ছাত্রলীগের বিদ্রোহী অংশ কারা?

- সময় ১১:৩৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
- / 26
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের বিদ্রোহী বা বিপ্লবী অংশটি বিদ্রোহ করেছে, তারা যদি না বের হতো, তাহলে আন্দোলনটা অনেক কঠিন হতো।’ তবে এই বিদ্রোহী অংশ কারা, সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলেননি তিনি।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ‘জুলাই: মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন ঘটনা স্মরণ করে এ কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, ‘আমাদের বেশিরভাগ আন্দোলন নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে ব্যর্থ হয়। কিন্তু এবার সেই জায়গায় আমরা সচেতন ছিলাম। শুরু থেকেই বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের মধ্যে একটি বোঝাপড়া ছিল, যার ফলে তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে লোকবল পাঠিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও অলিখিত সমঝোতা ছিল। বিএনপি প্রথম থেকেই এই আন্দোলনকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হিসেবে দেখেছে এবং নৈতিক সমর্থন দিয়েছে, কিন্তু এটাকে নিজেদের আন্দোলন বলে দাবি করেনি।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনকে ‘মনসুন রেভুলেশন’ বলা হলেও প্রকৃতি সহায় ছিল। বৃষ্টির মৌসুম হলেও এমন বৃষ্টি হয়নি যে মানুষ রাস্তায় নামতে পারবে না। এটা অলৌকিক মনে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনের কর্মসূচি ধাপে ধাপে এগিয়েছে। তিন তারিখে শহীদ মিনারে এক দফার বাইরে অন্য কিছু বলার সুযোগ ছিল না, কারণ জনগণের চাওয়া তখন একটাই ছিল— সরকার পতন। পাঁচ তারিখের গণভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে ছিল না, ছিল ‘লং মার্চ টু ঢাকা’। তবে ঢাকায় এসে জনগণ সিদ্ধান্ত নেয় কী করতে হবে, আমরা কেবল তাদের সঙ্গে থেকেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কোনো নির্দিষ্ট নেতৃত্ব নির্ধারণ করবো না। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নজনকে সামনে রাখা হবে। তবে বাস্তবতার কারণে একসময় আমাকে মিডিয়ার মুখোমুখি হতে হয়েছে এবং কর্মসূচি ঘোষণা করতে হয়েছে। কিন্তু অনেক তথ্য থেকে নিজেকে সচেতনভাবেই দূরে রেখেছিলাম, যাতে ধরপাকড়ের ক্ষেত্রে আন্দোলন নিরাপদ থাকে।’
আন্দোলনের কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যখন আমাকে গ্রেফতার করা হয়, তখন তদন্তকারীরা হতাশ হয়ে যায়, কারণ আমার কাছে আন্দোলন সংক্রান্ত অনেক তথ্যই ছিল না। আন্দোলনের সময় বিএনপি বা ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গেও আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি। মূল যোগাযোগ করেছিল আসিফ, পরে তাকেও তুলে নেওয়া হয়। তবে মূল লক্ষ্য ছিল আমাকে আটক করা, কারণ আমি দৃশ্যমান ছিলাম।’
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আসিফ খুব জোরালোভাবে বলেছিল, ছাত্রদের সরকারের প্রতিনিধি হতে হবে, যাতে দাবিগুলো বাস্তবায়নের সম্ভাবনা থাকে। আমি তখন কিছুটা দ্বিধায় ছিলাম, কারণ আমাদের জন্য মাঠটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরে তিন বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার সময়ও আসিফ সাহসী ভূমিকা রাখে।’