০৫:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উদ্ধার হওয়া গাঁজা ১৫ লাখে বিক্রি, অভিযোগে দুই ওসি বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, নরসিংদী
  • সময় ১০:২১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • / 59

দুই ওসি বদলি

পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হওয়া মাদক প্রায় ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে ওসি মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে তাকে ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার পুলিশের ঢাকা রেঞ্জর ডিআই জি এ কে এম আওলাদ হোসেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।

এর আগে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। জব্দ করা গাঁজা তিনি নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে যান এবং ওসি কামরুজ্জামানকে অবহিত করেন। জব্দ তালিকায় ৯৬ কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা দেখানো হয়।

আইন অনুযায়ী জব্দ মালামাল আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই সময় আদালতের বিচারক ওই ৯৬ কেজি গাঁজা ধ্বংস করে বা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু মো. কামরুজ্জামান নরসিংদী কোর্ট পুলিশের অফিসার্স ইনর্চাজ (ওসি) খন্দকার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে ওই ৯৬ কেজি গাঁজা মাধবদী আলগী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রতি কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও ওসি কামরুজ্জামান চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর কাছে ওই গাঁজা ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন এবং তারা টাকা ভাগ করে নেন বলেও অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। তবে আদালতের নথিতে দেখা যায় জব্দ ৯৬ কেজি মাদক ধ্বংস করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে মো: কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের অফিসার অলামত জব্দ করেছেন এবং তা জব্দ তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছেন। কোর্ট তা রিসিভ করেছে এবং ধ্বংস করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোট ধ্বংস করেছে না করে নাই সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কী দায় আছে? এখানে আমার তো কোনো জবাব নেই। তাছাড়া আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিষ্ট্রেটের।

গাঁজা বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কি ষড়যন্ত্রের শিকার তা যাচাই করে দেখেন।

তিনি আরও বলেন, আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করলো?

নরসিংদী কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে। মালামাল আমার হাতে আসেনি, আমার মাধ্যমে যাইনি। শুধু দায়িত্বে ছিলাম বলে আমি বলির পাঠা হলাম। আমি কোনো অপরাধ করিনি।

এ বিষয়ে নরসিংদী পুলিশ সুপার মো: আব্দুল হান্নান বলেন, ওসি ডিবির বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য মিথ্যে যাচাই হোক। তদন্ত শেষে এর বিস্তারিত বলা যাবে।

শেয়ার করুন

উদ্ধার হওয়া গাঁজা ১৫ লাখে বিক্রি, অভিযোগে দুই ওসি বদলি

সময় ১০:২১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হওয়া মাদক প্রায় ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে ওসি মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে তাকে ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার পুলিশের ঢাকা রেঞ্জর ডিআই জি এ কে এম আওলাদ হোসেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।

এর আগে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। জব্দ করা গাঁজা তিনি নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে যান এবং ওসি কামরুজ্জামানকে অবহিত করেন। জব্দ তালিকায় ৯৬ কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা দেখানো হয়।

আইন অনুযায়ী জব্দ মালামাল আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই সময় আদালতের বিচারক ওই ৯৬ কেজি গাঁজা ধ্বংস করে বা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু মো. কামরুজ্জামান নরসিংদী কোর্ট পুলিশের অফিসার্স ইনর্চাজ (ওসি) খন্দকার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে ওই ৯৬ কেজি গাঁজা মাধবদী আলগী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রতি কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও ওসি কামরুজ্জামান চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর কাছে ওই গাঁজা ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন এবং তারা টাকা ভাগ করে নেন বলেও অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। তবে আদালতের নথিতে দেখা যায় জব্দ ৯৬ কেজি মাদক ধ্বংস করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে মো: কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের অফিসার অলামত জব্দ করেছেন এবং তা জব্দ তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছেন। কোর্ট তা রিসিভ করেছে এবং ধ্বংস করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোট ধ্বংস করেছে না করে নাই সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কী দায় আছে? এখানে আমার তো কোনো জবাব নেই। তাছাড়া আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিষ্ট্রেটের।

গাঁজা বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কি ষড়যন্ত্রের শিকার তা যাচাই করে দেখেন।

তিনি আরও বলেন, আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করলো?

নরসিংদী কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে। মালামাল আমার হাতে আসেনি, আমার মাধ্যমে যাইনি। শুধু দায়িত্বে ছিলাম বলে আমি বলির পাঠা হলাম। আমি কোনো অপরাধ করিনি।

এ বিষয়ে নরসিংদী পুলিশ সুপার মো: আব্দুল হান্নান বলেন, ওসি ডিবির বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য মিথ্যে যাচাই হোক। তদন্ত শেষে এর বিস্তারিত বলা যাবে।