টিউলিপকে হেনস্তায় যুক্তরাজ্যে লবিস্ট কাজ করেছেন
- সময় ০২:৫০:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
- / 46
বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক মাত্র ১৬ বছর বয়সে বৃটিশ রাজনীতিতে পা রাখেন। হয়েছেন টানা চারবার বৃটিশ পার্লামেন্টের সদস্য। টিউলিপের হেনস্তা করতে যুক্তরাজ্যে নানা লবিস্ট কাজ করেছেন, এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
টানা সমালোচনার মুখে শেষমেষ যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন তিনি। তবে তার সংসদ সদস্য পদ বহাল থাকছে। কিন্তু কি কারনে তিনি পদত্যাগ করলেন; কোনভাবেই কি পদত্যাগ এড়ানো যেতো না- এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
টিউলিপ ছিলেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের ঘনিষ্ঠ এবং লেবার পার্টির অন্যতম উদীয়মান মুখ। ২০২৪ সালে লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার দায়িত্ব ছিলো, দেশটির আর্থিক দুর্নীতি বন্ধে কাজ করার।
গত ৫ আগষ্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পতনের পর টিউলিপ সিদ্দিকের নাম নানাভাবেই আলোচনায় সামনে আসতে শুরু করে। বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে মধ্যস্থতার বিনিময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে তার নাম উল্লেখ করা হয়। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন, তবে এ নিয়ে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দলের চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে। নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তেরও অনুমতি দেন যুক্তরাজ্যের এই সিটি মিনিস্টার।
এরপর শুরু হয় ব্রিটিশ মিডিয়ার অনুসন্ধান। ফাইনান্সিয়াল টাইমস ও দ্য টাইমসের রিপোর্টে উঠে আসে, তিনি আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নিয়েছেন। তার বোনের নামে আরও একটি ফ্ল্যাট নেয়ার খবর প্রকাশ হয়।
দ্য টাইমস জানায়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা ছড়ানো থিংক ট্যাঙ্কের সাথেও যুক্ত টিউলিপ। আর দ্য গার্ডিয়ানে দাবি, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারে সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগীদের একজন টিউলিপ।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যানুযায়ী, আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য ও ইইউ লবিং ইউনিট এবং নির্বাচনী কৌশল দলের হয়েও কাজ করেছেন লেবার পার্টির এই নেতা।
ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের বিরুদ্ধে এতসব অভিযোগে বেশ চাপে পড়েন প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার। যদিও প্রধানমন্ত্রী এতদিন টিউলিপের পাশেই ছিলেন।
অবশেষে, মঙ্গলবার ১৫ জানুয়ারি, টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। তিনি তার চিঠিতে বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং তিনি সবসময় স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় এবং সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ধরে রাখার জন্য তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।”
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ যতোটা না দুর্নীতির তারচেয়ে বেশি রাজনৈতিক। তিনি যেহেতু বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য; তাই তাকে হেনস্তা করতে যুক্তরাজ্যে নানা লবিস্ট কাজ করেছেন। আর সেখানে লবিস্ট ফার্মগুলোকে অর্থের জোগান দিয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো।