ঢাকা ১২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাকরাইল মসজিদের কোলাকুলি, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ০৩:১৬:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • / 52

কাকরাইল মসজিদে নামাজ আদায়

কাকরাইল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করছেন তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদপন্থিরা। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে নামাজ শুরু হয়ে সাড়ে ১২টায় শেষ হয়। তবে বিরাজমান বিবাদের জেরে দুই পক্ষই ছাড় দিয়েছে আজ। সাদপন্থিদের সাথে কোলাকুলি করেছেন জুবায়েরপন্থিরা। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সরেজমিনে কাকরাইল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই সাদপন্থিরা মসজিদ এলাকায় আসতে শুরু করে। আস্তে আস্তে তাদের জমায়েত অনেক বড় হয়। প্রধান সড়ক পার হয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ছাড়িয়ে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।

জানা গেছে, তাবলিগ-জামাতের বিবদমান দ্বন্দ্বের পর থেকে বিগত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে জুবায়েরপন্থিরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যদিও বিগত সরকারের এমন বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিল সাদপন্থিরা। এখন পুরো কাকরাইল মসজিদ অবৈধ দখল করে ১৫ নভেম্বর থেকে অবস্থান নিতে চায় জুবায়েরপন্থিরা।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সাদ অনুসারীরা।

তারা আরও জানান, অপরদিকে কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থিরা সারা বছর মাদ্রাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন। কিন্তু হেফাজতপন্থি আলেমদের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জুবায়েরপন্থিরা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাকরাইল মসজিদ স্থায়ীভাবে দখল নেওয়ার ঘোষণা দেওয়াকে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

কাকরাইল মসজিদ
কাকরাইল মসজিদ

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) এডিসি জুয়েল রানা বলেন, তাবলিগ জামাতের দু’পক্ষই সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- কাকরাইল মসজিদে চার সপ্তাহ থাকবেন জুবায়েরপন্থিরা আর দুই সপ্তাহ থাকবেন সাদপন্থিরা। সে অনুযায়ী সাদপন্থীরা আজ জমায়েত হয়েছেন। আজ থেকে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য তারা কাকরাইল মসজিদে থাকবেন। কিন্তু সারাদেশ থেকে উলামায়ে-মাশায়েখরা এসেছেন, তাদের অধিকাংশই জুমার নামাজে অংশ নিতে এসেছেন। নামাজের পর চলে যাবেন। আর একটি অংশ মসজিদে থেকে তাদের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।

নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি বলেন, না, তেমন কোনো আশঙ্কা নেই। সকাল ৮টার সময় সাদপন্থিরা মসজিদে প্রবেশ করে আমাদের সামনেই জুবায়েরপন্থীদের কাছ থেকে রান্নার সরঞ্জাম থেকে শুরু করে সবকিছু বুঝে নিয়েছেন সাদপন্থীরা।  জুবায়েরপন্থীরা কোলাকুলি করে বের হয়ে গেছেন, দুই সপ্তাহ পর তারা আবার আসবেন। আর এখন যারা থাকবেন, তারা দুই সপ্তাহ পর বের হয়ে যাবেন। আমরা কোন ধরনের ঝামেলার আশঙ্কা করছি না।

কয়েক বছর ধরে তাবলিগ জামাতের মধ্যে যে বিবাদ চলছে সম্প্রতি- তা নতুন রূপ পেয়েছে। সাদপন্থীদের নিষেধাজ্ঞার দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটামও দিতে দেখা গেছে জুবায়েরপন্থিদের। এর মধ্যেই সাদপন্থীদের ব্যাপক জমায়েত দেখা গেল। এছাড়াও কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে সাদপন্থীদের প্রবেশের সুযোগ দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা অচলের হুঁশিয়ারি গত ১২ নভেম্বর দেন জুবায়েরপন্থীরা। এর আগে ৫ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘ওলামা-মাশায়েখদের ইসলামি মহাসম্মেলন’ থেকে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি জানায় জুবায়েরপন্থীরা।

