ঢাকা ০২:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্ধ হয়নি যমুনা ফিউচার পার্ক, তবে…

বিশেষ প্রতিনিধি
  • সময় ০৫:০৮:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
  • / 381

যমুনা ফিউচার পার্ক

ঢাকার অভিজাত শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এমন তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সয়লাব হলেও তথ্যটি মোটেও সত্য নয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যমুনা গ্রুপের পরিচালক মনিকা ইসলাম। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যমুনা গ্রুপের পরিচালক মনিকা ইসলামের সঙ্গে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের আলাপ আলোচনার ভিত্তিতেই সমাধান হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মূল তিনটি দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর ব্যবসায়ীরাও আন্দোলন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে।

বাংলা অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে আলাপকালে যমুনা গ্রুপের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মোবাইলের দোকানে চুরির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। ট্রাফিক এলার্ট নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মুহুর্তেই এই স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে যায়।

কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সেখানকার মোবাইলের দোকানে চুরি হয়। এর প্রতিবাদে দোকান মালিক ও কর্মীরা রাস্তায় নেমেছেন। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশের গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) এইচ এম শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা যতদূর শুনেছি গতরাতে যমুনা ফিউচার পার্কের মোবাইলের দোকানে চুরি হয়।’তিনি জানান, শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দোকানদাররা একদফা রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করেন। কিছুক্ষণ পর তারা রাস্তা ছেড়ে দেন। জুমার নামাজের পর আবার তারা রাস্তায় নামেন।
ফারহাতুল জান্নাত নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে যমুনা ফিউচার পার্কে মারামারি ভাঙচুর চলছে। আজকে যমুনা ফিউচার পার্কে বেড়াতে আসবেন না। ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে অনেক ভিডিও পোস্ট করেছেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে দেখা যায়, একটি কাঁচের দরজা ভাঙচুর করা হয়েছে।

যমুনা ফিউচার পার্কে আন্দোলন
যমুনা ফিউচার পার্কে আন্দোলন

সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা সদস্যদেরও দেখা গেছে। দুপুর আড়াইটার দিকে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখানেই আছি। দুইপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। একটু পরে আপনাদের আপডেট জানাতে পারব।’

তবে বাংলা অ্যাফেয়ার্সের পক্ষ থেকে যমুনা ফিউচার পার্কে কর্মরত একাধিক বিশস্ত সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছে, শুক্রবারও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দায়িত্বশীলরা। আজকে মনিকা ইসলাম নিজেই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনটি মোবাইল দোকানী ছাড়াও আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ব্যবসায়ীরা যমুনা ফিউচার পার্কের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ম্যানেজারের অপসারণ দাবি করেন। এছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন, সঙ্গে রয়েছে চুরির শিকার হওয়া ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং নিরাপত্তা আরো জোরদার করা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন, প্রকৃত ঘটনা না জেনেই অনেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন যমুনা ফিউচার পার্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত যমুনা গ্রুপের প্রতিপক্ষ একটি বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর লোকজন সেটি বেশি বেশি প্রচার করছেন। যা সত্যিই বেদনার। আমরা এখানে ব্যবসা করি, আমাদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষের। গ্রুপের পরিচালক মনিকা ইসলাম আমাদের কথা দিয়েছেন, তিনি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিবেন। এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা সব বাহিনীর প্রতি মনিকা ইসলাম যে দাবি রেখেছেন, সেটা বাস্তবায়ন হলে ব্যবসায়ীরা নিশ্চিতে ব্যবসা করতে পারবে বলেও মনে করেন তিনি।

 

শেয়ার করুন

বন্ধ হয়নি যমুনা ফিউচার পার্ক, তবে…

সময় ০৫:০৮:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকার অভিজাত শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এমন তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সয়লাব হলেও তথ্যটি মোটেও সত্য নয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যমুনা গ্রুপের পরিচালক মনিকা ইসলাম। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যমুনা গ্রুপের পরিচালক মনিকা ইসলামের সঙ্গে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের আলাপ আলোচনার ভিত্তিতেই সমাধান হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মূল তিনটি দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর ব্যবসায়ীরাও আন্দোলন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে।

বাংলা অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে আলাপকালে যমুনা গ্রুপের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মোবাইলের দোকানে চুরির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। ট্রাফিক এলার্ট নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মুহুর্তেই এই স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে যায়।

কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সেখানকার মোবাইলের দোকানে চুরি হয়। এর প্রতিবাদে দোকান মালিক ও কর্মীরা রাস্তায় নেমেছেন। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশের গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) এইচ এম শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা যতদূর শুনেছি গতরাতে যমুনা ফিউচার পার্কের মোবাইলের দোকানে চুরি হয়।’তিনি জানান, শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দোকানদাররা একদফা রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করেন। কিছুক্ষণ পর তারা রাস্তা ছেড়ে দেন। জুমার নামাজের পর আবার তারা রাস্তায় নামেন।
ফারহাতুল জান্নাত নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে যমুনা ফিউচার পার্কে মারামারি ভাঙচুর চলছে। আজকে যমুনা ফিউচার পার্কে বেড়াতে আসবেন না। ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে অনেক ভিডিও পোস্ট করেছেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে দেখা যায়, একটি কাঁচের দরজা ভাঙচুর করা হয়েছে।

যমুনা ফিউচার পার্কে আন্দোলন
যমুনা ফিউচার পার্কে আন্দোলন

সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা সদস্যদেরও দেখা গেছে। দুপুর আড়াইটার দিকে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখানেই আছি। দুইপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। একটু পরে আপনাদের আপডেট জানাতে পারব।’

তবে বাংলা অ্যাফেয়ার্সের পক্ষ থেকে যমুনা ফিউচার পার্কে কর্মরত একাধিক বিশস্ত সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছে, শুক্রবারও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দায়িত্বশীলরা। আজকে মনিকা ইসলাম নিজেই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনটি মোবাইল দোকানী ছাড়াও আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ব্যবসায়ীরা যমুনা ফিউচার পার্কের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ম্যানেজারের অপসারণ দাবি করেন। এছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন, সঙ্গে রয়েছে চুরির শিকার হওয়া ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং নিরাপত্তা আরো জোরদার করা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন, প্রকৃত ঘটনা না জেনেই অনেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন যমুনা ফিউচার পার্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত যমুনা গ্রুপের প্রতিপক্ষ একটি বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর লোকজন সেটি বেশি বেশি প্রচার করছেন। যা সত্যিই বেদনার। আমরা এখানে ব্যবসা করি, আমাদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষের। গ্রুপের পরিচালক মনিকা ইসলাম আমাদের কথা দিয়েছেন, তিনি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিবেন। এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা সব বাহিনীর প্রতি মনিকা ইসলাম যে দাবি রেখেছেন, সেটা বাস্তবায়ন হলে ব্যবসায়ীরা নিশ্চিতে ব্যবসা করতে পারবে বলেও মনে করেন তিনি।