আকাবার মুখে মহাকাশ অভিযাত্রার গল্প শুনলেন ঢাকার শিক্ষার্থীরা
- সময় ০৬:৪১:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 19
বাংলাদেশের শিশুদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দিতে ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ বিষয়ক সংস্থার (নাসা) প্রধান মহাকাশচারী জোসেফ এম আকাবা। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি মহাকাশ অভিযাত্রার গল্প শেয়ার করেছেন। কথা ও গল্পে শিক্ষার্থীদের সামনে মহাশূন্যের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন নাসার এই নভোচারী।
গতকাল রোববার ‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি অসীম শূন্যতায় তার কাটানো সময়ের গল্প ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন।
জোশেফ এম আকাবা একজন অভিজ্ঞ মহাকাশচারী, মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা এবং একজন শিক্ষক। অসংখ্যবার তিনি মহাকাশ মিশনে অংশ নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট ৩০৬ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন। এছাড়া তিনি দুবার মহাকাশে হাঁটার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, মহাকাশে থাকাকালীন বিভিন্ন বিষয়, মহাকাশ অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক বিস্ময়সহ এসটিইএম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিক্স) শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।
নাসার প্রধান মহাকাশচারী জোশেফ এম আকাবা তার বক্তব্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, অনেকেই আমাকে বলেছেন আমি তাদের অনুপ্রেরণা। আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি নিজেই অনুপ্রাণিত বোধ করছি। আপনাদের জ্ঞান অর্জনের তৃষ্ণা আমাকে অভিভূত করেছে।
মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহীদের তিনি নাসার ওয়েবসাইট ভিজিটের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাদের উচিত নাসার ওয়েবসাইটটা ফলো করা। কারণ, সেখানে অসংখ্য সুযোগ এবং পরামর্শ রয়েছে।
জোশেফ আকাবা শিক্ষার্থীদের ভুলকে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ভুলকে ভয় পেলে চলবে না। ভুল মানুষকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়।
তিনি শিক্ষার্থীদের তার নিজের জীবনের গল্প ও চ্যালেঞ্জের গল্প বলেন এবং কীভাবে সেই অভিজ্ঞতাগুলো তাকে মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্নপূরণে সাহায্য করেছে সেগুলো তুলে ধরেন।
পৃথিবীকে আরো বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নাসার প্রধান নভোচারী বলেন, আমাদের এই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। মহাশূন্যে একটিমাত্র ভুল পদক্ষেপ মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আমাদের পৃথিবীতে তেমনটা হয় না। আমার মনে হয় না এখন পর্যন্ত আর কোনো গ্রহ মানুষের বসবাস উপযোগী। তাই এই পৃথিবীটাকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের আরো বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত।
নাসার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আকাবা বলেন, নাসার লক্ষ্য হলো অজানা সীমানার বাইরে অনুসন্ধান চালানো। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা অনেক দূর যেতে পারবো। এ জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহাকাশ নিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কৌতূহল দেখে আকাবা বলেন, আমার বিশ্বাস অচিরেই এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই কেউ নাসার আর্টেমিস স্কোয়াডে অংশ নেবেন।
পুরো অনুষ্ঠানে তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অফিস অব কমিউনিকেশনসের ডিরেক্টর খায়রুল বাশার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ডেটা অ্যান্ড সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক মাহবুবুল আলম মজুমদার। সমাপনী বক্তব্য দেন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্টের ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিএসআরএম স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন অধ্যাপক আরশাদ এম চৌধুরী, ডিপার্টমেন্ট অব কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চেয়ারপারসন অধ্যাপক সাদিয়া হামিদ কাজীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।