগীয় অফিস রুম শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং ২৫টি শ্রেণিকক্ষে টিভি সিস্টেমের ডিজিটাল বোর্ডে (প্রতিটি ৬০ ইঞ্চি) সমৃদ্ধ অত্যাধুনিক এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

কক্সবাজার সিটি কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস। এটি শতাধিক (১০৪) সিসি ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেন স্বয়ং অধ্যক্ষ। কলেজে পাঠদানের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ যোগাতে অধ্যক্ষ সব সময় উপস্থিত থাকেন।

কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী জানান , সিটি কলেজের ক্যাম্পাসে ঢুকলে যে কারো মন ভাল হয়ে যাবে। এখানে শহীদ মিনার সহ সুন্দর পরিপাটি ফুলের বাগান এবং আধুনিক ক্লাস রুম সব কিছুই বেশ গোছানো। এছাড়া অনেক কলেজে শুনি নিয়মিত ক্লাস হয়না। কিন্তু সিটি কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয়। এবং শিক্ষকরা ক্লাসেই পাঠ আদায় করে থাকেন । মোট কথা এই কলেজের গুনগত মান বেশ ভাল। সব চেয়ে বড় কথা বাড়ির কাছেই অনার্স মাস্টার্স শেষ করতে পারা এটা ছোট ব্যাপার না। যেমন আমাদের নিজের ভাই বোনেরা চট্টগ্রামে গিয়ে মাস্টার্স শেষ করেছে আর এখন আমরা ঘরে বসে শেষ করতে পারবো।

অধ্যাপক হাসেম উদ্দিন বলেন, এতবড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ চট্টগ্রামে আর আছে বলে আমার মনে হয় না। এই কলেজ না থাকলে কক্সবাজারের এত বিপুল পরিমান শিক্ষার্থী কোথায় যেত? নিশ্চয় তাদের বেশি টাকা খরচ করে ঢাকা চট্টগ্রাম যেতে হতো। তাই সিটি কলেজ কক্সবাজারবাসীর জন্য আর্শিবাদ। আর আমি এই কলেজের একজন হতে পেরে গর্বিত।অথচ আমাদের অধ্যক্ষ আগামী ১৫ জানুয়ারী তাঁর কর্মস্থল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে বিদায় নিচ্ছেন।তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হচ্ছেন তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা নাটকীয়তা।কিছু শিক্ষক বিনা অজুহাতে বর্তমান অধ্যক্ষকে নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে বিদায়বেলায় তাঁর সুনাম নষ্ট করার জন্য আদা-জল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।

টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের এসোসিয়েট প্রফেসর মঈনুল হাসান পলাশ জানান , আসলে অনেক ব্যাক্তির গুনাগুনের উপর প্রতিষ্ঠানের সফলতা এবং উন্নতি নির্ভর করে। আমার মতে কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ ক্য থিং অং একজন আদর্শ শিক্ষক এবং দক্ষ পরিচালক। তার চিন্তার বহিঃপ্রকাশ হিসাবেই সব কিছু খুবই সুন্দরভাবে গড়ে উঠেছে। আমি অনেক অধ্যক্ষকে দেখেছি কলেজ ছাড়াই আরো অনেক কিছুর সাথে সম্পৃক্ত হতে । কিন্তু অধ্যক্ষ ক্য থিং অং কলেজ ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করতে দেখিনি।

কলেজের সাবেক গভর্ণিং বডির সভাপতি ও দাতা সদস্য এডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, এক সময় সিটি কলেজ একটি ছোট ভবন এবং সামান্য শিক্ষক শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয়। ২০০০ সালের পর ধারাবাহিক উন্নয়নে সিটি কলেজ এখন লাখো মানুষের স্বপ্নের দিশারি হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
বর্তমান অধ্যক্ষ সহ সকল শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেস্টা আছে বলেই সিটি কলেজ দ্রুত উন্নতির শিখরে পৌছেছে।কারণ আমি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি থাকা অবস্থায় ক্যথিং অং কে একজন সাদামনের সৎ লোক হিসাবে দেখেছি। এছাড়া তিনি প্রচার বিমুখ জ্ঞানগর্ভ জীবন্ত কম্পিউটার। এক কথায় তিনি একজন বুদ্ধিজীবী শিক্ষাবিদ।

