নতুন কূটনৈতিক চালে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান!

- সময় ১১:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 50
‘শত্রুর শত্রু, আমার বন্ধু’ এই নীতির ওপর আস্থা রেখে নতুন কূটনৈতিক চাল শুরু করেছে চিরপ্রতিদ্বন্ধী ভারত ও পাকিস্তান। এক্ষেত্রে দাবার গুটি হয়ে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে অস্থিতিশীল বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান।
আর এ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার শিখা জ্বলে উঠেছে। দুই দেশই তাদের শত্রুর শত্রুকে বন্ধু এবং শত্রুর বন্ধুকে শত্রু হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে।
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের বিভাজনের পর, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শত্রুতা সৃষ্টি হয়। একাধিক যুদ্ধে জড়িয়েছে দেশ দুটি এবং তাদের সম্পর্ক কখনোই শান্তির দিকে অগ্রসর হয়নি। দেশ দুটির রাজনৈতিক কূটনীতি কখনোই সরল নয়।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ভারত বিরোধীরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এর আগে দীর্ঘকাল পাকিস্তান বিরোধিতা বেশ চাঙ্গা ছিলো। আর এই সুযোগ লুফে নিয়েছে ইসলামাবাদ।
একাত্তর সালে দেশ ভাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে যে বিরোধের জন্ম হয়েছিল; ৫ আগস্টের পর তা রাতারাতি কমিয়ে এনেছেন ‘শেহবাজ শরীফের’ পাকিস্তান প্রশাসন। দুই দেশের ব্যবসা-বানিজ্যসহ নানা ক্ষেত্রেই গত কয়েক মাসে বেশ উন্নয়ন ঘটেছে। অর্থাৎ শত্রু থেকে বন্ধুতে রূপ নিয়েছে দুই দেশের সরকার।
অন্যদিকে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের দূরত্ব বেড়েই চলেছে। দু’দেশের কঠোর অবস্থানের মধ্যে ব্যবসা-বানিজ্যে ভাটা পড়ার পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে যাতায়াত। বরং সীমান্তসহ নানা কিছুতে দু’দেশের মধ্যে দূরত্ব আরো বেড়েছে।
এবার ভারত তাদের কূটনীতির গোড়া ছুটিয়েছে পাকিস্তানের শত্রু আফগানিস্তানে তালেবানদের দিকে। ইতোমধ্যে দু’দেশের মধ্যে এক ‘নীরব যোগাযোগ’ স্থাপন হয়েছে। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান কাবুলে ফিরে এসে ক্ষমতা গ্রহণের পর, আফগানিস্তানে নতুন এক রাজনৈতিক বাস্তবতা সৃষ্টি হয়। কিছু দিনের মধ্যেই তালেবান ও পাকিস্তান সরকারের মধুর সম্পর্ক তিক্ততায় রূপ নেয়। ইতোমধ্যে পরস্পর পরস্পরের দিকে গুলিও ছুড়েছে। এই ঘটনায় আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্পষ্ট হয়েছে।
আর এই সুযোগ এক মুহুর্তের জন্য হাতছাড়া করেনি মোদি সরকার। নিজেরা কট্টর হিন্দুত্ববাদি সরকার হয়েও হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আরেক কট্টর মুসলিম দেশের দিকে। কেননা ভারত জানে, তালেবানদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন তাদের বৃহত্তর আঞ্চলিক কৌশলের অংশ।
ভারত, তালেবানদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, কারণ তারা জানে, তালেবান যদি কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়, তা ভারতের জন্য বিপদজনক হতে পারে। পাশাপাশি, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক বাড়ছে, যা ভারতকে উদ্বিগ্ন করেছে।
বন্ধুত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত এবার তাদের জাতীয় বাজেটে আফগানিস্তানের জন্যে ১০০ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে। এই অর্থ আফগানিস্তানের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহার করতে চাচ্ছে ভারত।