০৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুলিবিদ্ধ ৯, মাদারীপুর-শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে ২ ডাকাত নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাদারীপুর
  • সময় ১১:২২:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
  • / 40

ডাকাতি

মাদারীপুর-শরীয়তপুর দুই জেলার সীমানায় খোয়াজপুর-টেকেরহাট বন্দরে ডাকাতি করার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে ডাকাত দলের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ডাকাতদের ছোরা গুলিতে দুই জেলায় অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পরে পালানোর সময় ৭ জন ডাকাতকে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাদারীপুর-শরীয়তপুর সীমান্তবর্তী কীর্তিনাশা নদীতে বাল্কহেডে ডাকাতির অভিযোগে গণপিটুনিতে দুইজনকে নিহত হয়েছেন। এর আগে ডাকাতদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে ৯ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে গুলিতে আহত শ্রমিকদের ও পিটুনিতে আহত পাঁচ ডাকাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় মাদারীপুরের কালকিনি ও রাত ১১টার দিকে শরীয়তপুরের ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ডাকাতের গুলিতে গুরুতর আহতরা হলেন- মাদারীপুর খোয়াজপুর রাজারচর ও চরগোবিন্দপুর এলাকার অনিক সরদার (১৪), সালাউদ্দিন সরদার (৩৫), দুলাল সরদার (৩৭), সাইমসহ (১৮) বরগুনা জেলা থেকে মাদারীপুরে শ্রমিকের কাজ করতে আসা হেলাল মোল্লা (৪৪)। তাদের উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে তাদের মধ্যে পাঁচজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

শনিবার (১ মার্চ) সকালে জেলা পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হামলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গুলিবিদ্ধ আলামিন ফকির বলেন, হঠাৎ দেখি ডাকাতরা স্পিডবোট নিয়ে আসছে। কোনো কথা বলার আগেই তারা এলোপাথাড়ি গুলি করে। গুলি আমার শরীরে লাগে। এরপর কি হয়েছে আমি বলতে পারব না। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।

মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমরা খবর পাই, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারহাট এলাকায় ডাকাতির চেষ্টা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ডাকাত দলকে ধাওয়া দিলে তারা এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। ডাকাত দল শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদী পথ ধরে পালিয়ে আসছিল। দুই জেলার সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা হওয়ায় মাদারীপুরের সাতজন ও শরীয়তপুরের দুইজন ডাকাতের গুলিতে জখম হন। মাদারীপুরের আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে এবং দুইজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে শরীয়তপুরে আহত দুইজনের মধ্যে একজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, অন্যজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন বলে জানান তিনি।

পুলিশ সুপার বলেন, রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে ডাকাত দল। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের পিটুনি দেয়। বিষয়টি জানার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহত ডাকাতদেরকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। আহত ডাকাতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মধ্যে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মুনতাসির খান বলেন, ডাকাতদের গুলিতে আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। এবং বাকি তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সাতজন আহত ডাকাতের মধ্যে দুজন মারা গেছে এবং বাকি পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

গুলিবিদ্ধ ৯, মাদারীপুর-শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে ২ ডাকাত নিহত

সময় ১১:২২:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

মাদারীপুর-শরীয়তপুর দুই জেলার সীমানায় খোয়াজপুর-টেকেরহাট বন্দরে ডাকাতি করার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে ডাকাত দলের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ডাকাতদের ছোরা গুলিতে দুই জেলায় অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পরে পালানোর সময় ৭ জন ডাকাতকে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

মাদারীপুর-শরীয়তপুর সীমান্তবর্তী কীর্তিনাশা নদীতে বাল্কহেডে ডাকাতির অভিযোগে গণপিটুনিতে দুইজনকে নিহত হয়েছেন। এর আগে ডাকাতদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে ৯ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে গুলিতে আহত শ্রমিকদের ও পিটুনিতে আহত পাঁচ ডাকাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় মাদারীপুরের কালকিনি ও রাত ১১টার দিকে শরীয়তপুরের ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ডাকাতের গুলিতে গুরুতর আহতরা হলেন- মাদারীপুর খোয়াজপুর রাজারচর ও চরগোবিন্দপুর এলাকার অনিক সরদার (১৪), সালাউদ্দিন সরদার (৩৫), দুলাল সরদার (৩৭), সাইমসহ (১৮) বরগুনা জেলা থেকে মাদারীপুরে শ্রমিকের কাজ করতে আসা হেলাল মোল্লা (৪৪)। তাদের উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে তাদের মধ্যে পাঁচজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

শনিবার (১ মার্চ) সকালে জেলা পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হামলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গুলিবিদ্ধ আলামিন ফকির বলেন, হঠাৎ দেখি ডাকাতরা স্পিডবোট নিয়ে আসছে। কোনো কথা বলার আগেই তারা এলোপাথাড়ি গুলি করে। গুলি আমার শরীরে লাগে। এরপর কি হয়েছে আমি বলতে পারব না। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।

মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমরা খবর পাই, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারহাট এলাকায় ডাকাতির চেষ্টা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ডাকাত দলকে ধাওয়া দিলে তারা এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। ডাকাত দল শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদী পথ ধরে পালিয়ে আসছিল। দুই জেলার সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা হওয়ায় মাদারীপুরের সাতজন ও শরীয়তপুরের দুইজন ডাকাতের গুলিতে জখম হন। মাদারীপুরের আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে এবং দুইজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে শরীয়তপুরে আহত দুইজনের মধ্যে একজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, অন্যজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন বলে জানান তিনি।

পুলিশ সুপার বলেন, রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে ডাকাত দল। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের পিটুনি দেয়। বিষয়টি জানার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহত ডাকাতদেরকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। আহত ডাকাতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মধ্যে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মুনতাসির খান বলেন, ডাকাতদের গুলিতে আহত চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। এবং বাকি তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সাতজন আহত ডাকাতের মধ্যে দুজন মারা গেছে এবং বাকি পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।