ঢাকা ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ৬ ঘণ্টার পরও মেলেনি কিছু

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • সময় ০২:২৭:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 28

ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হুমকি পাওয়া ফ্লাইটটিতে তল্লাশি চালিয়ে বোমা বা বোমা জাতীয় কোনও বস্তুর উপস্থিতি পায়নি বোমা নিষ্ক্রিয় দল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এই হুমকিতে দীর্ঘ প্রায় ৬ ঘণ্টা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে কেটেছে সংশ্লিষ্টদের।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া, নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম থেকে শুরু করে অন্তত দুই শতাধিক কর্মকর্তা-নিরাপত্তা কর্মীরা দুপুর ১২টার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।

এর আগে সকাল থেকেই পুরো বিমানবন্দর এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কন্ট্রোল রুমে একটি বার্তা আসে। ওই বার্তায় বলা হয়— রোম থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি ৩৫৬ এ বোমা রাখা আছে। যেকোনও সময় বোমাটি বিস্ফোরণ ঘটবে। এমন অবস্থায় কন্ট্রোল রুম থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়।

খবর পাওয়ার পরপরই বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ সবাই বিমানবন্দরে ছুটে আসেন। শুরু হয় নিরাপত্তা সদস্যদের মোতায়েন। বিমান বাহিনীর একটি বোমা নিষ্ক্রিয় দল, কুইক রেসপন্স ফোর্স, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেন।

এর আগে প্রায়শই এমন মহড়া হলেও বাস্তবে এমন ঘটনায় সবার মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিজেরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে থাকেন সবাই। অপেক্ষায় থাকেন কখন ফ্লাইটটি অবতরণ করবে। অবশেষে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণের পরপরই গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে শুরু হয় তৎপরতা। প্রথমে ফ্লাইটের ভেতর থেকে দুই শতাধিক যাত্রী, ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে বের করে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় তল্লাশি অভিযান।

বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৫৬ নম্বর ফ্লাইটে বোমা রয়েছে এমন আতঙ্কে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ফ্লাইটে বোমা রয়েছে এমন আতঙ্কে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি

এ বিষয়ে এভসেক পরিচালক উইং কমান্ডার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘শুরু থেকেই পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়। আমরা বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বাড়িয়েছি। আমাদের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ভেতরে তল্লাশি চালিয়েছে।’

জানা যায়, তল্লাশি দলটি বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পুরো উড়োজাহাজটিতে তল্লাশি চালায়। দুটি ব্যাগ সন্দেহজনক মনে হলেও তাতেও কোনও কিছু পাওয়া যায়নি। সবশেষ ১২টার দিকে ফ্লাইটটিকে নিরাপদ ঘোষণা করলে অভিযানে অংশ নেওয়া সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা যে কত সুসংহত, সেটা আমরা আজ বুঝিয়ে দিয়েছি। আমাদের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সংবাদ পাওয়ার পরপরই আমি নিজেসহ সব কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কোনও কিছু না পাওয়া গেলেও আমরা প্রতিটি তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা সবসময়ই জিরো টলারেন্স।’

শেয়ার করুন

ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ৬ ঘণ্টার পরও মেলেনি কিছু

সময় ০২:২৭:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হুমকি পাওয়া ফ্লাইটটিতে তল্লাশি চালিয়ে বোমা বা বোমা জাতীয় কোনও বস্তুর উপস্থিতি পায়নি বোমা নিষ্ক্রিয় দল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এই হুমকিতে দীর্ঘ প্রায় ৬ ঘণ্টা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে কেটেছে সংশ্লিষ্টদের।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া, নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম থেকে শুরু করে অন্তত দুই শতাধিক কর্মকর্তা-নিরাপত্তা কর্মীরা দুপুর ১২টার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।

এর আগে সকাল থেকেই পুরো বিমানবন্দর এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কন্ট্রোল রুমে একটি বার্তা আসে। ওই বার্তায় বলা হয়— রোম থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বিজি ৩৫৬ এ বোমা রাখা আছে। যেকোনও সময় বোমাটি বিস্ফোরণ ঘটবে। এমন অবস্থায় কন্ট্রোল রুম থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়।

খবর পাওয়ার পরপরই বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ সবাই বিমানবন্দরে ছুটে আসেন। শুরু হয় নিরাপত্তা সদস্যদের মোতায়েন। বিমান বাহিনীর একটি বোমা নিষ্ক্রিয় দল, কুইক রেসপন্স ফোর্স, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেন।

এর আগে প্রায়শই এমন মহড়া হলেও বাস্তবে এমন ঘটনায় সবার মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিজেরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে থাকেন সবাই। অপেক্ষায় থাকেন কখন ফ্লাইটটি অবতরণ করবে। অবশেষে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণের পরপরই গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে শুরু হয় তৎপরতা। প্রথমে ফ্লাইটের ভেতর থেকে দুই শতাধিক যাত্রী, ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে বের করে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় তল্লাশি অভিযান।

বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৫৬ নম্বর ফ্লাইটে বোমা রয়েছে এমন আতঙ্কে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ফ্লাইটে বোমা রয়েছে এমন আতঙ্কে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি

এ বিষয়ে এভসেক পরিচালক উইং কমান্ডার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘শুরু থেকেই পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়। আমরা বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বাড়িয়েছি। আমাদের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ভেতরে তল্লাশি চালিয়েছে।’

জানা যায়, তল্লাশি দলটি বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পুরো উড়োজাহাজটিতে তল্লাশি চালায়। দুটি ব্যাগ সন্দেহজনক মনে হলেও তাতেও কোনও কিছু পাওয়া যায়নি। সবশেষ ১২টার দিকে ফ্লাইটটিকে নিরাপদ ঘোষণা করলে অভিযানে অংশ নেওয়া সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা যে কত সুসংহত, সেটা আমরা আজ বুঝিয়ে দিয়েছি। আমাদের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সংবাদ পাওয়ার পরপরই আমি নিজেসহ সব কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কোনও কিছু না পাওয়া গেলেও আমরা প্রতিটি তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা সবসময়ই জিরো টলারেন্স।’