নিজে নকশা করে স্ত্রীকে গাড়ি দিলেন জাকারবার্গ
- সময় ০৭:৫১:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
- / 231
ভালোবাসা মানুষকে কতদূর নিয়ে যেতে পারে? মুঘল সম্রাট শাহজাহান ভালোবেসে তৈরি করেছিলেন তাজমহল। আধুনিক যুগে এসে মার্ক জাকারবার্গ তাঁর স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছেন ভিন্ন এক উজ্জ্বল পথে – নিজের হাতে নকশা করেছেন একটি বিলাসবহুল গাড়ি। পোরশে কেয়েন টার্বো জিটি মিনিভ্যান, যা কেবল তাঁর স্ত্রীর জন্য তৈরি।
মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সামাজিক মাধ্যম বিপ্লবের কারিগর হিসেবে পরিচিত জাকারবার্গ এবার তাঁর স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানের জন্য তৈরি করেছেন এক অনন্য গাড়ি। এটি একটি সাধারণ গাড়ি নয়, পোরশের মতো বিশ্বখ্যাত নির্মাতার সহায়তায় তিনি নিজের হাতে এর নকশা করেছেন।
স্ত্রী প্রিসিলা চেয়েছিলেন একটি মিনিভ্যান, আর এই ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে জাকারবার্গ উপহার দিয়েছেন পোরশে কেয়েন টার্বো জিটি মিনিভ্যান।
পোরশে সাধারণত এমন মিনিভ্যান তৈরি করে না। শুধুমাত্র জাকারবার্গের অনুরোধে ওয়েস্ট কোস্ট কাস্টমসের সাথে অংশীদারত্বে পোরশে তৈরি করেছে এই বিশেষ গাড়ি। জাকারবার্গ নিজের জন্যও কিনেছেন আরেকটি পোরশে – মডেল ৯১১ জিটি ৩, তবে সেই গাড়িটির নকশা তাঁর করা নয়।
এই দুটি গাড়ির বিশেষত্ব শুধুমাত্র এর প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি জাকারবার্গের সৃজনশীলতা এবং স্ত্রীর প্রতি তাঁর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। পোরশে কেয়েন টার্বো জিটি মিনিভ্যানের ডিজাইন জাকারবার্গ নিজে করেছেন, যেখানে তার স্ত্রী প্রিসিলার আরাম ও পছন্দকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
ওয়েস্ট কোস্ট কাস্টমস, যারা গাড়ির নকশা এবং এর বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের জন্য বিখ্যাত, তাদের মাধ্যমেই এই গাড়িটি তৈরি করা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী গাড়ি তৈরি করতে পারে।
এই প্রথম নয় যে জাকারবার্গ তাঁর ভালোবাসার প্রকাশ এমন অভিনব উপায়ে করেছেন। এর আগেও তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার বাড়ির পেছনের উঠানে স্ত্রীর বিশাল একটি ভাস্কর্য উন্মোচন করেছিলেন। সবুজ রঙে প্রিসিলা চ্যানের মুখ ফুটিয়ে তোলা সেই ভাস্কর্যটি রুপালি চাদরে আচ্ছাদিত ছিল।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে জাকারবার্গ লিখেছেন, ‘প্রিসিলা একটি মিনিভ্যান চেয়েছিল, তাই আমি এমন কিছু নকশা করেছি যা একেবারে আমাদের নিজের মতো। এটি একটি পোরশে কেয়েন টার্বো জিটি মিনিভ্যান। আমার নিজের জন্যও একটি ম্যানুয়াল জিটি-৩ নিয়েছি।’ এই পোস্টেই তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন পোরশে ও ওয়েস্ট কোস্ট কাস্টমসকে।
ভালোবাসা যখন সৃজনশীলতার সাথে মিশে যায়, তখন তার ফলাফল হয়ে ওঠে অসাধারণ। মুঘল সম্রাট শাহজাহানের তাজমহল যেমন প্রমাণ করেছিল ভালোবাসার শক্তি, তেমনি মার্ক জাকারবার্গও প্রমাণ করেছেন যে ভালোবাসা শুধু হৃদয় ছুঁতে পারে না, সেটি সৃজনশীলতার মাধ্যমে ভিন্নভাবে প্রকাশিতও হতে পারে।
প্রাচীন তাজমহল হোক বা আধুনিক পোরশে, ভালোবাসার রূপ যুগে যুগে বদলেছে, কিন্তু এর গভীরতা রয়ে গেছে চিরন্তন। আজকের এই ভালোবাসার গল্পটি যেমন প্রযুক্তির সাথে মিশে তৈরি করেছে এক নতুন অধ্যায়, তেমনি আগামীকালও হয়তো ভালোবাসার নতুন গল্প লেখা হবে – মানুষের হৃদয়ের গভীরে।