আনাস্থা প্রস্তাবে হেরে পদত্যাগ ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীর
- সময় ১১:৫৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 25
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সাংসদদের ৷ আইনসভার অতি-ডানপন্থী এবং বামপন্থী সদস্যরা বুধবার একযোগে ঐতিহাসিক অনাস্থা ভোটে অংশ নেন ৷ এর জেরে প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ার এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন, যা ১৯৬২ সালের পর প্রথম ফ্রান্সে দেখা গেল।
জাতীয় পরিষদ ৩৩১ ভোটে প্রস্তাবটি অনুমোদন করে। সর্বনিম্ন ২৮৮ ভোটের প্রয়োজন ছিল ৷ প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জোর দিয়ে জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর বাকি মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত পালন করবেন। তবে, জুলাইয়ের আইনসভা নির্বাচনের পর সংসদ বিভক্ত হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে দ্বিতীয়বারের জন্য ফের নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে। ম্যাক্রোঁ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন ৷ প্রেসিডেন্টের দফতর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে ৷ পাশাপাশি মিশেল বার্নিয়ার ততক্ষণে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করবেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বরে নিযুক্ত বার্নিয়ার ফ্রান্সের আধুনিক প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে কম সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে থেকেছেন। ভোটের আগে বার্নিয়ার তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, “আমি বলতে পারি যে, ফ্রান্স এবং ফরাসিদের মর্যাদার সঙ্গে কাজ করা আমার জন্য সম্মানের বিষয় হয়ে থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “আমি নিশ্চিত, এই অনাস্থা প্রস্তাব সবকিছুকে আরও গুরুতর এবং কঠিন করে তুলবে।”
আদতে, বার্নিয়ারের প্রস্তাবিত বাজেটের তীব্র বিরোধিতার কারণেই বুধবার অনাস্থা ভোট হয়েছে। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি, ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ, কার্যত দুই ভাগে ভেঙে পড়েছে ৷ যেখানে কোনও একক দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এটি মূলত তিনটি প্রধান জোট নিয়ে গঠিত- ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী মিত্র, বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট এবং ডানপন্থী জাতীয় সমাবেশ। দেখা গেল, দুই বিরোধী জোটই সাধারণ মতভেদকে সরিয়ে বার্নিয়ারের বিরুদ্ধে একত্রিত হচ্ছে ৷ তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আরোপ করা এবং নাগরিকদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগও এনেছে তারা। জাতীয় সমাবেশের নেতা মেরিন লে পেন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল একটি বিষাক্ত বাজেট থেকে ফরাসিদের রক্ষা করা।” একই সঙ্গে, লে পেন ম্যাক্রোঁকে বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অনেকাংশে দায়ী বলেও অভিযুক্ত করেছেন ৷
ম্যাক্রোঁকে এবার নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে ৷ তবে খণ্ডিত সংসদ অপরিবর্তিতই থাকছে ৷ নীতি নির্ধারকদের জন্য সম্ভাব্য অচলাবস্থা তৈরি করে অন্তত জুলাই পর্যন্ত কোনও নতুন আইনসভা নির্বাচন করা যাবে না।