পর্তুগালে অভিবাসী বাংলাদেশীদের হয়রানি
- সময় ০২:৪৩:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 25
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা মার্টিমজে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযান নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বাঙালিদের অভিযোগ, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের নামে যে অভিযান; তা মূলত অভিবাসীদের হয়রানি করতে পরিচালনা করা হয়।
লিসবন মেট্রোপলিটন পুলিশের পরিচালিত ওই অভিযানে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বাংলাদেশীদের সাথে নিয়মবহির্ভূত তল্লাশী ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৯ ডিসেম্বর পরিচালিত এই অভিযানের সময় স্থানীয় বাংলাদেশিদের দেওয়ালে দাঁড় করিয়ে হাত তুলতে বাধ্য করা হয়। তল্লাশী চালানো হয় পথচারী ও বিভিন্ন কাজে সেসব এলাকায় থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
এ ঘটনায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আঁতোনিউ কস্তার সেক্রেটারি ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিগুয়েল প্রাটা রোক নিন্দা জানান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীনরা এাঁ করছে।
ওই অভিযানের প্রতিবাদে ২০ ডিসেম্বর সকাল থেকেই মার্টিমজে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। তারা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ান।
স্থানীয় মুরালিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সচিব মাসুম আহমেদ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সামনে ক্রিসমাস নিরাপত্তার জন্য পুলিশ অভিযান চালাতেই পারে সেক্ষেত্রে আমরা তাদের সহযোগিতা করবো। কিন্তু এবার যেভাবে হয়রানি করা হয়েছে; তা মানবাধিকার লংঘন।
স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা রানা তাসলিম উদ্দিন জানান, মার্টিমজের বাজারে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে আসেন হাজার হাজার বাঙালি। এই এলাকায় প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করেন। এমন হয়রানির ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব পড়ছে।
শান্তির দেশ হিসেবে পরিচিত পর্তুগাল ক্রমেই অশান্তির দিকে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদ আহমদ প্রিন্স।
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশটির সংসদ সদস্যরাও। এটি বর্তমান ক্ষমতাসীনদের বাড়াবাড়ি বলেও উল্লেখ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মারিয়ানা মরতাগোয়া। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা বিশেষ গোষ্ঠীকে খুশি করতে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে ব্যবহার করছেন।
পর্তুগালে বসবাসরত বাঙালি অভিবাসীরা এই অভিযানের পর নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য স্থানীয় তরুণ উদ্যোক্তা ও সমাজকর্মী রনি হুসাইন।
উল্লেখ্য, গত মার্চে দেশটির মধ্য মধ্য-ডানপন্থী জোট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পর্তুগালে অভিবাসন বিরোধী নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। জটিলতা বেড়েছে নতুন রেসিডেন্স পারমিট প্রাপ্তিসহ নবায়নের ক্ষেত্রেও।