ঢাবি ঘিরে চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস
- সময় ০৯:৫৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 352
দেশসেরা বিদ্যাপীঠ প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়ার সুমহান ইতিহাস। এবারের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নেতৃত্ব দিয়েছেন। এমনকি অন্তর্বতীকালীন সরকারেও তাদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এরই মাঝে ফাঁস হয়েছে চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দা তথ্য।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পটভূমিতে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পৌঁছেছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
এ আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে জরুরি ভার্চুয়াল সভা করেছে। মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান ছাত্রসংগঠনের নেতাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
এ সভা রাত সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রভোস্ট ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ।
ছাত্রসংগঠনের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের ঢাবি সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, ছাত্রশিবিরের ঢাবি সভাপতি মো. আবু সাদিক কায়েম, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর ঢাবি সভাপতি নুজিয়া হাসিন রাশা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সভাপতি মেঘমল্লার বসু। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদারও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
জগন্নাথ হলে ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্যান্য ধর্মের শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘গতকালের মিটিং মূলত নিরাপত্তা উদ্বেগ নিয়ে ছিল। গোয়েন্দা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, একটি গোষ্ঠী দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে বলা হয়েছে এবং সবার মতামত নেওয়া হয়েছে।’
সভার বিষয়ে ছাত্রশিবিরের ঢাবি সভাপতি মো. আবু সাদিক কায়েম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনলাইন মিটিংয়ে বসেন ঢাবি প্রশাসন। সেখানে শিবিরের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো প্রোপাগান্ডা চিহ্নিত করে ফ্যাক্ট চেক করা, প্রোপাগান্ডা রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া ওয়ার্ল্ড রিলিজন অ্যান্ড কালচার বিভাগ থেকে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সপ্তাহ’ ঘোষণা, আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক জোরদার করা ও মসজিদগুলোর ইমামদের খুতবায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে কথা বলার বিষয়ে প্রস্তাব ওঠে।
ছাত্রদলের ঢাবি সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ইসকনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের একটা চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কিভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো প্রয়োজনে আমরা আছি।