ঢাকা ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ

বসুন্ধরা গ্রুপকে ৪৭০ একর জমি বরাদ্দে অনিয়ম

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • সময় ০৬:৩৮:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 25

বসুন্ধরা গ্রুপকে ৪৭০ একর জমি বরাদ্দে অনিয়ম

চট্টগ্রামে বসুন্ধরা গ্রুপকে ৪৭০ একর জমি বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে, বসুন্ধরাকে ওই জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে একটি রুলও জারি করেছেন আদালত।

একটি রিট আবেদনের শুনানিকালে আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের, বিচারপতি এম বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ ও রুল জারি করেন।

আদেশে ভূমি সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগের মহাপরিচালক ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে আদালতের নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদনও জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ

‘সমুদ্র সৈকতকে ডোবা দেখিয়ে বসুন্ধরাকে বরাদ্দ’ শিরোনামে গত বছরের ১০ অক্টোবর অনলাইন পোর্টাল বাংলা আউটলুকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ কাওসার গত বছরের ডিসেম্বরে হাইকোর্টে রিটটি দাখিল করেন।

রিটে জমি বরাদ্দের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং অভিযোগের তদন্তের আদেশ চাওয়া হয়।

আজ হাইকোর্ট আদেশ পাওয়ার পর আইনজীবী মোহাম্মদ কাওসার বলেন, ‘চট্টগ্রামের সমুদ্র সৈকতের বালুচর শ্রেণির জমিকে ডোবা দেখিয়ে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। এতে ১৮০ কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার।’

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভূমি মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম সৈকতের বালুচর শ্রেণির জমি দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী বসুন্ধরাকে বরাদ্দ করেছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার চর বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের তিনটি মৌজায় সৈকতের ৪৭০ একর জমি বরাদ্দ করে। বসুন্ধরা সেখানে পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য, তেল শোধনাগার, এলপিজি প্ল্যান্ট এবং একটি বন্দর টার্মিনাল নির্মাণ করতে চায়।

আর এই বরাদ্দ দিতে গিয়ে তড়িঘড়ি করে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ভূমি মন্ত্রণালয়। এই কারণে জায়গাটির বাজারমূল্যের তিনগুণ কম দামে পায় বসুন্ধরা গ্রুপ। মৌজা রেট অনুযায়ী বালুচর শ্রেণির (সৈকত) ৪৭০ একরের বর্তমান মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২৩৫ কোটি টাকা (২০১৭-১৮ সালের মৌজার মূল্য অনুযায়ী)। শ্রেণি পরিবর্তনের কারণে সেটা মাত্র প্রায় ৫৫ কোটি টাকায় দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া হয় বসুন্ধরাকে। আর ভূমির এ শ্রেণি পরিবর্তন করায় সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয় প্রায় ১৮০ কোটি টাকা।

আজ হাইকোর্টে আইনজীবী কাওসার নিজেই রিট আবেদনের শুনানি করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ, শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

শেয়ার করুন

অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ

বসুন্ধরা গ্রুপকে ৪৭০ একর জমি বরাদ্দে অনিয়ম

সময় ০৬:৩৮:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫

চট্টগ্রামে বসুন্ধরা গ্রুপকে ৪৭০ একর জমি বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে, বসুন্ধরাকে ওই জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে একটি রুলও জারি করেছেন আদালত।

একটি রিট আবেদনের শুনানিকালে আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের, বিচারপতি এম বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ ও রুল জারি করেন।

আদেশে ভূমি সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগের মহাপরিচালক ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে আদালতের নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদনও জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ

‘সমুদ্র সৈকতকে ডোবা দেখিয়ে বসুন্ধরাকে বরাদ্দ’ শিরোনামে গত বছরের ১০ অক্টোবর অনলাইন পোর্টাল বাংলা আউটলুকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ কাওসার গত বছরের ডিসেম্বরে হাইকোর্টে রিটটি দাখিল করেন।

রিটে জমি বরাদ্দের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং অভিযোগের তদন্তের আদেশ চাওয়া হয়।

আজ হাইকোর্ট আদেশ পাওয়ার পর আইনজীবী মোহাম্মদ কাওসার বলেন, ‘চট্টগ্রামের সমুদ্র সৈকতের বালুচর শ্রেণির জমিকে ডোবা দেখিয়ে দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। এতে ১৮০ কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার।’

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভূমি মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম সৈকতের বালুচর শ্রেণির জমি দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী বসুন্ধরাকে বরাদ্দ করেছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার চর বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের তিনটি মৌজায় সৈকতের ৪৭০ একর জমি বরাদ্দ করে। বসুন্ধরা সেখানে পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য, তেল শোধনাগার, এলপিজি প্ল্যান্ট এবং একটি বন্দর টার্মিনাল নির্মাণ করতে চায়।

আর এই বরাদ্দ দিতে গিয়ে তড়িঘড়ি করে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ভূমি মন্ত্রণালয়। এই কারণে জায়গাটির বাজারমূল্যের তিনগুণ কম দামে পায় বসুন্ধরা গ্রুপ। মৌজা রেট অনুযায়ী বালুচর শ্রেণির (সৈকত) ৪৭০ একরের বর্তমান মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২৩৫ কোটি টাকা (২০১৭-১৮ সালের মৌজার মূল্য অনুযায়ী)। শ্রেণি পরিবর্তনের কারণে সেটা মাত্র প্রায় ৫৫ কোটি টাকায় দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত দেওয়া হয় বসুন্ধরাকে। আর ভূমির এ শ্রেণি পরিবর্তন করায় সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয় প্রায় ১৮০ কোটি টাকা।

আজ হাইকোর্টে আইনজীবী কাওসার নিজেই রিট আবেদনের শুনানি করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ, শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।