০৪:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানামা খাল: সুপারপাওয়ারদের নতুন লড়াই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • সময় ১০:১৮:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
  • / 10

পানামা খাল

বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান রুট – পানামা খাল। যা নতুন করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন, যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক কৌশল ও চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব সবকিছু মিলিয়ে পানামা খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা আলোচনা।

বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম এই জলপথের মাধ্যমে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টন পণ্য এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে স্থানান্তরিত হয়। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় নির্মিত এই খাল ১৯৯৯ সালে সম্পূর্ণভাবে পানামা সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে খালের গুরুত্বপূর্ণ দুটি বন্দর নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করেছেন যে, পানামা খালের বন্দরগুলোর ওপর চীনের প্রভাব বেড়েই চলেছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, বেইজিংয়ের সম্পৃক্ততা খালের নিরপেক্ষতার চুক্তি লঙ্ঘন করছে এবং এটি মার্কিন স্বার্থের জন্য হুমকি।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই উদ্বেগের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরক এবং তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পানামার দুটি প্রধান বন্দর কেনার চুক্তি করেছে। দুই হাজার ২৮০ কোটি মার্কিন ডলারের এই চুক্তির মাধ্যমে হংকংভিত্তিক সিকে হাচিসন ব্ল্যাকরকের নেতৃত্বাধীন একটি কনসোর্টিয়ামের কাছে তার ৯০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করছে।

কেমন হবে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ!
কেমন হবে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ!

এই চুক্তি শুধু পানামার দুটি বন্দর নয়, বরং বৈশ্বিক বন্দর শিল্পেও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ব্ল্যাকরক ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, মেক্সিকো ও অস্ট্রেলিয়ার বহু বন্দরের মালিকানা পেয়েছে।

ওয়াশিংটন স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষকরা মনে করছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় বিজয়। এই অধিগ্রহণের ফলে চীনের প্রভাব কমবে এবং খালের নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে। তবে, ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

এই চুক্তির ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে কী পরিবর্তন আসবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান ও অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও অর্থনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে।

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান কৌশলগত প্রতিযোগিতা আগামী দিনে কী রূপ নেবে, তা নির্ভর করছে এই চুক্তির বাস্তবায়ন ও বিশ্বরাজনীতির গতিপ্রবাহের ওপর

শেয়ার করুন

পানামা খাল: সুপারপাওয়ারদের নতুন লড়াই

সময় ১০:১৮:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান রুট – পানামা খাল। যা নতুন করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন, যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক কৌশল ও চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব সবকিছু মিলিয়ে পানামা খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা আলোচনা।

বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম এই জলপথের মাধ্যমে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টন পণ্য এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে স্থানান্তরিত হয়। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় নির্মিত এই খাল ১৯৯৯ সালে সম্পূর্ণভাবে পানামা সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে খালের গুরুত্বপূর্ণ দুটি বন্দর নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করেছেন যে, পানামা খালের বন্দরগুলোর ওপর চীনের প্রভাব বেড়েই চলেছে। ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, বেইজিংয়ের সম্পৃক্ততা খালের নিরপেক্ষতার চুক্তি লঙ্ঘন করছে এবং এটি মার্কিন স্বার্থের জন্য হুমকি।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই উদ্বেগের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরক এবং তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পানামার দুটি প্রধান বন্দর কেনার চুক্তি করেছে। দুই হাজার ২৮০ কোটি মার্কিন ডলারের এই চুক্তির মাধ্যমে হংকংভিত্তিক সিকে হাচিসন ব্ল্যাকরকের নেতৃত্বাধীন একটি কনসোর্টিয়ামের কাছে তার ৯০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করছে।

কেমন হবে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ!
কেমন হবে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ!

এই চুক্তি শুধু পানামার দুটি বন্দর নয়, বরং বৈশ্বিক বন্দর শিল্পেও বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ব্ল্যাকরক ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, মেক্সিকো ও অস্ট্রেলিয়ার বহু বন্দরের মালিকানা পেয়েছে।

ওয়াশিংটন স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষকরা মনে করছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় বিজয়। এই অধিগ্রহণের ফলে চীনের প্রভাব কমবে এবং খালের নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে। তবে, ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

এই চুক্তির ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে কী পরিবর্তন আসবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান ও অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও অর্থনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে।

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান কৌশলগত প্রতিযোগিতা আগামী দিনে কী রূপ নেবে, তা নির্ভর করছে এই চুক্তির বাস্তবায়ন ও বিশ্বরাজনীতির গতিপ্রবাহের ওপর