ঢাকা ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইংল্যান্ডের পথেই হাঁটলো দক্ষিণ আফ্রিকা

ক্রীড়া ডেস্ক
  • সময় ০৭:৪৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 24

ইংল্যান্ডের পর দক্ষিণ আফ্রিকা আফগানিস্তান বয়কটের ডাক

শুরুটা হয়েছিল ইংল্যান্ড থেকে। দেশটির ১৬০ জনের বেশি রাজনীতিবিদ দাবি তোলেন, আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বয়কট করে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। তালেবান শাসনের অধীনে আফগান নারীদের অধিকার হরণের প্রতিবাদে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দেশকে খেলতে দেখতে চায় না তারা।

ইংল্যান্ডের দেখানো পথেই হাঁটলো দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলার দাবি এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রী গেটন ম্যাকেঞ্জি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এশিয়ার দেশটিতে নির্যাতিত নারীদের পাশে দাঁড়াতে এ বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিবৃতিতে ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, ‘ক্রীড়ামন্ত্রী হিসাবে আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারব না যে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে কি না। কিন্তু আমি যদি সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম, তা হলে এ ম্যাচটা হতো না।’

২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর থেকেই দেশটিতে নারীদের অধিকার হরণের অভিযোগ উঠতে থাকে। দেশটিতে মেয়েদের সব ধরনের খেলা বন্ধ হয়ে গেছে। যারা ক্রিকেট বা অন্যান্য খেলায় অংশ নিতেন, সেসব মেয়েরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। অভিযোগ আছে, মেয়েরা কলেজেও যেতে পারে না।

নারীদের প্রতি এ বৈষম্যের প্রতিবাদে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বয়কটের ডাক আসতে থাকে। অস্ট্রেলিয়া তো দ্বিপাক্ষিক সিরিজই খেলা বন্ধ করেছে। ইংল্যান্ডের রাজনীতিবিদরা সম্প্রতি আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির ক্রিকেটারদের। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়ামন্ত্রী বয়কটের আহ্বান জানালেও আইসিসির কর্মকাণ্ডে কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

আইসিসির নিয়মানুযায়ী, খেলাধুলার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আফগানিস্তানে যে বৈষম্য হচ্ছে, এরপরও আইসিসি থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার হতাশা ঝড়েছে ম্যাকেঞ্জির কণ্ঠে, ‘অন্যান্য ক্রীড়া সংস্থার মতো আইসিসি দাবি করে, তারা খেলাধুলায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না। কিন্তু আফগানিস্তানে এটা স্পষ্টত লঙ্ঘিত হচ্ছে। এটা শঙ্কার।’

এর আগে বর্ণ বৈষম্যের অভিযোগে ক্রিকেট থেকে ২২ বছর নিষিদ্ধ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৭০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারেনি প্রোটিয়ারা। বর্ণ বৈষম্যটা তাই খুব কাছে থেকে দেখা আছে দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রীর। সেটি মনে করিয়ে দিয়ে ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, ‘বর্ণবাদের জেরে খেলাধুলাতে সমান সুযোগ না পাওয়া জাতি উঠে আসা মানুষ আমি। আজ যখন বিশ্বের অন্য কোথাও নারীদের সঙ্গে একই ধরনের আচরণ করা হচ্ছে, তখন সেটা নিয়ে কথা না বলে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকাটা রীতিমতো ভণ্ডামি ও অনৈতিক।’

শেয়ার করুন

ইংল্যান্ডের পথেই হাঁটলো দক্ষিণ আফ্রিকা

সময় ০৭:৪৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

শুরুটা হয়েছিল ইংল্যান্ড থেকে। দেশটির ১৬০ জনের বেশি রাজনীতিবিদ দাবি তোলেন, আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বয়কট করে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। তালেবান শাসনের অধীনে আফগান নারীদের অধিকার হরণের প্রতিবাদে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দেশকে খেলতে দেখতে চায় না তারা।

ইংল্যান্ডের দেখানো পথেই হাঁটলো দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলার দাবি এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রী গেটন ম্যাকেঞ্জি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এশিয়ার দেশটিতে নির্যাতিত নারীদের পাশে দাঁড়াতে এ বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিবৃতিতে ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, ‘ক্রীড়ামন্ত্রী হিসাবে আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারব না যে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে কি না। কিন্তু আমি যদি সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম, তা হলে এ ম্যাচটা হতো না।’

২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর থেকেই দেশটিতে নারীদের অধিকার হরণের অভিযোগ উঠতে থাকে। দেশটিতে মেয়েদের সব ধরনের খেলা বন্ধ হয়ে গেছে। যারা ক্রিকেট বা অন্যান্য খেলায় অংশ নিতেন, সেসব মেয়েরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। অভিযোগ আছে, মেয়েরা কলেজেও যেতে পারে না।

নারীদের প্রতি এ বৈষম্যের প্রতিবাদে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বয়কটের ডাক আসতে থাকে। অস্ট্রেলিয়া তো দ্বিপাক্ষিক সিরিজই খেলা বন্ধ করেছে। ইংল্যান্ডের রাজনীতিবিদরা সম্প্রতি আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির ক্রিকেটারদের। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়ামন্ত্রী বয়কটের আহ্বান জানালেও আইসিসির কর্মকাণ্ডে কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

আইসিসির নিয়মানুযায়ী, খেলাধুলার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আফগানিস্তানে যে বৈষম্য হচ্ছে, এরপরও আইসিসি থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার হতাশা ঝড়েছে ম্যাকেঞ্জির কণ্ঠে, ‘অন্যান্য ক্রীড়া সংস্থার মতো আইসিসি দাবি করে, তারা খেলাধুলায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না। কিন্তু আফগানিস্তানে এটা স্পষ্টত লঙ্ঘিত হচ্ছে। এটা শঙ্কার।’

এর আগে বর্ণ বৈষম্যের অভিযোগে ক্রিকেট থেকে ২২ বছর নিষিদ্ধ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৭০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারেনি প্রোটিয়ারা। বর্ণ বৈষম্যটা তাই খুব কাছে থেকে দেখা আছে দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রীর। সেটি মনে করিয়ে দিয়ে ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, ‘বর্ণবাদের জেরে খেলাধুলাতে সমান সুযোগ না পাওয়া জাতি উঠে আসা মানুষ আমি। আজ যখন বিশ্বের অন্য কোথাও নারীদের সঙ্গে একই ধরনের আচরণ করা হচ্ছে, তখন সেটা নিয়ে কথা না বলে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকাটা রীতিমতো ভণ্ডামি ও অনৈতিক।’