ঢাকা ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিতর্কিত বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্র নিয়ে আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • সময় ১০:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 31

বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্র

মধ্যপ্রাচ্যের বিতর্কিত বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্র তেল আবিব প্রকাশ করেছে । এক বিতর্কিত মানচিত্রে ফিলিস্তিন, জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবাননের বিশাল অংশ নিয়ে এই মানচিত্রকে তারা বলছে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল‘। ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়েই দেখা দিয়েছে নানামূখী শঙ্কা, এমনকি আগ্রাসী ইসরায়েলের ভূমিকা নিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথাও বলছেন কেউ কেউ।

এটি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সার্বভৌমত্বের সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই মানচিত্র কেবল একটি ভূখণ্ডগত দাবি নয়, বরং তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

ইসরায়েলের এই বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশের পরপরই তা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। নেটিজেনরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আন্তর্জাতিক মহলেও এই মানচিত্র নিয়ে উঠেছে তীব্র প্রতিবাদের ঝড়।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু-রুদেইনে এই মানচিত্রকে আন্তর্জাতিক আইন ও প্রস্তাবের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন।

বৃহত্তর ইসরায়েল
বৃহত্তর ইসরায়েল

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দখলদারি নীতি, অবৈধ বসতি স্থাপন এবং আল-আকসা মসজিদের অবমাননার ঘটনা আরও বৃদ্ধি পাবে।’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মানচিত্রকে ‘উস্কানিমূলক ও ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ জর্ডানের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করতে পারবে না। ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারের সুরক্ষায়ও এই ধরনের চরমপন্থি দাবি ব্যর্থ হবে। জর্ডান ইসরায়েলকে অবিলম্বে এই পদক্ষেপ বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছে।

গত ৮ জানুয়ারি সৌদি আরবও এই মানচিত্রকে প্রত্যাখ্যান করে নিন্দা জানিয়েছে। রিয়াদ বলেছে, ‘এই ধরনের চরমপন্থি দাবি ইসরায়েলের দখলদার মনোভাব প্রকাশ করে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাকে আরও বিপন্ন করবে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করবে।

সিরিয়া ও লেবাননের জনগণের মধ্যেও এই মানচিত্র নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা আরও বাড়াবে। এতে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে।

সৌদি আরব এবং জর্ডান উভয়েই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের এই আগ্রাসী পদক্ষেপের প্রতিরোধে এগিয়ে আসার জন্য। তারা জোর দিয়েছে, রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্ব এবং সীমানার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ওপর।

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রয়োজন সকল পক্ষের ন্যায়সঙ্গত দাবি এবং আঞ্চলিক সংহতি রক্ষা। ইসরায়েলের বিতর্কিত ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ মানচিত্র একটি সংকটের বার্তা দেয়। এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করে এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালায়।

শেয়ার করুন

বিতর্কিত বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্র নিয়ে আশঙ্কা

সময় ১০:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের বিতর্কিত বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্র তেল আবিব প্রকাশ করেছে । এক বিতর্কিত মানচিত্রে ফিলিস্তিন, জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবাননের বিশাল অংশ নিয়ে এই মানচিত্রকে তারা বলছে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল‘। ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়েই দেখা দিয়েছে নানামূখী শঙ্কা, এমনকি আগ্রাসী ইসরায়েলের ভূমিকা নিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথাও বলছেন কেউ কেউ।

এটি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সার্বভৌমত্বের সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই মানচিত্র কেবল একটি ভূখণ্ডগত দাবি নয়, বরং তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

ইসরায়েলের এই বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশের পরপরই তা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। নেটিজেনরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আন্তর্জাতিক মহলেও এই মানচিত্র নিয়ে উঠেছে তীব্র প্রতিবাদের ঝড়।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু-রুদেইনে এই মানচিত্রকে আন্তর্জাতিক আইন ও প্রস্তাবের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন।

বৃহত্তর ইসরায়েল
বৃহত্তর ইসরায়েল

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দখলদারি নীতি, অবৈধ বসতি স্থাপন এবং আল-আকসা মসজিদের অবমাননার ঘটনা আরও বৃদ্ধি পাবে।’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মানচিত্রকে ‘উস্কানিমূলক ও ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ জর্ডানের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করতে পারবে না। ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারের সুরক্ষায়ও এই ধরনের চরমপন্থি দাবি ব্যর্থ হবে। জর্ডান ইসরায়েলকে অবিলম্বে এই পদক্ষেপ বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছে।

গত ৮ জানুয়ারি সৌদি আরবও এই মানচিত্রকে প্রত্যাখ্যান করে নিন্দা জানিয়েছে। রিয়াদ বলেছে, ‘এই ধরনের চরমপন্থি দাবি ইসরায়েলের দখলদার মনোভাব প্রকাশ করে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাকে আরও বিপন্ন করবে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করবে।

সিরিয়া ও লেবাননের জনগণের মধ্যেও এই মানচিত্র নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা আরও বাড়াবে। এতে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে।

সৌদি আরব এবং জর্ডান উভয়েই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের এই আগ্রাসী পদক্ষেপের প্রতিরোধে এগিয়ে আসার জন্য। তারা জোর দিয়েছে, রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্ব এবং সীমানার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ওপর।

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রয়োজন সকল পক্ষের ন্যায়সঙ্গত দাবি এবং আঞ্চলিক সংহতি রক্ষা। ইসরায়েলের বিতর্কিত ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ মানচিত্র একটি সংকটের বার্তা দেয়। এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করে এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালায়।