১০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে দুই চোখ তুলে ফেলা হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ভোল
  • সময় ১০:৪৪:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • / 88

চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে দুই চোখ তুলে ফেলা হয়

ভোলার চরফ্যাশনের চর আরকলমী গ্রামে চুরির অভিযোগে শাহাজাহান মিন্টিজ (৪০) নামে এক ব্যক্তির ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে গ্রামবাসী। চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে তাঁর দুই চোখ তুলে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করেছেন মিন্টিজের স্ত্রী।

রোববার সকালে তাঁকে ধরে মারধর করা হয়, হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয় এবং নির্মমভাবে চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে দুই চোখ তুলে ফেলা হয়। পরে গ্রাম পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে যায়।

শাহাজাহান মিন্টিজ নজরুল নগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং প্রয়াত ছিডু চোরার ছেলে।  কয়েক বছর আগে কারাগারে ছিড়ুর মৃত্যু হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মিন্টিজ দীর্ঘদিন ধরে চোর চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন এবং ভোলার দক্ষিণাঞ্চলে একাধিক চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল।

তবে মিন্টিজের স্ত্রী ফাতেমা বেগম দাবি করেছেন, সন্দেহের ভিত্তিতে তাঁর স্বামীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, মাঝের চর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা লোকমান হোসেনের ছেলে মো. সাকিব ও তাঁর দলবল এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকালে মিন্টিজকে নিজের বাড়িতে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ধাওয়া করে। পরে জাহাঙ্গীর ফরাজির বাড়ি থেকে ধরে এনে বারেক ফরাজির বাড়ির পুকুরপাড়ে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। হাত-পা ভেঙে দেওয়ার পর চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে তাঁর দুই চোখ তুলে ফেলা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হলেও ভয়ে পরিচয় গোপন করেছিলেন বলে জানান মিন্টিজের স্ত্রী ফাতেমা। তিনি বলেন, “আমার স্বামীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তারা হাত-পা ভেঙে ফেলেছে, চোখ তুলে নিয়েছে। আমি অসহায়ের মতো সব দেখেছি, কিন্তু কিছুই করতে পারিনি।”

অন্যদিকে, অভিযুক্ত মো. সাকিব এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মিন্টিজ একজন পেশাদার চোর। তাঁকে দেখে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে গণধোলাই দেয় এবং চোখ তুলে ফেলে বলে শুনেছি। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।”

চরফ্যাশন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার রিয়াজ উদ্দিন জানান, “মিন্টিজের শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং দুই চোখ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”

দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূঁইয়া জানান, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিন্টিজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তদন্ত করে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

শেয়ার করুন

চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে দুই চোখ তুলে ফেলা হয়

সময় ১০:৪৪:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

ভোলার চরফ্যাশনের চর আরকলমী গ্রামে চুরির অভিযোগে শাহাজাহান মিন্টিজ (৪০) নামে এক ব্যক্তির ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে গ্রামবাসী। চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে তাঁর দুই চোখ তুলে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করেছেন মিন্টিজের স্ত্রী।

রোববার সকালে তাঁকে ধরে মারধর করা হয়, হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয় এবং নির্মমভাবে চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে দুই চোখ তুলে ফেলা হয়। পরে গ্রাম পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে যায়।

শাহাজাহান মিন্টিজ নজরুল নগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং প্রয়াত ছিডু চোরার ছেলে।  কয়েক বছর আগে কারাগারে ছিড়ুর মৃত্যু হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মিন্টিজ দীর্ঘদিন ধরে চোর চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন এবং ভোলার দক্ষিণাঞ্চলে একাধিক চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল।

তবে মিন্টিজের স্ত্রী ফাতেমা বেগম দাবি করেছেন, সন্দেহের ভিত্তিতে তাঁর স্বামীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, মাঝের চর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা লোকমান হোসেনের ছেলে মো. সাকিব ও তাঁর দলবল এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকালে মিন্টিজকে নিজের বাড়িতে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ধাওয়া করে। পরে জাহাঙ্গীর ফরাজির বাড়ি থেকে ধরে এনে বারেক ফরাজির বাড়ির পুকুরপাড়ে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। হাত-পা ভেঙে দেওয়ার পর চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে তাঁর দুই চোখ তুলে ফেলা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হলেও ভয়ে পরিচয় গোপন করেছিলেন বলে জানান মিন্টিজের স্ত্রী ফাতেমা। তিনি বলেন, “আমার স্বামীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তারা হাত-পা ভেঙে ফেলেছে, চোখ তুলে নিয়েছে। আমি অসহায়ের মতো সব দেখেছি, কিন্তু কিছুই করতে পারিনি।”

অন্যদিকে, অভিযুক্ত মো. সাকিব এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মিন্টিজ একজন পেশাদার চোর। তাঁকে দেখে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে গণধোলাই দেয় এবং চোখ তুলে ফেলে বলে শুনেছি। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।”

চরফ্যাশন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার রিয়াজ উদ্দিন জানান, “মিন্টিজের শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং দুই চোখ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”

দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূঁইয়া জানান, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিন্টিজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তদন্ত করে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”