কক্সবাজার সিটি কলেজ
কক্সবাজার সিটি কলেজ

বর্তমান নতুন গভর্নিং বডির সভাপতি মহেশখালী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন বলেন, বাল্যকাল থেকে সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাথিং অং কে দেখে আসছি। তিনি যেমন সৎ তেমনি অমায়িক। নিরহংকার নির্ভেজাল কক্সবাজার শহরের সম্ভ্রান্ত রাখাইন পরিবারের সন্তান তিনি। আমার দেখামতে সচ্ছ্তা দক্ষতার সাথে সিটি কলেজকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি।যারা জেনে বোঝে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন তা সম্পূর্ণ অসত্য। কারণ অনিয়ম,দূর্নীতি আমি দেখিনি।যাবার বেলায় তাঁর নিরলস পরিশ্রম ও সততার মূল্যায়ন করতে যদি আমরা ব্যর্থ হই, তা হলে তাঁর প্রতি বড়ই অবিচার করা হবে।

যিনি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সিটি কলেজর হাল ধরে সফলভাবে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন তিনি অধ্যক্ষ ক্যাথিংঅং।তাঁকে যখন প্রশ্ন করি আপনি আগামী ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত এ কলেজের দায়িত্বে আছেন।এর মধ্যে আপনার বিরুদ্ধে অনিয়ম,দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন। উত্তরে তিনি বলেন,আমি ২৫ বছর পরীক্ষা দিয়েছি।সাদা খাতা জমা দিই নাই। ফলাফল যা হবে আমি এতেই সন্তুষ্ট। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে বাধ্য হচ্ছি আমি কোন অপরাধ, অনিয়ম ও দূর্নীতি করি নাই। ফলে আমার কোন ভয় নাই। এসব অভিযোগ মনগড়া ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

অভিযোগকারী এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,তিনি বিভিন্ন সময় শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছেন। শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রেখেছেন। সর্বশেষ যাবার বেলায় পছন্দসই অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

শেয়ার করুন

বিদায় নিচ্ছেন শিক্ষাবন্ধু অধ্যক্ষ ক্যাথিংঅং

সময় ১১:৫৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

কক্সবাজারে উচ্চ শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সিটি কলেজ তরুণ প্রজন্মের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের স্বাক্ষর রেখেছেন। একাধিকবার জাতীয় ও স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই কাংখিত সফলতার পেছনে ছিলেন একজন ডায়নামিক অদম্য সাহসী যোদ্ধ। তাঁর নাম অধ্যক্ষ ক্যাথিং অং।এই নামটি দীঁঘদিন কক্সবাজারের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে জন্ম জন্মান্তরে।তবু ও তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা,অনিয়ম, দূর্নীতির অভিযোগ পিছু ছাড়েনি।এই মানুষটির আগামী ১৫ জানুয়ারী ২৫ বছর পর শেষ কর্মদিবস সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।তাঁর বিদায় বেলায় বর্তমান ও প্রাক্তন অজস্র শিক্ষার্থী, অভিভাক,শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী শোকাভিভূত।

ইতিমধ্যে কক্সবাজারের সচেতন নাগরিকেরা তাঁকে শিক্ষা বন্ধু হিসাবে উপাধিতে ভূষিত করেছেন। কক্সবাজারের সিভিল সোসাইটিজ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল কাদের চৌধুরী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন,এমন আপাদমস্তক শিক্ষা সেবকের জুড়িমেলা ভার।তিনি সহজে সকলের মন জয় করতে পারতেন।সর্বজন গ্রহনযোগ্য তিনি।আমরা আশা করছি তাঁর অবর্তমানে এই সাজানো গোছানো ডিজিটালাস কক্সবাজারের সিটি কলেজে নতুন একজন আরো দক্ষ আধুনিক সৎ অধ্যক্ষ বিদায়ী অধ্যক্ষের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

