০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
  • সময় ১০:৪৯:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
  • / 30

ঘোড়া (ফাইল ফটো)

গাজীপুর মহানগরের হায়দ্রাবাদ এলাকায় ঘোড়ার মাংস বিক্রির বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে প্রশাসন। জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জালাল উদ্দীন এবং গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাহীন মিয়া এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ঘোড়ার মাংস বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারি চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হায়দ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম ও নুরুল্লাহ মামুন কয়েক বছর আগে দুবাই ভ্রমণের সময় সেখানকার হোটেলে ঘোড়ার মাংস বিক্রি হতে দেখেন। এরপর দেশে ফিরে তারা পরীক্ষামূলকভাবে একটি ঘোড়া জবাই করে পরিবারের মধ্যে ভাগ করে নেন। পরে, চলতি বছরের শুরুর দিকে তারা বাণিজ্যিকভাবে ঘোড়া জবাই করে মাংস বিক্রি শুরু করেন।

প্রতি কেজি মাংস ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল। প্রথমে সীমিত পরিসরে শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ১০টি পর্যন্ত ঘোড়া জবাই করে বিক্রি করা হয় এবং মাংস সংগ্রহ করতে ক্রেতাদের টোকেন নিয়ে লাইন ধরতে হতো।

ঘোড়ার মাংস বিক্রিকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, মাংসটি গরুর মাংসের মতো সুস্বাদু এবং তুলনামূলক কম দাম হওয়ায় এর চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে, অনেকেই এটিকে অরুচিকর বলে মন্তব্য করেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক মাদরাসার পরিচালক মুফতি আবু সাইদ জানান, ইসলামে ঘোড়ার মাংস খাওয়ার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে মানুষের অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে এটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে কি না।

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, যদি ঘোড়াগুলো সাধারণ খাদ্য গ্রহণ করে লালিত হয়ে থাকে, তাহলে এর মাংস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে নিশ্চিত হতে হবে যে এগুলো বিষাক্ত খাদ্য বা কেমিক্যালযুক্ত খাবার খেয়ে বড় হয়নি। তা না হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়ে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।

শেয়ার করুন

গাজীপুরে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ

সময় ১০:৪৯:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

গাজীপুর মহানগরের হায়দ্রাবাদ এলাকায় ঘোড়ার মাংস বিক্রির বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে প্রশাসন। জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জালাল উদ্দীন এবং গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাহীন মিয়া এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ঘোড়ার মাংস বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারি চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হায়দ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম ও নুরুল্লাহ মামুন কয়েক বছর আগে দুবাই ভ্রমণের সময় সেখানকার হোটেলে ঘোড়ার মাংস বিক্রি হতে দেখেন। এরপর দেশে ফিরে তারা পরীক্ষামূলকভাবে একটি ঘোড়া জবাই করে পরিবারের মধ্যে ভাগ করে নেন। পরে, চলতি বছরের শুরুর দিকে তারা বাণিজ্যিকভাবে ঘোড়া জবাই করে মাংস বিক্রি শুরু করেন।

প্রতি কেজি মাংস ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল। প্রথমে সীমিত পরিসরে শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ১০টি পর্যন্ত ঘোড়া জবাই করে বিক্রি করা হয় এবং মাংস সংগ্রহ করতে ক্রেতাদের টোকেন নিয়ে লাইন ধরতে হতো।

ঘোড়ার মাংস বিক্রিকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, মাংসটি গরুর মাংসের মতো সুস্বাদু এবং তুলনামূলক কম দাম হওয়ায় এর চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে, অনেকেই এটিকে অরুচিকর বলে মন্তব্য করেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় এক মাদরাসার পরিচালক মুফতি আবু সাইদ জানান, ইসলামে ঘোড়ার মাংস খাওয়ার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে মানুষের অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে এটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে কি না।

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, যদি ঘোড়াগুলো সাধারণ খাদ্য গ্রহণ করে লালিত হয়ে থাকে, তাহলে এর মাংস স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে নিশ্চিত হতে হবে যে এগুলো বিষাক্ত খাদ্য বা কেমিক্যালযুক্ত খাবার খেয়ে বড় হয়নি। তা না হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়ে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।