এক হালি পূরণের পথে নায়িকা পূজা!
- সময় ১২:৪২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪
- / 259
২০২৪ সালে এই নায়িকার তেমন কোনো ভালো কাজ না থাকলেও এবার হটাৎ করেই এক হালি পূরণের পথে রয়েছেন প্রিয়দর্শিনী পূজা। ২০০৯ সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন, তবে সম্মান জেতা সত্ত্বেও প্রথম দিকেই তাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। পরের বছর তিনি পুনরায় আবেদন করেছিলেন।
বলা হচ্ছিল বলিউড অভিনেত্রী ও মডেল পূজা হেগড়ের কথা। মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়া ২০১০ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছিলেন তিনি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। কাজ করেছেন বলিউড ও দক্ষিণের বাঘা বাঘা সব তারকার সঙ্গে। তবে ২০২৪ সালটি একেবারই ভালো যাচ্ছে না তার। মুক্তি পায়নি একটি সিনেমাও। খবর বলিউড হাঙ্গামার।
২০২৪ সাল পূজার খারাপ গেলেও ২০২৫ যে তিনি নিজের করে নেবেন, সেই বার্তা ইতোমধ্যে দিয়েছেন। তার হাতে বর্তমানে চারটি সিনেমা রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে তিনটি বলিউডের ও একটি তামিল।
বর্তমানে এই নায়িকা ব্যস্ত আছেন এই চারটির মধ্যে দুই সিনেমার শুটিংয়ে, যেগুলোর মধ্যে বলিউডের জনপ্রিয় কমেডি ফ্র্যাঞ্চাইজি হাউসফুলের পঞ্চম সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। তারকাবহুল এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে পূজা ছাড়াও আরও অভিনয় করছেন অক্ষয় কুমার, রীতেশ দেশমুখ, ফেরদৌস খান, সঞ্জয় দত্ত, জ্যাকি শ্রফ, জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ, নার্গিস ফাখরি, চিত্রাঙ্গদা সিং, সোনম বাজওয়া ও সৌন্দর্য শর্মার মতো তারকা। এটি পরিচালনা করছেন তরুণ মনসুখানি। ২০২৫ সালের ৬ জুন সিনেমাটি মুক্তির কথা।
‘হাউসফুল ৫’-এর কাজ শেষ করে পূজা ‘দেবা’ সিনেমার শুটিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। ২০২৫ সালের ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। এটি পরিচালনা করেছেন রোশান অ্যান্ড্রুজ। এই সিনেমা দিয়ে প্রথমবারের মতো শহীদ কাপুরের সঙ্গে জুটি হবেন পূজা।
এই দুটির কাজ শেষ হলে পূজা বরুণ ধাওয়ানের সঙ্গে ‘হ্যায় জওয়ানি তো ইশক হোনা হ্যায়’ সিনেমার কাজ শুরু করবেন। এটি পরিচালনার দায়িত্বে আছেন ডেভিড ধাওয়ান। এরপর বিগ বাজেটের তামিল সিনেমা ‘থালাপতি ৬৯’ নিয়ে ব্যস্ত হবেন। এটি পরিচালনা করছেন এইচ বিনোথ। ২০২৫ সালের অক্টোবরে মুক্তির কথা রয়েছে। সিনেমায় পূজা ছাড়াও অভিনয় করবেন বিজয় ও ববি দেওল।
উল্লেখ্য, পূজা হেগড়ে মিস ইন্ডিয়া ২০০৯ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন, তবে মিস ইন্ডিয়া ট্যালেন্টেড ২০০৯ সম্মান জেতা সত্ত্বেও প্রথম দিকেই তাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। পরের বছর তিনি পুনরায় আবেদন করেছিলেন এবং মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়া ২০১০ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার-আপ হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি পার্শ্ব প্রতিযোগিতা মিস ইন্ডিয়া সাউথ গ্ল্যামারাস হেয়ার ২০১০-এর মুকুট জিতেছিলেন। তিনি মাইসকিনের তামিল সুপারহিরো চলচ্চিত্র মুগামুদী (২০১২)-তে জীবের বিপরীতে নারী মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করে চলচ্চিত্রে অভিষেক করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি সে বছরের আগস্টে বক্স অফিসে দুর্দান্ত এক উদ্বোধন করেছিল।
তবে চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র ও নেতিবাচক সমালোচনা লাভ করেছিল এবং দূর্ভাগ্যবশত এটি বাণিজ্যিক ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছিল। হেগড়ের অভিনয়ও মিশ্র পর্যালোচনা লাভ করেছিল; সিফি ডট কম-এর একজন সমালোচক উল্লেখ করেছিলেন, তিনি ‘আশা পূর্ণ করতে পারেননি, যদিও দ্য হিন্দু-এর একজন সমালোচক উল্লেখ করেছিলেন, ‘প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য তার তেমন সুযোগ নেই।’ তিনি ২য় দক্ষিণ ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ তামিল নবাগতা অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন অর্জন করেছিলেন, কিন্তু লক্ষ্মী মেননের কাছে পরাজিত হন।