কক্সবাজার সিটি কলেজ
কক্সবাজার সিটি কলেজ

কক্সবাজারকে বিশ্বপরিমন্ডলে পরিচিত করার মানসে, বিশ্ব নেতৃত্ব তৈরির অঙ্গীকার নিয়ে আজ থেকে প্রায় ৩২ বছর আগে, শিক্ষার আলো জ্বালাতে বেশ কয়েকজন মানব হিতোষী ব্যক্তিবর্গের নিরলস প্রচেষ্টায় ১৯৯৩ সালের ২৯ জুলাই শহরের আলীরজাহালে কক্সবাজার সিটি কলেজের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল।

শুরুতে ছোট দু’ছালা ঘরে মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু করা কক্সবাজার সিটি কলেজ আজ ৫টি বিশাল ভবন প্রায় ৮ হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থী, ১৫৩ জন শিক্ষক, নিয়মিত উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যক্রম বাদে ১৩টি বিষয়ে অনার্স, ৬ বিষয়ে মার্স্টাস নিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত হয়েছে। পর্যটন নগরী হলেও শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা কক্সবাজার জেলাকে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত উচ্চ শিক্ষায় এগিয়ে নিচ্ছে জেলার এ আলোকিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটি গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যেতে থাকলেও মূলতঃ কলেজের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয় শিক্ষাবন্ধু খ্যাত বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ক্য থিং অং যখন দায়িত্ব নেন তখন অর্থাৎ ২০০০ সাল পরবর্তীতে।

অধ্যক্ষ ক্য থিং অং তাঁর দক্ষতা, বিচক্ষণতা, দৃঢ়চেতা মনোবল নিয়ে নিজের সবটুকু দিয়ে সেই ছোট্ট প্রতিষ্ঠানকে আজ দেশের অন্যতম উচ্চ বিদ্যাপীঠে পরিণত করেছেন এবং করে যাচ্ছেন । তারই হাত ধরে কক্সবাজার সিটি কলেজ প্রথমে স্নাতক পরে স্নাতকোত্তর কলেজে পরিণত হয়।

২০০৯ সালে অধ্যক্ষ ক্য থিং অং য়ের সহধর্মিণী সাবেক সাংসদ অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন প্রথম বারের মতো জিবির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে কলেজটি প্রবেশ করে ডিজিটাল যুগে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি , বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদের সহযোগিতায় উচ্চ শিক্ষা প্রসারে অধ্যক্ষ ক্য থিং অং “সমাজবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা” বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করার মধ্যেদিয়ে কলেজকে স্নাতক (সম্মান) স্তরে উন্নীত করেন। সেই থেকে যাত্রা শুরু, আর পিছনে ফিরে থাকাতে হয়নি। এক এক করে বর্তমান সময়ের আলোচিত “ট্যূরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং” এ দুটি বিষয়ে “প্রফেশনাল অনার্স” কোর্স এবং পদার্থবিজ্ঞান, বায়োকেমেস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজী, বাংলা, ইংরেজি, দর্শন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্ররবিজ্ঞান, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিংসহ মোট ১৩টি বিষয়ে রিগুলার অনার্স, ৯ টি বিষয়ে (সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্ররবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, বাংলা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এবং ট্যূরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট) প্রিলিসহ মাস্টার্স, থিয়েটার স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একমাত্র কলেজ), স্নাতক পাস কোর্সে (বিএ, বিএসএস, বিবিএ), উচ্চ মাধ্যমিকে ( বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা), কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ব্যবসায় ম্যানেজমেন্ট(বিএম), বাউবি – স্নাতক পাস কোর্সে (বিএ, বিএসএস), ৫টি বিষয়ে (এইচআরএম, তথ্য ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং) স্নাতক সম্মান কোর্স এবং এইচএসসি লেভেলে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় পাঠদান করানো হয়।