শেয়ার করুন

কাকরাইল মসজিদের কোলাকুলি, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই

সময় ০৩:১৬:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

কাকরাইল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করছেন তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদপন্থিরা। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে নামাজ শুরু হয়ে সাড়ে ১২টায় শেষ হয়। তবে বিরাজমান বিবাদের জেরে দুই পক্ষই ছাড় দিয়েছে আজ। সাদপন্থিদের সাথে কোলাকুলি করেছেন জুবায়েরপন্থিরা। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সরেজমিনে কাকরাইল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই সাদপন্থিরা মসজিদ এলাকায় আসতে শুরু করে। আস্তে আস্তে তাদের জমায়েত অনেক বড় হয়। প্রধান সড়ক পার হয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ছাড়িয়ে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।

জানা গেছে, তাবলিগ-জামাতের বিবদমান দ্বন্দ্বের পর থেকে বিগত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে জুবায়েরপন্থিরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যদিও বিগত সরকারের এমন বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিল সাদপন্থিরা। এখন পুরো কাকরাইল মসজিদ অবৈধ দখল করে ১৫ নভেম্বর থেকে অবস্থান নিতে চায় জুবায়েরপন্থিরা।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সাদ অনুসারীরা।

তারা আরও জানান, অপরদিকে কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থিরা সারা বছর মাদ্রাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন। কিন্তু হেফাজতপন্থি আলেমদের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জুবায়েরপন্থিরা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাকরাইল মসজিদ স্থায়ীভাবে দখল নেওয়ার ঘোষণা দেওয়াকে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

কাকরাইল মসজিদ
কাকরাইল মসজিদ

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) এডিসি জুয়েল রানা বলেন, তাবলিগ জামাতের দু’পক্ষই সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- কাকরাইল মসজিদে চার সপ্তাহ থাকবেন জুবায়েরপন্থিরা আর দুই সপ্তাহ থাকবেন সাদপন্থিরা। সে অনুযায়ী সাদপন্থীরা আজ জমায়েত হয়েছেন। আজ থেকে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য তারা কাকরাইল মসজিদে থাকবেন। কিন্তু সারাদেশ থেকে উলামায়ে-মাশায়েখরা এসেছেন, তাদের অধিকাংশই জুমার নামাজে অংশ নিতে এসেছেন। নামাজের পর চলে যাবেন। আর একটি অংশ মসজিদে থেকে তাদের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।

নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি বলেন, না, তেমন কোনো আশঙ্কা নেই। সকাল ৮টার সময় সাদপন্থিরা মসজিদে প্রবেশ করে আমাদের সামনেই জুবায়েরপন্থীদের কাছ থেকে রান্নার সরঞ্জাম থেকে শুরু করে সবকিছু বুঝে নিয়েছেন সাদপন্থীরা।  জুবায়েরপন্থীরা কোলাকুলি করে বের হয়ে গেছেন, দুই সপ্তাহ পর তারা আবার আসবেন। আর এখন যারা থাকবেন, তারা দুই সপ্তাহ পর বের হয়ে যাবেন। আমরা কোন ধরনের ঝামেলার আশঙ্কা করছি না।

কয়েক বছর ধরে তাবলিগ জামাতের মধ্যে যে বিবাদ চলছে সম্প্রতি- তা নতুন রূপ পেয়েছে। সাদপন্থীদের নিষেধাজ্ঞার দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটামও দিতে দেখা গেছে জুবায়েরপন্থিদের। এর মধ্যেই সাদপন্থীদের ব্যাপক জমায়েত দেখা গেল। এছাড়াও কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে সাদপন্থীদের প্রবেশের সুযোগ দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা অচলের হুঁশিয়ারি গত ১২ নভেম্বর দেন জুবায়েরপন্থীরা। এর আগে ৫ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘ওলামা-মাশায়েখদের ইসলামি মহাসম্মেলন’ থেকে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি জানায় জুবায়েরপন্থীরা।