তার অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটি ছিল তেলুগু ভাষার ওকা লাইলা কোসাম (২০১৪), যেখানে তিনি নাগা চৈতন্যের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য তিনি প্রশংসিত হয়েছিলেন। একই সময়ে তিনি ৬২তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (দক্ষিণ)-এ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হয়েছিলেন। একটি প্রযোজনা সংস্থা এবং পরিচালক বিজয় কোন্ডার পূর্ববর্তী উদ্যোগের সাফল্য তাকে এই প্রকল্পে কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল। তিনি মুখ্য নারী চরিত্রে অভিনয়ে সহায়তার জন্য তেলুগু ভাষা রপ্ত করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি মুকুন্দা চলচ্চিত্রে অভিনেতা চিরঞ্জীবীর ভাগ্নে বরুণ তেজ’র সাথে অভিনয় করেছিলেন। একটি গ্রামের পটভূমিতে নির্মিত প্রণয়-মারপিটধর্মী কাহিনীর চলচ্চিত্রটি ২০১৪ সালের শেষদিকে মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটিতে হেগড়ে গোপিকাম্মা গানে তার অবিস্মরণীয় অভিনয়ের মাধ্যমে সকলকে মুগ্ধ করেছিল।
২০১৬ সালে ফিল্মফেয়ার গ্ল্যামার অ্যান্ড স্টাইল পুরস্কার অনুষ্ঠানে হেগড়ে জিতেছিলেন। ২০১৪ সালের জুলাইয়ে হেগড়ে সিন্ধু সভ্যতার পটভূমিতে নির্মিত আশুতোষ গোয়ারিকরের পর্যায়কালীন চলচ্চিত্র মহেঞ্জো দাড়ো-তে হৃতিক রোশনের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক করেছিলেন। গোয়ারিকরের স্ত্রী তাকে একটি বিজ্ঞাপনে লক্ষ্য করেছিলেন এবং অডিশনে ডাকার পরে তাকে চলচ্চিত্রটির জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল, যা তিনি সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছিলেন।
চলচ্চিত্রটির প্রতি তার প্রতিশ্রুতির ফলস্বরূপ, তিনি প্রকাশ করেছিলেন যে তিনি তার হিন্দি চলচ্চিত্রটি মুক্তি না পাওয়া অবধি আঞ্চলিক ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলিতে কাজ করা থেকে বিরতি নেবেন এবং মণি রত্নম পরিচালিত চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ প্রত্যাখান করেছিলেন। ২০১৬ সালে মহেঞ্জো দাড়ো মুক্তি পাওয়ার পর সমালোচকদের দ্বারা নিন্দা পেয়েছিল এবং বক্স অফিসে বড় ফ্লপ হয়ে গিয়েছিল। ২০১৭ সালে তিনি তেলুগু ভাষার কৌতুক-মারপিটধর্মী চলচ্চিত্র দুভভাডা জগন্নাধাম-এ অল্লু অর্জুনের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন।
২০১৮ সালে তিনি তিনটি তেলুগু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। প্রথমটি হল ‘জিগুলে রানী’ গানে রাঙ্গাস্থালাম চলচ্চিত্রে বিশেষ উপস্থিতি। পরবর্তী চলচ্চিত্রগুলি ছিল বল্লমকোন্ডা শ্রীনিবাসের বিপরীতে সাক্ষ্যম এবং জুনি. এনটিআরের বিপরীতে ত্রিবিক্রম শ্রীনিবাসের পরিচালনায় মারপিটধর্মী-নাট্য চলচ্চিত্রে অরবিন্দা সামেথা বীর রাঘব।
২০১২ সালেও তিনি তিনটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন, মহর্ষি, গাড্ডালাকোণ্ডা গণেশ এবং হাউজফুল ৪। মহর্ষি একটি তেলুগু ভাষার মারপিটধর্মী চলচ্চিত্র, যেটি পরিচালনা করেছিলেন বংশী পৈডিপল্লি এবং মুখ্য অভিনেতা ছিলেন মহেশ বাবু। এটি মুক্তির পর মিশ্র সমালোচনা পেয়েছিল।
একই বছরে তার অভিনীত দ্বিতীয় তেলুগু চলচ্চিত্রটি ছিল হরিশ শঙ্কর পরিচালিত মারপিটধর্মী-থ্রিলার চলচ্চিত্র গাড্ডালাকোণ্ডা গণেশ, যেটি ২০১৪ সালের তামিল ভাষার চলচ্চিত্র জিগরটান্ডা-এর পুনর্নির্মাণ ছিল। চলচ্চিত্রটিতে পূজার সাথে বরুণ তেজ এবং অথর্ব অভিনয় করেছিলেন। ফরহাদ সামজি পরিচালিত সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার কৌতুকধর্মী চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিন বছরের ব্যবধানে পূজা বলিউডে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি রাজকুমারী মালা ও পূজা (পুনর্জন্ম) চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৮০ কোটি রুপি উপার্জন করেছিল। পূজা ত্রিবিক্রম পরিচালিত ২০২০ সালের তেলুগু ভাষার মারপিটধর্মী-নাট্য চলচ্চিত্র আলা বৈকুন্ঠপুরামলো-এ অল্লু অর্জুনের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন, যেটি প্রায় ২৫০ কোটি রুপি উপার্জনের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বাধিক উপার্জনকারী তেলুগু চলচ্চিত্রগুলির একটিতে পরিণত হয়েছিল।