দিল্লির মন্তব্য অযাচিত ও বিভ্রান্তিকর
হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে চিঠির জবাব দেয়নি দিল্লি

- সময় ০৫:১৭:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
- / 53
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে চলে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পাঠানো কূটনৈতিক পত্রের জবাব এখনো দেয়নি ভারত। এছাড়া ঢাকার অভ্যন্তরীণ বিষয়াদি নিয়ে অযাচিত মন্তব্যের পুনরাবৃত্তিরোধে ভারত সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রফিকুল আলম। তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অযাচিত ও বিভ্রান্তিকর।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন রফিকুল আলম।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, ‘গেল ৭ মার্চ বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যে মন্তব্য করেছেন, সেটা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা ও সংখ্যালঘু সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে। বাংলাদেশ মনে করে, এগুলো একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
ভারতের এ ধরনের মন্তব্য ‘অযাচিত’ আখ্যায়িত করে মুখপাত্র আরও বলেন, ‘এটা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপের শামিল। এ ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর ও বাস্তবতার ভুল প্রতিফলন।’
‘সব দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও অভ্যন্তরীণ বিষয়াদিতে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ’, যোগ করেন রফিকুল আলম।

মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা আশা করি, ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই ধরনের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত থেকে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য দেশের জন্য বিপজ্জনক। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য কী? জবাবে মুখপাত্র বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেওয়ার পর আমাদের আর বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ থাকে না।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণে ভারত বাংলাদেশের কূটনৈতিক পত্রের জবাব দিয়েছে কি না, না দিয়ে থাকলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এ নিয়েও উত্তর দিয়েছেন। তারপরও আমরা বলছি, আমরা ভারতের কাছ থেকে কোনো উত্তর পাইনি। পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা পাবলিকলি একটি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হয়। চিঠি দেওয়ার পর থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে আসছে, শেখ হাসিনাকে ফেরত পেতে ভারতের চিঠির জন্য অপেক্ষা করবে বাংলাদেশ। ভারতের কাছ চিঠির জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এখন পর্যন্ত তিনি সে দেশেই অবস্থান করছেন।