কক্সবাজার সিটি কলেজ
কক্সবাজার সিটি কলেজ

গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক সুমন্ত চন্দ্র রায় বলেন, ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ বর্তমান অধ্যক্ষ যোগদান করার পর কলেজের আমুল পরিবর্তন হয়েছে। সেই সময়ের সিটি কলেজ আর আজকের সিটি কলেজ আসমান জমিন পার্থক্য। মনে হচ্ছে, এটা স্বর্ণযুগ।

দেশের শীর্ষস্থানীয় কলেজের মতো উন্নত পাঠাগার(প্রায় ২০ হাজার বই), প্রত্যেকটি বিভাগে নিজস্ব সেমিনার, পদার্থবিজ্ঞান ও বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজী, ( আইসিটি ল্যাব ৪ টি) ও সিএসই বিষয়ে অত্যাধুনিক উন্নত বিজ্ঞানাগারে স্বয়ংসম্পূর্ণ কক্সবাজার সিটি কলেজ। এছাড়াও কলেজের অবকাঠামোর কথা যদি বলতে হয় সে ক্ষেত্রে দুটি ছয় তলা বিশিষ্ট ভবন, একটি চারতলা বিশিষ্ট ভবন, একটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন, একটি দুইতলা বিশিষ্ট লাইব্রেরী ভবন, দুটি টিনশেড একতলা ভবন, মনোরম সৌন্দর্য্য বেষ্টিত শহীদ মিনার সমৃদ্ধ কক্সবাজার সিটি কলেজ।

এছাড়াও কলেজের প্রায় প্রতিটি ক্লাসরুম, ল্যাব এবং বিভগীয় অফিস রুম শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এবং ২৫টি শ্রেণিকক্ষে টিভি সিস্টেমের ডিজিটাল বোর্ডে (প্রতিটি ৬০ ইঞ্চি) সমৃদ্ধ অত্যাধুনিক এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

কক্সবাজার সিটি কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস। এটি শতাধিক (১০৪) সিসি ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেন স্বয়ং অধ্যক্ষ। কলেজে পাঠদানের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ যোগাতে অধ্যক্ষ সব সময় উপস্থিত থাকেন।

কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী জানান , সিটি কলেজের ক্যাম্পাসে ঢুকলে যে কারো মন ভাল হয়ে যাবে। এখানে শহীদ মিনার সহ সুন্দর পরিপাটি ফুলের বাগান এবং আধুনিক ক্লাস রুম সব কিছুই বেশ গোছানো। এছাড়া অনেক কলেজে শুনি নিয়মিত ক্লাস হয়না। কিন্তু সিটি কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয়। এবং শিক্ষকরা ক্লাসেই পাঠ আদায় করে থাকেন । মোট কথা এই কলেজের গুনগত মান বেশ ভাল। সব চেয়ে বড় কথা বাড়ির কাছেই অনার্স মাস্টার্স শেষ করতে পারা এটা ছোট ব্যাপার না। যেমন আমাদের নিজের ভাই বোনেরা চট্টগ্রামে গিয়ে মাস্টার্স শেষ করেছে আর এখন আমরা ঘরে বসে শেষ করতে পারবো।

অধ্যাপক হাসেম উদ্দিন বলেন, এতবড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ চট্টগ্রামে আর আছে বলে আমার মনে হয় না। এই কলেজ না থাকলে কক্সবাজারের এত বিপুল পরিমান শিক্ষার্থী কোথায় যেত? নিশ্চয় তাদের বেশি টাকা খরচ করে ঢাকা চট্টগ্রাম যেতে হতো। তাই সিটি কলেজ কক্সবাজারবাসীর জন্য আর্শিবাদ। আর আমি এই কলেজের একজন হতে পেরে গর্বিত।অথচ আমাদের অধ্যক্ষ আগামী ১৫ জানুয়ারী তাঁর কর্মস্থল থেকে স্বাভাবিক নিয়মে বিদায় নিচ্ছেন।তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হচ্ছেন তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা নাটকীয়তা।কিছু শিক্ষক বিনা অজুহাতে বর্তমান অধ্যক্ষকে নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে বিদায়বেলায় তাঁর সুনাম নষ্ট করার জন্য আদা-জল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।

টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের এসোসিয়েট প্রফেসর মঈনুল হাসান পলাশ জানান , আসলে অনেক ব্যাক্তির গুনাগুনের উপর প্রতিষ্ঠানের সফলতা এবং উন্নতি নির্ভর করে। আমার মতে কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ ক্য থিং অং একজন আদর্শ শিক্ষক এবং দক্ষ পরিচালক। তার চিন্তার বহিঃপ্রকাশ হিসাবেই সব কিছু খুবই সুন্দরভাবে গড়ে উঠেছে। আমি অনেক অধ্যক্ষকে দেখেছি কলেজ ছাড়াই আরো অনেক কিছুর সাথে সম্পৃক্ত হতে । কিন্তু অধ্যক্ষ ক্য থিং অং কলেজ ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করতে দেখিনি।

কলেজের সাবেক গভর্ণিং বডির সভাপতি ও দাতা সদস্য এডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, এক সময় সিটি কলেজ একটি ছোট ভবন এবং সামান্য শিক্ষক শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয়। ২০০০ সালের পর ধারাবাহিক উন্নয়নে সিটি কলেজ এখন লাখো মানুষের স্বপ্নের দিশারি হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
বর্তমান অধ্যক্ষ সহ সকল শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেস্টা আছে বলেই সিটি কলেজ দ্রুত উন্নতির শিখরে পৌছেছে।কারণ আমি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি থাকা অবস্থায় ক্যথিং অং কে একজন সাদামনের সৎ লোক হিসাবে দেখেছি। এছাড়া তিনি প্রচার বিমুখ জ্ঞানগর্ভ জীবন্ত কম্পিউটার। এক কথায় তিনি একজন বুদ্ধিজীবী শিক্ষাবিদ।

কক্সবাজার সিটি কলেজ
কক্সবাজার সিটি কলেজ

বর্তমান নতুন গভর্নিং বডির সভাপতি মহেশখালী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন বলেন, বাল্যকাল থেকে সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাথিং অং কে দেখে আসছি। তিনি যেমন সৎ তেমনি অমায়িক। নিরহংকার নির্ভেজাল কক্সবাজার শহরের সম্ভ্রান্ত রাখাইন পরিবারের সন্তান তিনি। আমার দেখামতে সচ্ছ্তা দক্ষতার সাথে সিটি কলেজকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি।যারা জেনে বোঝে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন তা সম্পূর্ণ অসত্য। কারণ অনিয়ম,দূর্নীতি আমি দেখিনি।যাবার বেলায় তাঁর নিরলস পরিশ্রম ও সততার মূল্যায়ন করতে যদি আমরা ব্যর্থ হই, তা হলে তাঁর প্রতি বড়ই অবিচার করা হবে।

যিনি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সিটি কলেজর হাল ধরে সফলভাবে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন তিনি অধ্যক্ষ ক্যাথিংঅং।তাঁকে যখন প্রশ্ন করি আপনি আগামী ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত এ কলেজের দায়িত্বে আছেন।এর মধ্যে আপনার বিরুদ্ধে অনিয়ম,দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন। উত্তরে তিনি বলেন,আমি ২৫ বছর পরীক্ষা দিয়েছি।সাদা খাতা জমা দিই নাই। ফলাফল যা হবে আমি এতেই সন্তুষ্ট। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে বাধ্য হচ্ছি আমি কোন অপরাধ, অনিয়ম ও দূর্নীতি করি নাই। ফলে আমার কোন ভয় নাই। এসব অভিযোগ মনগড়া ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

অভিযোগকারী এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,তিনি বিভিন্ন সময় শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছেন। শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রেখেছেন। সর্বশেষ যাবার বেলায় পছন্দসই অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।