কার মধ্যস্থতায় খেলাফত মজলিস-এবি পার্টির সমোঝোতা?
- সময় ০৬:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 19
কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বরাদ্দ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান চেয়ে আজ শনিবার বিকেল ৩টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি)। তবে সকাল ১১টায় এবি পার্টির কার্যালয়ে উপস্থিত হন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতারা। খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল এবি পার্টির নেতাদের সঙ্গে সমঝোতায় বসেন। এতে মধ্যস্থতা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন।
দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা সংলাপের পর দুই দল জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে স্থান বিষয়ে জটিলতা নিরসনে একমত হন। এবি পার্টি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি পেলেও খেলাফত মজলিসের নেতারা এবি পার্টি নেতাদের ত্যাগ স্বীকার করে মাঠটি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। খেলাফত মজলিস নেতাদের অনুরোধে এবি পার্টি একমত হয়। পরবর্তীতে দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন দলটির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। পরে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক ও যুগ্ম আহ্বায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিনহাজুল আলম মিলন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘প্রথম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিকট আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাঠ বরাদ্দের আবেদন করেছিলাম।
অপর পক্ষে খেলাফত মজলিসও ২৮ ডিসেম্বর তৃণমূল সংগঠকদের সম্মেলনের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করে। গণপূর্ত অধিদপ্তর উভয় দলকেই পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাঠ বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে চিঠি প্রদান করে। সর্বশেষ গণপূর্ত অধিদফতর ২৭, ২৮ ডিসেম্বর এবি পার্টিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ করে চূড়ান্ত চিঠি প্রদান করে।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু যাচাই-বাছাই পূর্বক মাঠ বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশভিত্তিক চিঠির ওপর নির্ভর করে খেলাফত মজলিস প্রচার-প্রচারণা, মেহমান দাওয়াত সম্পন্ন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ মুখে নিজেদের দলীয় সম্মেলনের গেট নির্মাণ করায় উভয় দলের সম্মেলন স্থান নিয়ে এক ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। এমতাবস্থায় আজ খেলাফত মজলিস ও এবি পার্টির নেতাদের মধ্যে দীর্ঘ সমঝোতা বৈঠক হয়।
খেলাফত মজলিসের একটি প্রতিনিধিদল এবি পার্টির কার্যালয়ে এসে তাদের সম্মেলনে সহোযোগিতার অনুরোধ জানান। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় খেলাফত মজলিসের নেতাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবি পার্টি তাদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তন করে আগামী ১০ ও ১১ জানুয়ারী অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।’
তিনি বলেন, ‘একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান কতটা দায়িত্বহীন হলে একদল আবেদন করার পরও আরেক দলের আবেদন তারা কীভাবে গ্রহণ করে? তাদের এই দায়িত্বহীনতার কারণে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দুই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। আজ আমরা একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এই সমস্যার সমাধান করলাম।’
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘সকাল ১১টা থেকে আমরা এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে বসেছি যেখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন আমাদের সহোযোগিতা করেছেন। আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবি পার্টি তাদের কাউন্সিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১১ জানুয়ারি করেছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একত্রে আন্দোলন করেছি। আমাদের মানে ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগ নেই।’
এবি পার্টির আহ্বায়ক প্রফেসর আব্দুল ওহাব মিনার সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন।