কোরআনের হাফেজ হলেন ১৩ হাজার কারাবন্দি
- সময় ১০:২৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
- / 23
পবিত্র কোরআন মানেই পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার সময়েও এই পবিত্র কোরআন শরীফের ব্যাখা ও বিশ্লেষণ সেরা বিজ্ঞানীদের অবাক করে দেয়। তাই পবিত্র কোরআনকে মেনেই প্রত্যেক মুসলিম জীবন ধারণ করলে জীবন হয়ে উঠে শান্তিময়।
মরক্কো, উত্তর আফ্রিকার একটি দেশ, তার ইসলামি ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। কিন্তু সম্প্রতি দেশটি আরেকটি অনন্য উদ্যোগের মাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছে।
মরক্কোর কারাগারে বন্দিদের মধ্যে পবিত্র কোরআনের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৪৬৪ জন বন্দি পবিত্র কোরআনের হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।
মরক্কোর কারা প্রশাসনের জেনারেল বোর্ড দেশের আওকাফ এবং ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ কর্মসূচি শুরু করে। বন্দিদের শুধুমাত্র শাস্তি প্রদান নয়, বরং তাদের নৈতিক ও আত্মিক উন্নয়নের জন্য এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
এই কর্মসূচির আওতায় বন্দিদের জন্য কোরআন শেখানো, দোয়া-দরুদ এবং হাদিস মুখস্থ করার বিশেষ সুযোগ প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে খুতবা এবং ইসলামিক বিষয়ক বিভিন্ন নির্দেশিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
২০২৪ সালের মধ্যে, প্রায় ১৩ হাজার ৪৬৪ জন বন্দি পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছেন। এ ছাড়া ৬৭ হাজার ৭৭২ জন বন্দি তাবলিগ, ওয়াজ এবং নির্দেশনামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন।
এই উদ্যোগ শুধু বন্দিদের আত্মিক উন্নতিই নয়, বরং তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বন্দিদের জীবন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই কর্মসূচির প্রভাব ব্যাপক। পবিত্র কোরআনের শিক্ষা তাদের মনে শান্তি, ধৈর্য এবং ইতিবাচক মানসিকতার বিকাশ ঘটায়। এছাড়া, এ ধরনের শিক্ষা তাদের সমাজে পুনর্বাসিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
কর্মসূচির আওতায় বন্দিরা ইসলামের মানবিক মূল্যবোধ সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সহায়ক হয়।
মরক্কোর কারাগার প্রশাসন এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বন্দিদের জন্য আলাদা কোরআন শিক্ষার ক্লাস, যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, এবং কোরআন মুখস্থ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়।
বন্দিদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজনও করা হয়। এসব উদ্যোগ বন্দিদের মধ্যে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ এবং আত্মিক উন্নয়নের প্রবণতা বাড়িয়েছে।
মরক্কোর এই উদ্যোগের সাফল্যের ফলে প্রশাসন ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এ কার্যক্রম চালু করার পরিকল্পনা করছে। আইকিউএনএ জানিয়েছে যে, ভবিষ্যতে কারাগারে কোরআন শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
কেবল কোরআন শিক্ষা নয়; ভবিষ্যতে বন্দিদের জন্য আধুনিক শিক্ষা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পণা রয়েছে দেশটির।