ঢাকা ১২:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুবাইয়ের নাইট ক্লাবে বাঙালি তরুণীদের বন্দি জীবন!

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ০২:৩৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
  • / 256

দুবাই! বিশ্বের অন্যতম ধনী ও আধুনিক শহর। শূন্য মরুভূমির বুকে গড়ে ওঠা এই নগরী সারা বিশ্বের মানুষের জন্য স্বপ্নের গন্তব্য। অসংখ্য মানুষ তাদের ভাগ্য বদলাতে ছুটে আসে এই উজ্জ্বল নগরীতে। কিন্তু এই চকচকে শহরের অন্তরালে লুকিয়ে আছে এক অন্ধকারময় বাস্তবতা – বাঙালি তরুণীদের বন্দি জীবন।

দুবাইয়ের অনেক নাইট ক্লাব ও বিনোদন কেন্দ্র আছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের তরুণীরা কাজ করেন। এই চাকরির প্রলোভনে অনেক বাঙালি তরুণীও পা রাখেন দুবাইয়ের পথে। কিন্তু প্রাথমিক চাকরির প্রতিশ্রুতি তাদের জীবনের এক নিষ্ঠুর বাস্তবতার দিকে ঠেলে দেয়। স্বপ্নক্ষণেই পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে।

তরুণীদের অনেকেই শিকার হন প্রতারণার। শুরুতে তাদের বলা হয় বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁ বা সেলুনে কাজের কথা। কিন্তু দুবাইয়ে পা রাখার পর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় নাইট ক্লাবে, যেখানে তারা মূলত নাচতে বাধ্য হন। এই নাচের পেছনে থাকে আরও ভয়ানক কিছু – ক্লাবের মালিক ও দালালরা তাদেরকে পণ হিসেবে ব্যবহার করে।

তারা সেখানে কাজ করতে বাধ্য হন অত্যন্ত অমানবিক শর্তে। দৈনিক ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ, পর্যাপ্ত খাবার ও বিশ্রামের অভাব, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, এবং বিন্দুমাত্র স্বাধীনতার সুযোগ নেই। তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়, যাতে তারা পালিয়ে যেতে না পারেন।

ক্লাবের মালিকরা তাদের উপর কঠোর নজরদারি রাখেন। তরুণীদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের স্বাধীনতা নেই, এমনকি কারও সাথে যোগাযোগের সুযোগও নেই। তারা হয়ে ওঠেন সম্পূর্ণ বন্দি। প্রতিদিন তারা শুধুমাত্র অর্থের লোভী মালিকদের আদেশে নাচেন, বিনোদন দেন, আর দিনশেষে তাদের শরীরও ব্যবহার করা হয় অবৈধ কার্যকলাপে।

এই তরুণীদের বেশিরভাগই অর্থ উপার্জনের আশায় আসেন। পরিবারকে সহায়তা করার ইচ্ছা, দারিদ্র্য থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা তাদেরকে বাধ্য করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই ভেঙে যায়, আর তারা পড়েন এক চরম বন্দিদশায়। তাদের জন্য নেই কোনো মুক্তি বা আশার আলো।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও সংগঠন এই তরুণীদের সাহায্যের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তবে সমস্যা এতটাই গভীর যে, অনেক তরুণী এই বন্দিদশা থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না। তাদের অনেকেই হয়তো আর কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন না।

শেয়ার করুন

দুবাইয়ের নাইট ক্লাবে বাঙালি তরুণীদের বন্দি জীবন!

সময় ০২:৩৯:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

দুবাই! বিশ্বের অন্যতম ধনী ও আধুনিক শহর। শূন্য মরুভূমির বুকে গড়ে ওঠা এই নগরী সারা বিশ্বের মানুষের জন্য স্বপ্নের গন্তব্য। অসংখ্য মানুষ তাদের ভাগ্য বদলাতে ছুটে আসে এই উজ্জ্বল নগরীতে। কিন্তু এই চকচকে শহরের অন্তরালে লুকিয়ে আছে এক অন্ধকারময় বাস্তবতা – বাঙালি তরুণীদের বন্দি জীবন।

দুবাইয়ের অনেক নাইট ক্লাব ও বিনোদন কেন্দ্র আছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের তরুণীরা কাজ করেন। এই চাকরির প্রলোভনে অনেক বাঙালি তরুণীও পা রাখেন দুবাইয়ের পথে। কিন্তু প্রাথমিক চাকরির প্রতিশ্রুতি তাদের জীবনের এক নিষ্ঠুর বাস্তবতার দিকে ঠেলে দেয়। স্বপ্নক্ষণেই পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে।

তরুণীদের অনেকেই শিকার হন প্রতারণার। শুরুতে তাদের বলা হয় বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁ বা সেলুনে কাজের কথা। কিন্তু দুবাইয়ে পা রাখার পর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় নাইট ক্লাবে, যেখানে তারা মূলত নাচতে বাধ্য হন। এই নাচের পেছনে থাকে আরও ভয়ানক কিছু – ক্লাবের মালিক ও দালালরা তাদেরকে পণ হিসেবে ব্যবহার করে।

তারা সেখানে কাজ করতে বাধ্য হন অত্যন্ত অমানবিক শর্তে। দৈনিক ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ, পর্যাপ্ত খাবার ও বিশ্রামের অভাব, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, এবং বিন্দুমাত্র স্বাধীনতার সুযোগ নেই। তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়, যাতে তারা পালিয়ে যেতে না পারেন।

ক্লাবের মালিকরা তাদের উপর কঠোর নজরদারি রাখেন। তরুণীদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের স্বাধীনতা নেই, এমনকি কারও সাথে যোগাযোগের সুযোগও নেই। তারা হয়ে ওঠেন সম্পূর্ণ বন্দি। প্রতিদিন তারা শুধুমাত্র অর্থের লোভী মালিকদের আদেশে নাচেন, বিনোদন দেন, আর দিনশেষে তাদের শরীরও ব্যবহার করা হয় অবৈধ কার্যকলাপে।

এই তরুণীদের বেশিরভাগই অর্থ উপার্জনের আশায় আসেন। পরিবারকে সহায়তা করার ইচ্ছা, দারিদ্র্য থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা তাদেরকে বাধ্য করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই ভেঙে যায়, আর তারা পড়েন এক চরম বন্দিদশায়। তাদের জন্য নেই কোনো মুক্তি বা আশার আলো।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও সংগঠন এই তরুণীদের সাহায্যের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তবে সমস্যা এতটাই গভীর যে, অনেক তরুণী এই বন্দিদশা থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না। তাদের অনেকেই হয়তো আর কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন না।